INFOCOM 2020

সব কিছুতেই ডিজিটাল! সতর্ক করলেন অমিত

দী সরকারের নাম না-করলেও, বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে স্পষ্টতই কেন্দ্রের উদ্দেশে তোপ দেগেছেন তিনি। বলেছেন, দেশের আর্থিক হাল খারাপ হতে শুরু করেছিল অতিমারির আগে থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:৪৬
Share:

অতিমারির ধাক্কায় বদলে গিয়েছে চেনা জগতের অনেক কিছুই। আলোচনা চলছে, শারীরিক দূরত্ববিধির এই ‘নতুন স্বাভাবিক’ সময়ে জীবনযাপন এবং কাজের ধরন কি পুরোপুরি ভার্চুয়াল বা প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাবে? রাজ্যের অর্থ, শিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী অমিত মিত্রের কিন্তু বক্তব্য, প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা বাড়লেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রই ফিরবে পুরনো কাজের ধরনে। এবিপি সংস্থা আয়োজিত তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের মহাযজ্ঞ ইনফোকমের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে শনিবার অমিতবাবু জানান, তিনি বরং অনেক বেশি উদ্বিগ্ন দেশের আর্থিক কাঠামোর ‘বেহাল’ দশা নিয়ে। মোদী সরকারের নাম না-করলেও, বিভিন্ন প্রসঙ্গ তুলে স্পষ্টতই কেন্দ্রের উদ্দেশে তোপ দেগেছেন তিনি। বলেছেন, দেশের আর্থিক হাল খারাপ হতে শুরু করেছিল অতিমারির আগে থেকে। তা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে মেরামতির জন্য যথাযথ পদক্ষেপ করা হয়নি।

Advertisement

করোনা পরবর্তী সময়ে সমাজ ও পেশার ক্ষেত্রে বড় প্রযুক্তিগত রদবদল আসতে চলেছে বলে মত অনেকের। বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে ইতিমধ্যেই। সে কথা মেনেছেন মন্ত্রীও। তাঁর বক্তব্য, এখনও উৎপাদন শিল্প-সহ বহু ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল বা অনলাইন ব্যবস্থায় কাজ চলে। কিন্তু উৎপাদনের পুরো প্রক্রিয়া কি সেই পথে করা সম্ভব? যেমন, সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল সিদ্ধান্ত শুধু নেটে আলোচনা

করে নেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, সেখানে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মুখোমুখি হওয়া ও শারীরিক ভাষাও গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক একই ভাবে যে দেশের ৯৩% কর্মীই অসংগঠিত ক্ষেত্রে যুক্ত, সেখানে পুরো অনলাইন ব্যবস্থা কার্যকরের ব্যাপারেও আপত্তি তুলেছেন অমিতবাবু। আর সেই সূত্রেই এসেছে নোটবন্দি বা তাড়াহুড়ো করে জিএসটি চালুর প্রসঙ্গ। যা অসংগঠিত ক্ষেত্রকে ধাক্কা দিয়েছে।

Advertisement

তবে প্রযুক্তিগত বদলের চেয়েও অমিতবাবুকে বেশি ভাবাচ্ছে দেশের আর্থিক কাঠামোর ‘বড়সড় গলদ’। তাঁর কথায়, ‘‘আর্থিক কাঠামোয় ভয়ানক গলদ রয়ে গিয়েছে। তাকে চিহ্নিত করে সমাধানের পদক্ষেপ করা হয়নি। নোট বাতিল, জিএসটির জন্য অর্থনীতি আগেই ধাক্কা খেয়েছিল।’’ এই প্রসঙ্গে টানা সাতটি ত্রৈমাসিকে ঢিমে বৃদ্ধি, ঋণ বণ্টন ও রফতানি ধাক্কা খাওয়ার কথা উল্লেখ করে অমিতবাবু জানান, কেন্দ্র যথেষ্ট পদক্ষেপ না-করায় তিনি হতাশ।

অমিতবাবুর মতে, আগের আর্থিক পরিস্থিতি ও করোনা সঙ্কটের শুরুতেই বোঝা উচিত ছিল, মন্দার মুখে পড়তে পারে দেশ। বিশেষত ১৯৩০-এর দশকের মন্দার প্রেক্ষিতে তার আঁচ না-পাওয়ার কারণ ছিল না। আর লকডাউনে চাহিদা যখন ধাক্কা খেয়েছে, তখন অর্থনীতির তত্ত্ব মেনেই মানুষকে সরাসরি আর্থিক সুবিধা না-দেওয়ায় কেন্দ্রকে বিঁধেছেন তিনি। উদাহরণ দিয়েছেন আমেরিকা, ব্রিটেন, জাপানের বিপুল ত্রাণ প্রকল্পের। তাঁর কথায়, ‘‘ওই মন্দা এবং ২০০৮ সালের অভিজ্ঞতা থেকেও শিক্ষা নেব না!’’

করোনা সঙ্কটে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বৃদ্ধির কথা বলছেন অনেকেই। তা কিছুটা মেনে মন্ত্রীর প্রশ্ন, বন্ধ হওয়া কারখানায় তো আগে সফটওয়্যারও চলত! সেই ব্যবসাও তো এখন থমকে! ফলে সার্বিক ভাবে অর্থনীতির চাকা ঘোরানোই তাঁর কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি রাজ্যে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেছেন তিনি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন একগুচ্ছ নতুন প্রকল্পে লগ্নি আসার কথা। অমিতবাবুর মতে, পেশাদারদের সংস্থা পাল্টানোর অভ্যাস কলকাতাতেই সবচেয়ে কম। যা সংস্থাকে বাড়তি ভরসা জোগাবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন