বিমান যাত্রীদের সুবিধার প্রস্তাব

যাত্রী নিজে টিকিট বাতিল করলে তাঁকে গুনতে হওয়া টাকার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া। আগাম টিকিট বুকিং থাকা সত্ত্বেও উড়ানে আসন না-পেলে, জরিমানার অঙ্ক পাঁচ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি। আর বাড়তি মালপত্রের ভাড়া এক ঝটকায় অনেকখানি কমিয়ে আনা। যাত্রীদের সুবিধা দিতে শনিবার একগুচ্ছ প্রস্তাব পেশ করল বিমান পরিবহণ মন্ত্রক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ জুন ২০১৬ ০৮:২৬
Share:

যাত্রী নিজে টিকিট বাতিল করলে তাঁকে গুনতে হওয়া টাকার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়া।

Advertisement

আগাম টিকিট বুকিং থাকা সত্ত্বেও উড়ানে আসন না-পেলে, জরিমানার অঙ্ক পাঁচ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি।

আর বাড়তি মালপত্রের ভাড়া এক ঝটকায় অনেকখানি কমিয়ে আনা।

Advertisement

যাত্রীদের সুবিধা দিতে শনিবার একগুচ্ছ প্রস্তাব পেশ করল বিমান পরিবহণ মন্ত্রক। তবে একই সঙ্গে ইঙ্গিত দিল যে, টিকিটের সর্বোচ্চ দাম বেঁধে দেওয়ার পক্ষপাতী নয় তারা। মন্ত্রকের দাবি, তাতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা। দামের ঊর্ধ্বসীমা বাঁধতে গিয়ে উল্টে বেড়ে যেতে পারে টিকিটের ন্যূনতম দরই।

এই সমস্ত প্রস্তাব সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত জানতে দু’সপ্তাহ সময় দিয়েছে মন্ত্রক। তবে বাড়তি মালপত্রের জন্য ভাড়ার নতুন হার ১৫ জুন থেকেই কার্যকর হবে বলে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ-র দাবি।

অধিকাংশ বিমান পরিবহণ সংস্থা ১৫ কেজি পর্যন্ত চেক-ইন ব্যাগেজের জন্য টাকা নেয় না। কিন্তু ওজন ১৫ কেজি ছাড়ালে, ২০ কেজি পর্যন্ত মালপত্রের ক্ষেত্রে বাড়তি প্রতি কেজির জন্য এখন ভাড়া লাগে ৩০০ টাকা করে। প্রস্তাব অনুযায়ী এ বার তা ১০০ টাকা হওয়ার কথা। এয়ার ইন্ডিয়ায় বিনা ভাড়ার চেক-ইন ব্যাগেজ অবশ্য ২৩ কেজি।

অতিরিক্ত বুকিং নিয়ে ফেলার কারণে টিকিট কাটা সত্ত্বেও সংস্থা কোনও যাত্রীকে উড়ানে নিয়ে যেতে না-পারলে, শর্তসাপেক্ষে সংস্থাকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানার প্রস্তাব দিয়েছে বিমান পরিবহণ মন্ত্রক।

উল্লেখ্য, এর আগে উড়ান বাতিলের জন্য কিংবা টিকিট বুকিং থাকা সত্ত্বেও যাত্রীকে নিয়ে না-গেলে, কোন ক্ষেত্রে কত জরিমানা দিতে হবে, তার একটি প্রস্তাব পেশ করেছিল ডিজিসিএ। তাতে বলা হয়েছিল, ওই ক্ষেত্রে বিমান ছাড়ার সময়ের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সংস্থা বিকল্প উড়ানের বন্দোবস্ত করে দিলে, তাকে জরিমানা দিতে হবে এক পিঠের মূল ভাড়ার দ্বিগুণ এবং জ্বালানি চার্জের যোগফলের (১০ হাজার টাকা পর্যন্ত) সমান অঙ্ক। আর বিকল্প উড়ান ২৪ ঘণ্টার পরে হলে, এক পিঠের মূল ভাড়ার চার গুণ এবং জ্বালানি চার্জের যোগফলের (২০ হাজার টাকা পর্যন্ত) সমান টাকা গুনতে হবে সংস্থাগুলিকে। আর যাত্রী বিকল্প উড়ানের সুবিধা নিতে না-চাইলে, টিকিটের পুরো দাম, জরিমানা হিসেবে এক পিঠের মূল ভাড়ার চার গুণ এবং জ্বালানি চার্জের যোগফলের (২০ হাজার টাকা পর্যন্ত) সমান অঙ্ক দিতে হবে বিমান পরিবহণ সংস্থাকে। যাত্রার দিনের অন্তত ১৫ দিন আগে উড়ান বাতিলের কথা যাত্রীকে জানিয়ে বিকল্প উড়ানের ব্যবস্থা করলে অবশ্য জরিমানা গুনতে হওয়ার কথা নয়। শর্তসাপেক্ষে কিছু ক্ষেত্রে এই ছাড় দু’সপ্তাহের কম সময়ের নোটিসের জন্যও হতে পারে।

এ ছাড়া ডিজিসিএ আগেই বলেছিল যে, যাত্রী টিকিট বুকিং বাতিল করলে, কোনও অবস্থাতেই তার ফি মূল ভাড়ার থেকে বেশি হওয়া উচিত নয়। এবং সেই টাকা ফেরতের জন্য বাড়তি কোনও চার্জ নেওয়া উচিত নয় সংশ্লিষ্ট সংস্থার। অর্থাৎ, সে ক্ষেত্রে টিকিটের দামের উপর নেওয়া সমস্ত কর, ইউজার ডেভেলপমেন্ট ফি, বিমানবন্দর উন্নয়ন ফি, যাত্রী পরিষেবা উন্নয়ন ফি সবই ফেরত পাওয়া উচিত সংশ্লিষ্ট যাত্রীর। এমনকী বিশেষ ভাড়া বা প্রোমো-তে কেনা টিকিটের ক্ষেত্রেও (যেখানে মূল ভাড়া ফেরত পাওয়া যায় না) এই সমস্ত কর ও ফি-এর টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নিয়ন্ত্রকের প্রস্তাব, ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক উড়ানের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১৫ ও ৩০টি কাজের দিনের মধ্যে এই টাকা ফেরতের কাজ সারতে হবে সংস্থাকে।

বিমানমন্ত্রী অশোক গজপতি রাজুর দাবি, যাত্রীদের অভিযোগ ও অসুবিধা মাথায় রেখে এই সমস্ত প্রস্তাব। যাকে স্বাগত জানিয়েছে বিমান যাত্রীদের সংগঠন এয়ার প্যাসেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া। কিন্তু উল্টো দিকে, বিমান পরিবহণ বিশ্লেষকদের দাবি, এতে অসুবিধায় পড়বে ওই শিল্প। তাঁদের মতে, এত দিন দেনা আর লোকসানের বোঝায় নুয়ে থাকার পরে হালে সস্তা জ্বালানি ও চাঙ্গা হতে শুরু করা অর্থনীতির হাত ধরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছিল বিমান পরিবহণ। কিন্তু নতুন প্রস্তাব কার্যকর হলে, তা ফের আতান্তরে পড়বে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন