সূচনা: প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকের পরে সাংবাদিক বৈঠকে সদস্যরা। (বাঁ দিক থেকে) অসীমা গয়াল, সুরজিৎ ভাল্লা, বিবেক দেবরায়, রতন পি ওয়াটল, রথীন রায়। অর্থনীতির হাল ফেরাতে ১০টি বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বললেন তাঁরা। নয়াদিল্লিতে বুধবার। ছবি: পিটিআই।
ঝিমিয়ে থাকা অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য সরকারি খরচ বাড়াতে গিয়ে রাজকোষ ঘাটতি মাত্রাছাড়া করে লাভ নেই। তাতে ক্ষতিই হবে বলে মনে করছে প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদ।
অনেকেই মনে করছেন, এ কথা বলে বৃদ্ধিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই হিসেবে ত্রাণ প্রকল্প নিয়ে সরকারের ভাবনা-চিন্তায় কার্যত জল ঢেলেছেন পরিষদের চেয়ারম্যান বিবেক দেবরায়। বুধবার পরিষদের প্রথম বৈঠকের পরে তাঁর যুক্তি, ঘাটতি কমানোর প্রক্রিয়া থেকে সরে যাওয়া উচিত নয়।
উল্টে অর্থনীতির হাল ফেরানোর জন্য পরিষদ বরং অসংগঠিত শিল্প, কর্মসংস্থানের মতো ঠিক সেই ক্ষেত্রগুলিকেই চিহ্নিত করেছে, যেগুলিতে নোট বাতিলের ধাক্কা সব থেকে বেশি লেগেছে বলে অভিযোগ। মোদী জমানায় গোরক্ষকদের তাণ্ডবে কৃষক ও পশুপালকরাও সমস্যায় পড়েছেন। একাধিক রাজ্যে ফসলের উপযুক্ত দাম ও ঋণ মকুবের দাবিতে আন্দোলন চলছে। পরিষদ চিহ্নিত ১০টি ক্ষেত্রের মধ্যে কৃষি ও পশুপালনও রয়েছে। বিবেকবাবু বলেন, প্রাথমিক ভাবে বাজেটের কথা মাথায় রেখেই প্রধানমন্ত্রীর সামনে এই বিষয়গুলিতে রূপায়ণযোগ্য সুপারিশ পেশ করা হবে। যদিও নোট বাতিলের ধাক্কাতেই যে বৃদ্ধির হার কমেছে, তা মানতে চাননি পরিষদের সদস্যরা।
গোড়ায় নজর
• আর্থিক বৃদ্ধি • কাজের সুযোগ তৈরি • অসংগঠিত ক্ষেত্র • রাজকোষ নীতি • ঋণনীতি • সরকারি ব্যয় • আর্থিক নিয়ন্ত্রক • কৃষি ও পশুপালন • চাহিদা ও জোগানের ধরন • সামাজিক ক্ষেত্র
অর্থনীতিবিদ সুরজিত ভাল্লা বলেন, ‘‘সকলেই একমত যে বৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়েছে। আমরা এ বার তার শীঘ্রই কারণগুলি খতিয়ে দেখব।’’
চলতি আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাস, এপ্রিল থেকে জুনে বৃদ্ধির হার ৫.৭ শতাংশে নেমেছে। তার পর থেকেই অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার দাওয়াই হিসেবে ত্রাণ প্রকল্প নিয়ে সরকারের অন্দরমহলে পরিকল্পনা শুরু হয়েছিল। পরিকাঠামোয় বাড়তি খরচের পাশাপাশি শিল্পের জন্য করছাড়, উৎসাহ ভাতা ইত্যাদি দিতে গিয়ে ঘাটতির রাশ প্রয়োজনে কিছুটা আলগা হোক বলেও সওয়ালও করেছিলেন অনেকে।
কিন্তু জে পি মর্গ্যানের অর্থনীতিবিদ সাজ্জিদ চিনয়ের মতো অনেকের যুক্তি ছিল, ঘাটতির রাশ আলগা করে, সরকারি খরচ বাড়িয়ে বাজারে চাহিদা তৈরির চেষ্টা করে লাভ নেই। কারণ সমস্যাটা জোগানের। নোট বাতিলের ফলে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প, বিশেষত অসংগঠিত ক্ষেত্র মার খেয়েছে। চাহিদা যে কমেনি, তার প্রমাণ আমদানি বৃদ্ধি।
পরিষদের আর এক সদস্য রথীন রায়ের মতে, ঘাটতির রাশ আলগা করা অর্থহীন। এই অর্থবর্ষে তা ৩.২ শতাংশে কমানো লক্ষ্য। সেই শৃঙ্খলা ভাঙলে লাভ হবে বলে মানতে নারাজ তিনি। সব দেখে প্রাক্তন মুখ্য উপদেষ্টা অরবিন্দ ভিরমানি বলেন, পরিষদ বাইরের আর্থিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর যোগাযোগের মাধ্যম।