কারখানা থেকে বিভিন্ন ঠিকাদার সংস্থাকে যন্ত্রপাতি সরিয়ে নিতে বললেন হলদিয়ায় শ্রী রেণুকা সুগারসের চিনিকল কর্তৃপক্ষ। ১ এপ্রিলের মধ্যে সরাতে বলা হয়েছে ঠিকাকর্মীদেরও। ফলে প্রায় ৩০০ ঠিকাশ্রমিক কাজ হারাতে পারেন বলে আশঙ্কা।
দীর্ঘ দিন সঙ্কটে থাকা চিনিকলটির কর্তৃপক্ষ জানান, ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর থেকে এখনও পর্যন্ত মাত্র ৫২ দিন উত্পাদন হয়েছে। তারপরেও স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মীরা বেতন পাচ্ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি প্রতিকূল হওয়ায় ঠিকাদার সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি পুনর্নবীকরণ না-করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক আধিকারিক বলেন, “৩১ মার্চ ঠিকাদারদের সঙ্গে চুক্তির সময়সীমা শেষ হচ্ছে। কারখানায় কাজ না-থাকায় নতুন করে চুক্তি করছি না। ঠিকাকর্মীদের কাজে পাঠাতে নিষেধ করা হয়েছে।” কারখানা সূত্রে খবর, ১৫০ স্থায়ী কর্মীর ১০০ জনকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। বাকিদের জন্যও সেই প্রক্রিয়া চলছে।
হলদিয়ার সিটি সেন্টারে ২০০৬ সালে এই চিনিকল চালু হয়। ব্রাজিল থেকে কাঁচামাল এনে এখানে চিনি তৈরি হত। তবে দেড় বছর ধরে উত্পাদন ধুঁকছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, একেই চিনির বাজার খারাপ। তার উপর কেন্দ্র কাঁচামাল আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়েছে। ফলে সমস্যা হচ্ছে। হলদিয়া বন্দরে নাব্যতা সঙ্কটের জেরে বড় জাহাজ ঢুকতে না-পারাও আর এক সমস্যা। তার উপর ২০১২ থেকে রাজ্যের তরফে উৎসাহ ভাতা মেলেনি। আর এই সব কারণেই দিনের পর দিন উত্পাদন বন্ধ রাখতে হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের অভিযোগ।
তবে কর্তৃপক্ষ জানান, আপাতত কারখানা বন্ধ করা হচ্ছে না। বরং সমস্যা সমাধানে সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী, কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা চালানো হচ্ছে।
শুভেন্দুবাবু বলেন, “কেন্দ্র কাঁচামাল আমদানিতে অতিরিক্ত শুল্ক চাপিয়েছে। তাতে সঙ্কট বেড়েছে। তবে আগের মতোই এ বারও আশা করি সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে।” এ দিকে, কর্তৃপক্ষ ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে চিঠি দেওয়ায় সিটু নেতারা শ্রম কমিশনে ঠিকাকর্মীদের কাজ হারানোর আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। হলদিয়ার সহকারী শ্রম কমিশনার গোপাল বিশ্বাস তিন ঠিকাদার সংস্থার কাছে বিষয়টি লিখিত ভাবে জানতে চেয়েছেন। হলদিয়ার সিটু নেতা অচিন্ত্য শাসমল বলেন, “অধিকাংশ ঠিকাকর্মী উদ্বাস্তু পরিবারের। তাঁদের জমিতেই কারখানা।” আইএনটিটিইউসি-র কার্যকরী সভাপতি আজিজুল রহমানও জানান, তাঁরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন।