ভারতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে নেট বাজারের জনপ্রিয়তা। আর, সেই অনলাইন কেনাকাটার দুনিয়াকে আরও শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করাবে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি)।
বণিকসভা সিআইআই ও উপদেষ্টা সংস্থা ডেলয়েটের এক সমীক্ষায় এ কথা জানানো হয়েছে। ‘ই-কমার্স ইন ইন্ডিয়া— আ গেম চেঞ্জার ফর দ্য ইকনমি’ শীর্ষক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশে অনলাইন কেনাকাটার বহর ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু এই বাজার আরও বাড়ানোর পথে বেশ
কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সংস্থাগুলিকে। এর মধ্যে রয়েছে:
১. জটিল কর কাঠামো
২. পণ্য পরিবহণ সংক্রান্ত সমস্যা
৩. দাম মেটানোর পদ্ধতি নিয়ে বিভ্রান্তি
৪. প্রত্যন্ত এলাকায় নেটের প্রসার কম থাকা
৫. এই নতুন মাধ্যমের সঙ্গে সড়গঢ় দক্ষ মানবসম্পদের অভাব।
তবে প্রস্তাবিত পণ্য-পরিষেবা কর ব্যবস্থা চালু হলে এক ধাক্কায় অনেক অসুবিধাই কেটে যাবে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। তার কারণ, দেশ জুড়ে পরোক্ষ করের একটিই হার বহাল হলে এবং সব রাজ্যই জিএসটি-র কাঠামোয় এলে ব্যবসার ক্ষেত্রে অনেকটাই সুবিধা হবে ই-কমার্স সংস্থাগুলির। তার কারণ, সে ক্ষেত্রে একই পণ্যের উপর বার বার কর চাপানো বা দ্বৈত কর এড়াতে পারবে তারা। পাশাপাশি, এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্য পরিবহণে কিছু আইনি বিধিনিষেধ এখনও রয়েছে। অথচ অবাধে পণ্য আনা-নেওয়াই অনলাইন ব্যবসার মূল শর্ত। জিএসটি-ই এ ক্ষেত্রে সারা দেশকে একসূত্রে বাঁধতে পারে বলে মনে করছেন সমীক্ষকরা। অভিন্ন কর কাঠামোর হাত ধরে পণ্য চলাচলে সব বাধা উঠলে সংস্থাগুলি অনেকটাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারবে।
তবে এর জন্য প্রস্তাবিত পণ্য-পরিষেবা কর আইনে ই-কমার্স সংক্রান্ত লেনদেনের বিষয়ে স্পষ্ট পথনির্দেশ থাকা জরুরি বলে মনে করছে সিআইআই-ডেলয়েট সমীক্ষা। জিএসটি চালুর আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে এগোনোর পরামর্শও দিয়েছে সমীক্ষা। তা হলে কেন্দ্রের কর আদায় বাড়বে। ব্যবসার পথে ঝক্কি কমবে ই-কমার্স সংস্থাগুলিরও। তারা যাতে লোকসানের বোঝা কমাতে পারে সে দিকেও নজর দেওয়া চাই। মাথায় রাখতে হবে যে, ই-কমার্স সংস্থাগুলির লাভ নির্ভর করে কম দামে কত বেশি পরিমাণে পণ্য বেচা যায় তার উপর। গোটা বিষয়টি তদারকির জন্য একটি কেন্দ্রীয় কমিটি গড়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে রাজ্য ও পুরসভা-পঞ্চায়েত স্তরে এ ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে, যাতে জিএসটি-র ই-কমার্স সংক্রান্ত বিধি ঠিক মতো রূপায়িত হয়। ই-কমার্স সংস্থাগুলি যাতে তাদের গুদাম বা পরিষেবা কেন্দ্রগুলিকেও নয়া কর ব্যবস্থায় নথিভুক্ত করতে পারে, তার উপর জোর দিয়েছে সমীক্ষা।
প্রসঙ্গত, অনলাইনে কেনাকাটাই নেট বাজারে লেনদেনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় মাধ্যম হয়ে উঠতে চলেছে। ২০২০ সালের মধ্যে তা ১০ হাজার কোটি ডলার (৬.৭০ লক্ষ কোটি টাকা) ছোঁবে বলেও পূর্বাভাস দিয়েছে সমীক্ষা।