মঙ্গলবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতিতে কোনও অদলবদল না-হওয়ায় হতাশায় ডুবল নির্মাণ শিল্পমহল।
দেশ জুড়েই নির্মাণ শিল্পে ভাটার টান চলেছে। বিশেষত আবাসনের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের শেষ ছ’মাসে চাহিদা একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। ২০১০ সালের পরে ফ্ল্যাট-বাড়ি এই প্রথম এত কম বিক্রি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে নাইট ফ্র্যাঙ্ক-এর সমীক্ষায়। দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা-সহ দেশের সমস্ত বড় শহরেই একই ছবি। ফলে বিক্রি না-হওয়া ফ্ল্যাটের সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। অফিস তৈরির জায়গার ক্ষেত্রে চাহিদা তুলনায় কিছুটা বাড়লেও তা আবাসন শিল্পের ঘাটতি মেটাতে পারেনি।
এই ম্লান ছবিটা বদলানোর জন্য নির্মাণ শিল্পমহল চলতি আর্থিক বছরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই শেষ ঋণনীতির দিকে তাকিয়েছিল অনেক আশায় বুক বেঁধে। নাইট ফ্র্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার প্রধান শিশির বৈজল বলেন, ‘‘আমরা হতাশ। বর্তমানে নির্মাণ শিল্প খুব কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সেই কারণে সুদের হার ফের কমানো খুব জরুরি ছিল। প্রকল্প তৈরির জন্য নেওয়া ঋণ এবং গৃহঋণ, দু’টিতেই সুদের হার কমলে এই শিল্প খানিকটা অন্তত স্বস্তি পেত।’’
প্রসঙ্গত, গত অগস্টেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন আবাসন শিল্পে চাহিদা বাড়ানোর দাওয়াই বাতলেছিলেন। তাঁর পরামর্শ ছিল, ক্রমশ বাড়তে থাকা অবিক্রীত ফ্ল্যাটের সংখ্যা কমানো আশু প্রয়োজন। তিনি বলেছিলেন, গৃহঋণে সুদ কমালে কিছুটা সুবিধা হবে ঠিকই। কিন্তু দাম চড়া থাকলে চাহিদা বাড়বে না। ফ্ল্যাট বিক্রিও থমকে থাকবে। অর্থাৎ দাম কমিয়ে বিক্রি বাড়ানোর পক্ষে মত দেন তিনি।
রাজনের এই নিদান মেনে নিয়ে আবাসন শিল্প আগেই দাম কমানোর পথে হাঁটতে শুরু করেছে। কিন্তু সেটাই সব নয়। সুদের হারও এখনই কমানো প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছেন নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাই।
ক্রেডাই বেঙ্গলের কর্তা সুশীল মোহতা জানান, মধ্যবিত্ত ক্রেতার জন্য সুদ এখনও চড়া। প্রায় ১০ শতাংশের কাছাকাছি সুদ গুনে মাথার ছাদ জোটাতে নাজেহাল হচ্ছেন তাঁরা। মোহতার খেদ, অন্তত মধ্যবিত্তদের জন্য সুদ কমানো হতে পারে বলে আশা করেছিল নির্মাণ শিল্পমহল। কারণ তাঁরা বুঝছেন, এই শিল্পকে বৈতরণী পার করাতে ভরসা মধ্যবিত্তদের জন্য প্রকল্পই।