ঝুঁকি সত্ত্বেও আগ্রহ ডিজিটাল মুদ্রায়, দাবি সমীক্ষায়

দেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। নেই কোনও আন্তর্জাতিক বা দেশীয় নিয়ন্ত্রক। তাই বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক লগ্নিকারীদের সতর্ক করেছে বিনিয়োগের ব্যাপারে।

Advertisement

জুরিখ ও নয়াদিল্লি

সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৭
Share:

দেশের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। নেই কোনও আন্তর্জাতিক বা দেশীয় নিয়ন্ত্রক। তাই বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক লগ্নিকারীদের সতর্ক করেছে বিনিয়োগের ব্যাপারে। ভারতেও এর লেনদেন বন্ধ করতে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিকে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সতর্ক করেছে অর্থ মন্ত্রকও। তা সত্ত্বেও বিটকয়েনের মতো ডিজিটাল মুদ্রার (ক্রিপ্টো কারেন্সি) চাহিদায় ভাটা পড়ছে না বলে উঠে এল সমীক্ষায়। উল্টে লগ্নিকারীদের মধ্যে এর আগ্রহ বেড়েই চলেছে।

Advertisement

সম্প্রতি এই ধরনের ডিজিটাল মুদ্রা নিয়ে সমীক্ষা করেছিল উপদেষ্টা সংস্থা ক্যাপজেমিনি। সেই সমীক্ষা বলছে, উচ্চবিত্তদের মধ্যে এই মুদ্রা লেনদেনের প্রবণতা বেশি। অনেকে আর্থিক পরামর্শদাতার মতামতের তোয়াক্কা করেন না। যদিও একাংশের মতে, শুধু বিত্তশালীই নন। কম সময়ে বেশি মুনাফার লোভে ইদানিং বহু মধ্যবিত্তও এই মুদ্রায় লগ্নি শুরু করেছেন। ঝুঁকির কথা না ভেবেই।

যাঁদের অন্তত ১০ লক্ষ ডলার লগ্নি (বসত বাড়ি, গাড়ি, ছবি সংগ্রহ বাদে) রয়েছে, তাঁদের একাংশের মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছিল ক্যাপজেমিনি। তাতে দেখা গিয়েছে, গত দু’বছরে তাঁদের লগ্নি অন্তত ২০% রিটার্ন দিয়েছে। এই শ্রেণির মানুষদের সম্মিলিত সম্পদ দাঁড়িয়েছে ৭০ লক্ষ কোটি ডলার। ২০২৫ সালের মধ্যে তা ১০০ লক্ষ কোটি ছুঁতে পারে। অথচ এত উঁচু রিটার্ন সত্ত্বেও সম্পদ আরও বাড়াতে অনেকে লগ্নি করছেন ক্রিপ্টো কারেন্সিতে। কেউ আবার এই মুদ্রা সম্পর্কে তথ্য জানানোর জন্য পরামর্শদাতাদের চাপও দিচ্ছেন। বিশেষ করে তরুণ সম্পদশালীরা।

Advertisement

কেন এই পরিস্থিতি? সমীক্ষা বলছে, লোভের পাশাপাশি আর্থিক পরামর্শদাতার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের অভাবও এর অন্যতম কারণ। যাঁদের নিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়েছে, সেই উচ্চবিত্তদের মধ্যে মাত্র ৫৬% পরামর্শদাতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। ডিজিটাল মুদ্রা কেনা বা দীর্ঘ মেয়াদে জমানোর নেশা তৈরি হয়েছে ২৯ শতাংশের মধ্যে। এতটা না হলেও, তাৎক্ষণিক আগ্রহ তৈরি হয়েছে আরও ২৭ শতাংশের মধ্যে। অথচ এঁদের মধ্যে মাত্র এক তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন, আর্থিক পরামর্শদাতাদের থেকেই এই মুদ্রা সম্পর্কে তথ্য পেয়েছেন তাঁরা।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ঝুঁকি আছে জেনেও অল্প সময়ে বেশি মুনাফার জন্য মধ্যবিত্তদের মধ্যে ডিজিটাল মুদ্রা কেনার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ঘটনা হল, বছরের শুরুতে বিটকয়েনের দাম দ্রুত বাড়ছিল। কিন্তু বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক ও সরকারের কড়া নজরে হু হু করে ধস নামে এই বাজারে। সেই সময়ে বহু মানুষের ক্ষতি হয়। সবচেয়ে বেশি লোকসান হয় মধ্যবিত্তদের। এই অবস্থায় মুদ্রাগুলিকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে নিয়ন্ত্রকেরা। আর অনেক বিশেষজ্ঞই পরামর্শ দিচ্ছেন, ডিজিটাল মুদ্রা থেকে দূরে থাকাই ভাল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন