শ্লথ অর্থনীতির ধাক্কা হস্তশিল্প মেলাতেও

টানা ২৪ দিন পসরা সাজিয়ে বসেও প্রত্যাশিত মুনাফার মুখ দেখতে পেলেন না শিল্পীরা।

Advertisement

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য 

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৩৩
Share:

হতাশ: পসরা সাজিয়ে হস্তশিল্পী। অভাব ক্রেতার। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

প্রতি বছরের মতো এ বারও কলকাতার ইকো পার্কে বসেছিল রাজ্য হস্তশিল্প মেলা। দরাদরিও চলেছে বিস্তর। কিন্তু টানা ২৪ দিন পসরা সাজিয়ে বসেও প্রত্যাশিত মুনাফার মুখ দেখতে পেলেন না শিল্পীরা। অনেকের বক্তব্য, অর্থনীতির শ্লথ গতির প্রভাব এ বছর এড়াতে পারেনি এই মেলাও। ফলে কমেছে বিক্রিবাটা।

Advertisement

নদিয়ার ঘূর্ণি থেকে এসেছিলেন বিনয় পাল। ঠিক যেমন প্রতি বছরই আসেন টেরাকোটা, ফাইবারে নিজের হাতে তৈরি শিল্পকর্ম নিয়ে। মেলা শেষে হিসেব কষার পরে বিনয় বললেন, ‘‘লাভ তো দূরের কথা, এ বার মেলায় ক্ষতি হয়ে গেল। অর্ধেক মাল ফেরত নিয়ে যেতে হল।’’

রাজ্য সরকারের ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ এবং বস্ত্র দফতরের আয়োজনে এই মেলা পরিচালনা করে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য রফতানি উন্নয়ন সমিতি। দফতর সূত্রের খবর, গত বছর মেলায় ৪২ কোটি টাকার মতো বেচাকেনা হয়েছিল। এ বারও বিক্রি হয়েছে তার ধারেকাছেই। কিন্তু গত বছর যেখানে ছ’হাজার শিল্পী পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন, এ বারে এসেছিলেন তার চেয়ে দু’হাজার বেশি। তা সত্ত্বেও বিক্রি বাড়েনি।

Advertisement

সম্প্রতি বাংলার টেরাকোটা নিয়ে চিনের হস্তশিল্প মেলা থেকে সেরার সম্মান নিয়ে এসেছেন উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরের শিল্পী আশিস বিশ্বাস। তাঁর কথায়, ‘‘বাজার দর যে ভাবে বেড়েছে তাতে গতবারের চেয়ে ২০% বেশি ব্যবসা হওয়ার কথা।’’

এ ব্যাপারে সমিতির অতিরিক্ত অধিকর্তা সুবল পাঁজা বলেন, ‘‘অর্থনীতির খারাপ সময়ের প্রভাব তো রয়েছেই। তবে কাঠ, পট, নকশি কাঁথা, বেতের মতো শিল্পকর্ম বিক্রি হয়েছে। আবার মাটি, টেরাকোটার কিছু কাজ ভাল বিক্রি হয়নি।’’ ইএম বাইপাসের মিলন মেলা থেকে ইকো পার্কে মেলা সরিয়ে আনায় ক্রেতাদের যাতায়াত সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলেও দাবি করেছেন শিল্পীদের একাংশ।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুজালির শিল্পী কানু দাস যেমন গত বার চার লক্ষ টাকার মালপত্র বিক্রি করেছিলেন। এ বারে তাঁর বিক্রিবাটার অঙ্ক আড়াই লক্ষ পার করেনি। তিনি বলেন, ‘‘এত দূরে মেলায় আসতে যেতেই চার ঘণ্টা লাগে। তার পরে এত শিল্পীর কাছে পৌঁছনোর সময় থাকে? শিল্পের দাম আর মিলল কোথায়?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন