পার্কিং অ্যাপে লক্ষ্মীলাভ

কলকাতা, বেঙ্গালুরু, দিল্লি, মুম্বই- সব বড় শহরেই গন্তব্যে পৌঁছে গাড়ি রাখা এক ঝক্কি। আর এই নিত্যদিনের সমস্যাই হয়ে উঠছে স্টার্ট-আপের পুঁজি। সদ্য তৈরি সংস্থার দুনিয়ায় ‘পার্কিং অ্যাপ’-এর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পিছিয়ে নেই কলকাতাও।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৪
Share:

সারি: রাস্তার ধারে পার্কিং।

কাজের দিন হোক, বা ছুটি। অফিসের কাছে হোক, বা রেস্তোরাঁর সামনে। অন্য গাড়িকে টেক্কা দিয়ে এক চিলতে ফাঁকা জায়গা দখল করে গাড়ি ‘পার্ক’ করা আর লটারি জিতে ফেলার আনন্দ প্রায় এক। আর তা না হলে, পার্কিং-এর জায়গা খুঁজতে গাড়ি নিয়ে পাক খাওয়া ছাড়া গতি নেই।

Advertisement

কলকাতা, বেঙ্গালুরু, দিল্লি, মুম্বই- সব বড় শহরেই গন্তব্যে পৌঁছে গাড়ি রাখা এক ঝক্কি। আর এই নিত্যদিনের সমস্যাই হয়ে উঠছে স্টার্ট-আপের পুঁজি। সদ্য তৈরি সংস্থার দুনিয়ায় ‘পার্কিং অ্যাপ’-এর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। পিছিয়ে নেই কলকাতাও।

দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানসূত্র বাতলাচ্ছে বলেই এই ধরনের উদ্যোগ লগ্নিকারীদেরও নজর কাড়ছে। ‘গেট মাই পার্কিং’, ‘পার্ক জেব্রা’, ‘পার্ক হুইলস’, ‘পার্ক টোয়েন্টিফোর বাই সেভেন’-এর মতো উদ্যোগে তাই নতুন পুঁজি ঢালতে আগ্রহী অনেকেই। সেই ভরসায় গেট মাই পার্কিং দিল্লির পাশাপাশি ইনদওর, লখনউ, ভোপালের মতো শহরে ছড়ানোর পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাতে আস্থা রেখে ৩০ লক্ষ ডলার (১৯.৫ কোটি টাকা) ঢেলেছে বিভিন্ন উদ্যোগ পুঁজি সংস্থা। একই ভাবে কলকাতার সংস্থা ‘পার্ক টোয়েন্টিফোর বাই সেভেন’ পেতে চলেছে কোটি টাকার পুঁজি।

Advertisement

পুঁজির পাশাপাশি ব্যবসাও পাচ্ছে এই ধরনের পার্কিং স্টার্ট-আপ। গেট মাই পার্কিং-এর দাবি, দৈনিক ৬০ হাজার লেনদেন হয়। পার্ক জেব্রা সংস্থার প্রধান টি এন প্রতাপ ও পার্ক হুইলস-এর ধনঞ্জয় রাঠোরের দাবি, স্মার্ট ফোনে অভ্যস্ত নাগরিকরা তাঁদের পার্কিং অ্যাপ ব্যবহার করছেন। কারণ রোজকার সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার রাস্তার খোঁজ দিচ্ছে এ সব অ্যাপ। খুঁজে দিচ্ছে পার্কিং-এর জায়গা ও তার দাম চোকানোর উপায়। মাত্র দেড় মাস ব্যবসা শুরুর মধ্যেই প্রায় ২০ লক্ষ টাকা পার্কিং ফি সংগ্রহ হয়েছে, দাবি পার্ক টোয়েন্টিফোর বাই সেভেন-এর। সংস্থার অন্যতম কর্তা অভিষেক তরফদারের দাবি, ব্যবসার অঙ্ক কষে কলকাতার বাইরেও পা রাখার পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।

শিল্পমহল সূত্রের খবর, শুধু আমজনতাই নয়। বিভিন্ন শহরের পুরসভার কাছে এ ধরনের অ্যাপের চাহিদা রয়েছে। স্মার্ট সিটি প্রকল্পে ঠাঁই করে নিচ্ছে বিভিন্ন পার্কিং অ্যাপ। মুম্বইয়ে দরপত্র চাওয়া হচ্ছে এ ধরনের অ্যাপ তৈরি করে দেওয়ার জন্য। পুণেও একই পথে হেঁটে অ্যাপের খোঁজ করছে। কলকাতার সংস্থার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনাও হয়েছে।

পার্কিং অ্যাপের জন্য প্রশাসনিক চাহিদার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে যানজট ও পরিবেশের সমস্যা। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ৩০% বায়ু দূষণের কারণ পার্কিং সমস্যা। একই ভাবে এর উপরে ৩০% যানজটেরও দায় চেপেছে। এই দুই সমস্যা এড়াতে পার্কিং অ্যাপ-এর হাত ধরতে চাইছে পুরসভাগুলি। কলকাতায় পুজো ও অনূর্ধ্ব সতেরো বিশ্বকাপ ফুটবলের সময়ে এই অ্যাপ কিছুটা কাজে লেগেছে বলে দাবি করেছেন গ্রাহকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন