বাচ্চাদের খেলনা থেকে বিভিন্ন বৈদ্যুতিক পণ্য। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বা নির্মাণ শিল্পের যন্ত্রপাতি থেকে রাসায়নিক ও ইস্পাত। ভারতে এই সব পণ্য বাজারের বেশির ভাগটাই দখল করে রয়েছে চিন। সম্প্রতি দেশে ব্যবহৃত পণ্যের মান নিয়ে কেন্দ্রের জারি করা নতুন নির্দেশে উৎসবের মরসুমে সেই বাজারেই কোপ পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডসের (বিআইএস) আওতায় দেশে বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত ও উৎপন্ন পণ্যে প্রায় ২৩ হাজার মানের মাপকাঠি স্থির করা রয়েছে। কিন্তু তার অনেকগুলিই কখনও পুরোপুরি কার্যকর করা হয় না। তা শোধরাতেই ভারতে ব্যবহৃত বিভিন্ন ভোগ্য ও মূলধনী পণ্যের মান নিয়ে কঠোর নির্দেশ জারির করেছে কেন্দ্র। দফতরগুলিকে পাঠানো নির্দেশ অনুসারে, গবেষণাগারে এবং বিভিন্ন স্থানে সরাসরি হাজির হয়ে পণ্যের মান পরীক্ষা করতে হবে। দেশি-বিদেশি সব সংস্থার ক্ষেত্রেই। এর সঙ্গেই কয়েক দিনের মধ্যে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র এবং নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত ইস্পাত পণ্যের মান নিয়ে আলাদা নির্দেশ জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন ইস্পাত সচিব অরুণা শর্মাও। নিচু মানের চিনা পণ্যে রাশ টানাই যার লক্ষ্য।
কেন্দ্রের নির্দেশ পাওয়ার পরে দেশে ব্যবহার করা সব পণ্যের ক্ষেত্রেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই কাজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প নীতি ও উন্নয়ন দফতরের প্রধান রমেশ অভিষেক। তবে নতুন এই নির্দেশ নিয়ে সরাসরি মুখ খোলেনি বাণিজ্য মন্ত্রক। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, ভারতের খেলনা এবং ইস্পাত পণ্যের (স্টেইনলেস স্টিল) বাজারের প্রায় দুই তৃতীয়াংশই রয়েছে চিনের দখলে। যেখানে পণ্যের মান নিয়ে অভিযোগও কম নয়। মূলত সেই ধরনের চিনা পণ্যকেই মানের মাপকাঠির আওতায় আনতে কেন্দ্রের এই নির্দেশ জানিয়েছে ওই সূত্র।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, খেলনা তৈরির উপাদান এবং তাতে আগুন লাগার আশঙ্কা রয়েছে কি না, এই সবই পরীক্ষা করে দেখতে হবে। আর কেন্দ্রের সেই নির্দেশে আশঙ্কার সিঁদুরে মেঘ দেখছেন খেলনা ব্যবসায়ীরা। তাঁদের মতে, হঠাৎ করে এই নির্দেশ জারি হওয়ায় তাঁরা তৈরি হওয়ার সময় পাননি। ফলে পণ্য আমদানি করতে বিদেশে আগাম জমা দিয়ে রাখা টাকার কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত তাঁরা। পাশাপাশি, যে সব মানুষের রুজি-রুটি নির্ভর করে শুধুমাত্র খেলনার উপরে, তাঁদের কাজ হারানোরও আশঙ্কা তৈরি হবে বলে মত সংশ্লিষ্ট শিল্প মহলের। এই সব কারণেই উৎসবের মরসুমে এই নির্দেশ কার্যকর না-করতে কেন্দ্রকে আর্জি জানিয়েছে তারা।