Coronavirus

সিঁদুরে মেঘ দেখছে বাণিজ্য মহল

নদিয়ায় শিল্প বলতে মূলত তাঁত, হোশিয়ারি, পোশাক ও স্বর্ণশিল্প। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এই চারটে ক্ষেত্রেই পরিস্থিতে ভয়াবহ আকার নিয়েছে।

Advertisement

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২০ ০৫:৪৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনার ঘায়ে টলোমলো জেলার বাণিজ্যতরী। পরিস্থিতি একটাই খারাপ যে, জেলার তাবড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলি মনে করছে আগামী দুই-তিন বছরের আগে ঘুরে দাঁড়ানো যাবে না। কর্মহীন হয়েছেন জেলার প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ মানুষ। এর বেশিরভাগই রয়েছেন তাঁতশিল্পে। নদিয়া জেলা চেম্বার অফ কমার্স আ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের যুগ্ম সম্পাদক গোকুল চন্দ্র সাহার কথায়, “কয়েকটি ক্ষেত্র তো একেবারে গুঁড়িয়ে গিয়েছে। দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সম্ভবনাই দেখতে পাচ্ছি না।”

Advertisement

জেলাশাসক বিভু গোয়েল এ ব্যাপারে বলেন, ‘‘শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালু করার ক্ষেত্রে যাতে সমস্যা না হয় প্রশাসন থেকে তা অবশ্যই দেখা হবে। কাঁচামালের সমস্যা অনেকটাই মিটেছে। একমাত্র কনটেনমেন্ট এলাকা ও রেড জোন ছাড়া অন্যত্র মাল নিয়ে যেতে সমস্যা হওয়ার কথাও নয়। আশা করা যায়, পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হবে।

নদিয়ায় শিল্প বলতে মূলত তাঁত, হোশিয়ারি, পোশাক ও স্বর্ণশিল্প। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এই চারটে ক্ষেত্রেই পরিস্থিতে ভয়াবহ আকার নিয়েছে। স্বর্ণশিল্পে মালিক ও কারিগর মিলিয়ে প্রায় তিরিশ হাজার মানুষ রয়েছেন। এই ধাক্কা তাঁরা সামলে উঠতে পারবেন বলে অনেকেই মনে করছেন না। কারণ, সোনার দোকান খুললেও এই বাজারে খরিদ্দার মিলবে না। মানুষের হাতে এখন টাকা নেই। যেটুকু টাকা রয়েছে তা তাঁরা অন্তত এখন সোনার গহনা কিনে খরচ করবেন না। অখিল ভারত স্বর্ণকার সঙ্ঘের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অক্ষয় ভট্টাচার্য্য বলেন, “গহনা বিক্রির কথা ছেড়েই দিন, কেউ যদি গহনা বন্ধক দিতে আসেন তা-ও রাখতে পারবেন না ব্যবসায়ীরা। তাঁদের হাতে টাকা কোথায়?”

Advertisement

কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর, অঙ্গনা, চাকদহ, বেথুয়াডহরি-সহ অনেক এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ হোশিয়ারি ও পোশাক শিল্পে জড়িত। তাঁরা মূলত মুর্শিদাবাদের বেলেডাঙা, চাকদহ, কৃষ্ণনগরের গোহাট, বেথুয়াডহরির হাটে মাল নিয়ে যান। করোনার দাপটে সেই ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে। সবচেয়ে ধাক্কা লেগেছে তাঁত শিল্পে। শান্তিপুর, ফুলিয়া, নবদ্বীপ, চাকদহ, বেথুয়াডহরি, চাকদহ এলাকায় এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত প্রায় তিন লক্ষ মানুষ। তাঁরা এখন কর্মহীন। লাটে উঠেছে ব্যবসা। ব্যবসা বা উৎপাদন ফের শুরু হলেও কাপড় কিনবে কে, সেই চিন্তায় তাঁদের রাতের ঘুম উড়েছে।

শ্রমিকদের পাশাপাশি কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়েছেন ছোট ব্যবসায়ীরা। তাঁরা নিজেরা কাপড় তৈরি করে হাটে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। তাঁদের পুঁজি বলতে আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। শান্তিপুর তাঁতবস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তারক দাস বলছেন, “সামনে ইদ। যেমন করেই হোক এই বাজারটাকে ধরতে হবে। না হলে মারা পড়ে যেতে হবে। কিন্তু কী করে সেটা সম্ভব হবে বুঝতে পারছি না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement