Donald Trump

বাণিজ্য চুক্তিতে ভারতই বাধা, দাবি আমেরিকার

মার্কিন প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ কর্তার বক্তব্য, এ বারও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সফরের আগে যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করা গেল না, তার জন্য ভারত সরকারই দায়ী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩৫
Share:

ছবি: এপি।

শুরুর আগেই সুর কাটল।

Advertisement

আর মাত্র দু’দিন বাকি। সোমবারই ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতে পৌঁছচ্ছেন। তার আগে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতে জট না কাটার দায় পুরোপুরি নরেন্দ্র মোদী সরকারের উপরেই চাপাল মার্কিন প্রশাসন।

মার্কিন প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ কর্তার বক্তব্য, এ বারও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সফরের আগে যে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করা গেল না, তার জন্য ভারত সরকারই দায়ী। তাঁর আরও অভিযোগ, আমেরিকা থেকে আমদানি করা বেশ কিছু পণ্যে শুল্ক বাড়িয়ে নয়াদিল্লি বাণিজ্য চুক্তির পথ আরও কঠিন করে ফেলেছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ট্রাম্প-সমিতির প্রথম বৈঠকেও লুকোছাপা

গত পাঁচ বছরে আট বার সাক্ষাৎ হয়েছে নরেন্দ্র মোদী ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের। দু’জনে বিস্তর কোলাকুলি করেছেন। হাতও মিলিয়েছেন। মোদী ভালই ইংরেজি বলেন বলে ট্রাম্প প্রশংসা করেছেন। তা শুনে হাসতে হাসতে মোদী ট্রাম্পের হাতে আলতো চাপড় মেরেছেন। আমেরিকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্য ‘হাউডি মোদী’-র পর এ বার ভারতে ‘নমস্তে ট্রাম্প’-এর আয়োজন হচ্ছে। কিন্তু কাজের বেলায় প্রতিটি সাক্ষাতের পরেই এক দেশ আরেক দেশের উপরে বাণিজ্যে শুল্ক চাপিয়েছে। বাধার পাঁচিল তুলেছে। আমেরিকা ভারত থেকে আমদানি করা বেশ কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে যে বিশেষ অগ্রাধিকার দিত, সেই ‘জেনারেল স্কিম অব প্রেফারেন্স’ বা জিএসপি-ও প্রত্যাহার করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের ওই কর্তা বলেন, ‘‘এটা ভারত সরকারেরই ব্যর্থতা। ওরা সমান ভাবে আমাদের জন্য ভারতের বাজার খুলে দিতে পারেনি।’’ সেটা না করা হলে আমেরিকার দিক থেকে ওই সব সুযোগ-সুবিধা ফিরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে স্পষ্ট করে দিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন কর্তাটি বলেন, ‘‘ভারতের বাজারে এই সব বাধা নিয়ে আমাদের কথাবার্তা চলছে। কিন্তু বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে কোনও ঘোষণা হবে কি না, তার পুরোটাই ভারত কতটা কী করতে তৈরি, তার উপরে নির্ভর করছে।’’

অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটেই চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র-সহ আরও একগুচ্ছ পণ্যে বাড়তি আমদানি শুল্ক চাপিয়েছেন। পীযূষ গয়ালের বাণিজ্য মন্ত্রক অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স সংস্থা সম্পর্কে কড়া অবস্থান নিচ্ছে। ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে সমস্ত তথ্য এ দেশেই রাখতে হবে বলে শর্ত আরোপ করতে চাইছে ভারত। মার্কিন ডেয়ারিজাত পণ্য আমিষ না নিরামিষ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আরএসএসের স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র জানিয়ে দিয়েছেন, তাড়াহুড়ো করে কোনও চুক্তি করতে ভারত চায় না, কারণ আমজনতার রুটিরুজির উপরে এই চুক্তির প্রভাব রয়েছে। এর দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক প্রভাবও রয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, বাজেটে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-র নামে আমদানি শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা পরিস্থিতি আরও কঠিন করে দিয়েছে। বাণিজ্যে ভারতের রক্ষণশীলতা নিয়ে দুশ্চিন্তা এখন আরও বেশি। ই-কমার্স, ডিজিটাল ক্ষেত্রেও মতপার্থক্য বেড়েছে। নয়াদিল্লির বিদেশ মন্ত্রকের কর্তাদের যুক্তি, আমেরিকা বাণিজ্য চুক্তির পরিধি আরও বাড়াতে চাইছে। উল্টো দিকে মার্কিন কর্তাদের যুক্তি, বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার আগে ভারসাম্য দরকার। তার আগে অনেক বাধা কাটাতে হবে। তার ধারেকাছেও পৌঁছনো যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন