Provident Fund

পিএফের সুদ জমা শুরু, মন্ত্রীর দাবি ঘিরে ক্ষোভ

গঙ্গোয়ার এটিকে নতুন বছরের ‘সুখবর’ তকমা দিয়েছেন শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কর্মীদের একাংশ।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:০৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

অবশেষে নিশ্চিত হল প্রভিডেন্ট ফান্ডের সদস্যদের ৮.৫% সুদ পাওয়া। শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ার বৃহস্পতিবার জানালেন, গত (২০১৯-২০) অর্থবর্ষের জন্য ৮.৫% সুদ সদস্যদের অ্যাকাউন্টে জমা দিতে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। টাকা জমা পড়া শুরুও হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

তবে গঙ্গোয়ার এটিকে নতুন বছরের ‘সুখবর’ তকমা দিয়েছেন শুনেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কর্মীদের একাংশ। তাঁদের যুক্তি, করোনার জেরে বহু মানুষ আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন জেনেও তাঁদের হকের টাকা দেওয়া নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে অনিশ্চয়তা তৈরি করা হয়েছে খোদ সরকারের তরফে। যে সময় সেই টাকা পাওয়ার কথা, দেওয়া হচ্ছে তার অনেক পরে। তা বাড়ানোর দাবি তোলা হলেও কান দেওয়া হয়নি।

সুদ মেটাতে সারা বছর লাগিয়ে দেওয়া পিএফের ইতিহাসে এই প্রথম বলে দাবি করে অছি পরিষদের শ্রমিক প্রতিনিধি সদস্য দিলীপ ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘প্রথমত, আগের বছরের থেকে ১৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ২০১৯-২০ সালের সুদ ৮.৫% করা হয়েছে। তার উপরে তা পাওয়া নিয়ে বছরভর অনিশ্চয়তার মধ্যে রাখা হয়েছে সদস্যদের। তাই যে ঘোষণাকে ‘সুসংবাদ’ বলে দাবি করেছেন মন্ত্রী, আমি তার তীব্র বিরোধিতা করছি।’’

Advertisement

সুদ ধার্যের নিয়ম

• পিএফ তহবিলের লগ্নি থেকে আয়ের ভিত্তিতে সুদের হার ঠিক হয়।

• প্রতি বছরই তা ঠিক করতে যাচাই হয় আয়।

• প্রথমে অছি পরিষদ হার স্থির করে।

• পরে অর্থ মন্ত্রকের অনুমোদনক্রমে সুদ ঘোষণা করে শ্রম মন্ত্রক।

২০১৯-২০ সালের ক্ষেত্রে

• ৫ মার্চ অছি পরিষদের বৈঠকে ঠিক হয় ৮.৫% সুদ দেওয়া হবে।

• কিন্তু অর্থবর্ষ শেষের পরে এপ্রিলের মধ্যেই সুদ জমার হিসেব সদস্যদের অ্যাকাউন্টে দেখানোর যে রীতি, তা মানা যায়নি। কারণ অর্থ মন্ত্রকের সায় না-মেলায় শ্রম মন্ত্রক তা ঘোষণা করতে পারেনি।

• সূত্রের খবর ছিল,

পিএফের লগ্নি থেকে আয় কমার পাশাপাশি টাকা না-থাকার যুক্তিতেই সুদ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে অর্থ মন্ত্রকে।

• ৯ সেপ্টেম্বরে ফের অছি পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, সুদ ৮.৫ শতাংশই থাকছে। কিন্তু দু’ভাগে দেওয়া হবে। প্রথমে ৮.১৫%, পিএফ তহবিলের ঋণপত্রে লগ্নির আয় থেকে। ডিসেম্বরে বাকি ০.৩৫%, শেয়ার বাজারে ইটিএফে (এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড) তহবিলের যে অংশ খাটে, তার রিটার্ন থেকে।

• তবে তাতেও তখন অর্থ মন্ত্রকের সম্মতি মেলেনি।

• ১৩ ডিসেম্বর খবর মেলে, শেয়ার বাজার চাঙ্গা থাকায় পিএফ কর্তৃপক্ষ এ মাসের শেষে একসঙ্গে পুরো ৮.৫% সুদই দিতে চলেছেন। আশা জাগে, এ বার অর্থ মন্ত্রকের সায় মিলবে।

• বৃহস্পতিবার শ্রমমন্ত্রী সন্তোষ গঙ্গোয়ার জানালেন, ৮.৫% সুদ দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। তা সদস্যদের অ্যাকাউন্টে জমার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে।

৮.৫% হারে সুদ দেওয়ার প্রস্তাব অবশ্য পিএফের অছি পরিষদে গৃহীত হয়েছিল গত মার্চেই। কিন্তু তা দেওয়ার ব্যাপারে প্রথম থেকেই টালবাহানা করছিল কেন্দ্র। পরে ওই ৮.৫ শতাংশই চূড়ান্ত হয়। কিন্তু তা দু’ভাগে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন গঙ্গোয়ারই। সেই সিদ্ধান্তও দিনের আলো দেখেনি। ফের ডিসেম্বরে শেয়ার বাজার চাঙ্গা থাকার যুক্তিতে একলপ্তে পুরো সুদ দেওয়া হবে বলে জল্পনা ছড়ায়।

পিএফ সূত্রের খবর, সুদের একাংশ ইটিএফ ভাঙিয়ে দেওয়া নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর শ্রম মন্ত্রকের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছিল অর্থ মন্ত্রক। জবাব সন্তোষজনক হওয়ায় সায় মিলেছে। কিন্তু এত দেরিতে কেন, সে প্রশ্ন থাকছেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন