মনের ময়লার পাহাড় জমছে নেটের পাতায়। শিক্ষিত, প্রযুক্তি ব্যবহারে দড় মানুষেরও চূড়ান্ত অভদ্র ব্যবহারের জায়গা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ইন্টারনেট। অস্ত্র স্মার্ট ফোন, ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট। এই ছবি ফুটে উঠেছে মাইক্রোসফটের সদ্য প্রকাশিত ‘ডিজিটাল সিভিলিটি ইনডেক্স’ বা অনলাইন-ভদ্রতা সূচকে।
১৪টি দেশে করা এই সমীক্ষা অনুযায়ী, নেট দুনিয়ায় সবচেয়ে ভদ্র দেশ ব্রিটেন। আর ভারত রয়েছে সপ্তম স্থানে। তার পরেই চিন। একেবারে শেষে দক্ষিণ আফ্রিকা। সমীক্ষায় সবচেয়ে অভদ্র দেশ তারাই।
সমীক্ষায় ৭৭% ভারতীয়ই জানিয়েছেন যে, তাঁরা নেটে কোনও না-কোনও সময়ে দাদাগিরি, হেনস্থা বা খুঁচিয়ে বিতর্ক বাঁধানোর মতো ঘটনার শিকার। ৪৬ শতাংশের অভিযোগ, পরিচয় না-থাকা সত্ত্বেও নেটে গায়ে পড়ে আলাপ পাতাতে চেয়েছেন কেউ। যোগাযোগ করেছেন জোর করে। নেটে এ ধরনের বিভিন্ন বিপদের আশঙ্কায় ভোগেন ৭০% মহিলা। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায় এ ধরনের অসম্মানজনক কথা, প্রতিহিংসামূলক মানসিক নিগ্রহের শিকার হওয়ার ঝুঁকি লাফিয়ে বাড়ছে বলে মানছেন অনেকেরই।
অ্যান্টি-ভাইরাস সংস্থা নর্টনের সমীক্ষা অনুযায়ী, অনলাইনে দাদাগিরি ফলানোর রোগে চিন ও সিঙ্গাপুরের পরেই ভারত। সেখানে নিগ্রহের শিকার বেশি ছোটরা। ৩২% বাবা-মা বলছেন তাঁদের বাচ্চার এ নিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে। বিশেষত সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে।
ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-ও জানিয়েছে, গত এক দশকে ভারতে সাইবার অপরাধ বেড়েছে ১৯ গুণ। সব থেকে বেশি ঘটেছে প্রতারণা। তারপরেই রয়েছে মহিলাদের অসম্মান, যৌন হেনস্থা, মানসিক নিগ্রহ ইত্যাদি। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই সমস্যা আরও বাড়বে। যে কারণে এ নিয়ে সচেতনতা তৈরিতে শিক্ষার প্রয়োজন বাড়ছে বলে তাঁদের দাবি।
মাইক্রোসফটের মুখপাত্র মধু ক্ষেত্রী জানান, সভ্যতা-সূচক তৈরির মূল লক্ষ্য সচেতনতা বৃদ্ধি। তাঁর কথায়, ‘‘দৈনন্দিন জীবনে এ ধরনের ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব মারাত্মক। আমজনতা থেকে প্রশাসন, সকলেরই বিষয়টি নিয়েৈ সচেতন হওয়া জরুরি।’’ গুগ্ল আবার মনে করে, এই শিক্ষা স্কুল স্তরেই শুরু হওয়া প্রয়োজন। ভারতে সংস্থার মুখপাত্র জানান, বিষয়টি পাঠ্যক্রমের আওতায় আনা জরুরি।