প্রতীকী ছবি।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশব্যাপী লকডাউন চলছে। তার জেরে কার্যত বন্ধ রাজ্যের সমস্ত আর্থিক কর্মকাণ্ড। বন্ধ সরকারি দফতর। অর্থ দফতরের হিসেব, ২১ দিনের এই লকডাউনে রাজ্যের অন্তত ৭৫,০০০ কোটি টাকার লোকসান হতে চলেছে।
নবান্নের কর্তাদের দাবি, দেশের তুলনার রাজ্যের বৃদ্ধির হার দ্বিগুণ। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের আগাম অনুমান অনুযায়ী দেশের বৃদ্ধির হার হতে পারে ৫%। আর রাজ্যের ১০.৪২%। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রকও ২০১১-১২ ভিত্তিবর্ষের সাপেক্ষে রাজ্যের বৃদ্ধির হার নিয়ে সহমত প্রকাশ করেছে। সেই হিসেবে চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের পরিমাণ হবে ১২ লক্ষ ৯৬ হাজার ৫০২ কোটি টাকা। রাজ্যের আর্থিক কর্মকাণ্ডের প্রতি দিনের গড় মূল্যায়ন করলে তা দাঁড়ায় ৩৫৫২ কোটি টাকা। অর্থ-কর্তাদের একাংশের দাবি, ২১ দিন আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকলে রাজ্যের অর্থনীতিকে ৭৪ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা ক্ষতি স্বীকার করতে হবে।
রাজ্যের অর্থ-কর্তাদের দাবি, অন্য রাজ্যের তুলনায় এখানকার মূলধনী ব্যয় অনেকটা বেশি। শিল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ বেশি না-হলেও কৃষি, সামাজিক ক্ষেত্র এবং পরিকাঠামোয় রাজ্যের খরচের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধিতে তা অন্যতম সহায়ক। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এ রাজ্যের মূলধনী ব্যয় হওয়ার কথা ৫২,০০০ কোটি টাকা। সামাজিক ক্ষেত্রে ৮০,০০০ কোটি। রাজ্যের প্রায় ১৩ লক্ষ কোটি টাকার অর্থনৈতিক কারবারে সরকারি খরচের ভাগই সবচেয়ে বেশি।
অর্থ-কর্তারা জানাচ্ছেন, লকডাউনের ফলে সরকারি প্রকল্প, পরিষেবা বা পরিকাঠামোর সমস্ত কাজ বন্ধ। ফলে ধাক্কাও লাগছে তুলনামূলক বেশি। নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের একাংশ বলছেন, আর্থিক লোকসানের তুলনায় মানুষের সুরক্ষিত জীবনের প্রাধান্য সরকারের কাছে অনেক বেশি। পরবর্তী কালে আর্থিক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার জন্যই এখন রাজ্যকে করোনা সংক্রমণ থেকে বাঁচানো প্রয়োজন।