প্রতীকী ছবি।
ব্যাঙ্কিং পরিষেবাকে অত্যাবশ্যক ঘোষণা করে লকডাউনের মধ্যেও সীমিত সময়ের জন্য ব্যাঙ্কগুলি খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অথচ করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার ক্ষেত্রে সেখানকার কর্মীদের অগ্রাধিকারের তালিকায় রাখা হয়নি বলে অভিযোগ তুলল ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলি। ক্ষোভ জানিয়ে রাজ্য সরকার এবং ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছে তারা।
ব্যাঙ্ক শিল্পের বিভিন্ন কর্মী এবং অফিসার ইউনিয়নের শীর্ষ নেতাদের দাবি, অত্যাবশ্যক পরিষেবা হওয়ায় ঝুঁকি মাথায় নিয়ে বাইরে বেরোতেই হবে ব্যাঙ্ক কর্মীদের। পরিষেবা দেওয়ার সময় সরাসরি গ্রাহকের সংস্পর্শেও আসতে হবে। ফলে জীবন রক্ষার খাতিরে তাঁদের প্রতিষেধকের সুরক্ষা দেওয়া জরুরি। বিশেষত ইতিমধ্যেই যেখানে বহু কর্মী সংক্রমিত। অনেকে মারাও গিয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, এমন অবস্থায় সম্প্রতি যে ভাবে টিকাকরণ সংক্রান্ত নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য, তাতে আইনজীবী, সাংবাদিক, হকার, যৌনকর্মী, অত্যাবশ্যক পণ্যের ডিলার এবং কর্মী, বাজারের আনাজ, মাছ ইত্যাদি পণ্য বিক্রেতা, কোভিড স্বেচ্ছাসেবী-সহ ১০টি সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য। কিন্তু তার মধ্যে ব্যাঙ্ক কর্মীদের নাম নেই। ইউনিয়ন নেতাদের তোপ, ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিতদের তথ্য এবং প্রতিষেধক দেওয়ার জায়গার উপরে নির্দিষ্ট ভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্মীদের সেখানে না-রেখে কার্যত ব্রাত্য করা হয়েছে।
ন’টি ইউনিয়নের যৌথ মঞ্চ ইউনাইটেড ফোরাম অব ব্যাঙ্ক ইউনিয়ন্সের (ইউএফবিইউ) আহ্বায়ক গৌতম নিয়োগী এবং অফিসারদের সংগঠন আইবকের রাজ্য সম্পাদক সঞ্জয় দাসের ক্ষোভ, ‘‘অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ব্যাঙ্ক কর্মীদের প্রতিষেধক দেওয়ার আর্জি জানিয়ে রাজ্যকে একাধিক চিঠি দিয়েছি। কিন্তু কিছু হয়নি।’’ এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর এবং বেফির সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস বসু চৌধুরী বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক পরিষেবাকে অত্যাবশ্যক বলেও সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ কর্মী হিসেবে টিকাকরণের তালিকায় না-রাখার যুক্তি খুঁজে পাচ্ছি না।’’
এ দিকে, বহু ব্যাঙ্ক কর্মীর আশঙ্কা, গত বছরের লকডাউনের মতো এ বারও লোকাল ট্রেন, মেট্রো, বাস, ট্যাক্সি-সহ সমস্ত সরকারি-বেসরকারি পরিবহণ বন্ধ থাকায় অফিস যেতে নাকাল হবেন তাঁরা। অনেকেই বলছেন, সে বার রেলকর্মীদের জন্য চালু বিশেষ ট্রেনে ব্যাঙ্কে কর্মরতদেরও উঠতে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছিল। সাড়া মেলেনি। এ বার ফের একই সমস্যা হতে পারে। ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের কাছে কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করার আর্জি জানিয়েছে ইউনিয়নগুলি। সমস্যার সমাধান চেয়ে রাজ্যের কাছে আবেদন করেছে ইউএফবিইউ। ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সংগঠন ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনকেও চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা।