টানা দু’বছর সরাসরি কমেছে চিনের রফতানি। ২০১৬ সালে তা নেমে এসেছে মন্দার ২০০৯ সালের পরে সব থেকে নীচে। তার উপর ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে পা রাখতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিন থেকেই বাণিজ্য নিয়ে চিনকে চাপে রাখার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যিনি। তাই সব মিলিয়ে ২০১৭ সালেও নিজেদের বাণিজ্যের ছবি যথেষ্ট ঘোলাটে থাকবে বলেই বেজিংয়ের আশঙ্কা।
২০১৬ সালে চিনের রফতানি কমেছে ৭.৭%। আমদানি ৫.৫%। চিনের মতো রফতানি নির্ভর অর্থনীতির পক্ষে যা বিরাট ধাক্কা। ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার সিদ্ধান্ত কিংবা মার্কিন মুলুকে ট্রাম্পের জয়ের কথা সরাসরি উল্লেখ না-করেও চিনের আমদানি-রফতানি বিষয়ক মুখপাত্র হুয়াং সংপিংয়ের দাবি, ‘‘সারা বিশ্বে মাথা তুলছে বিশ্বায়ন ও মুক্ত বাণিজ্য বিরোধী নীতি। তারই খেসারত গুনতে হচ্ছে আমাদের।’’ আগামী দিনে ট্রাম্পের নীতি কোন পথে হাঁটবে, বেজিং সে দিকে নজর রাখছে বলেও জানান তিনি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে প্রচারে আগাগোড়া চিনকে তুলোধোনা করেছেন ট্রাম্প। তাঁর মতে, বাণিজ্যে বাড়তি সুবিধা পেতে অনৈতিক ভাবে নিজেদের মুদ্রা ইউয়ানের বিনিময় মূল্য কমিয়ে রাখে চিন। ফলে আমেরিকায় যত চিনা পণ্য আসে, তার তুলনায় এশীয় দেশটিতে মার্কিন পণ্য যায় অনেক কম। ফলে বিপুল বাণিজ্য ঘাটতির মুখে পড়তে হয় আমেরিকাকে। তা ছাড়া, চিনে পণ্য তৈরি করে তা আমেরিকার মাটিতে বিক্রি করে বহু মার্কিন বহুজাতিক। যার দরুন আমেরিকার ‘কাজ চলে যায়’ চিনে। এই সমস্ত রুখতে প্রেসিডেন্ট পদে এসেই চিনা পণ্যে চড়া হারে কর বসানোর হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি।
২০১৫ সালে আমেরিকার সঙ্গে চিনের উদ্বৃত্ত বাণিজ্য (আমদানির থেকে রফতানি যত বেশি) ছিল ৩৬,৬০০ কোটি ডলার। ব্যাঙ্ক অব আমেরিকা-মেরিল লিঞ্চের ধারণা, এই তথ্য সামনে রেখে বেজিংকে আলোচনার টেবিলে বসতে চাপ দিতে পারেন ট্রাম্প। ২০১৬ সালে সমস্ত দেশের সঙ্গে সার্বিক ভাবেও চিনের উদ্বৃত্ত বাণিজ্য ছোঁয় ৫১,০০০ কোটি ডলার। আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য বৈঠকে এই হিসাবও বেজিংকে অস্বস্তিতে রাখবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।