২০১৬-র ১ এপ্রিল থেকেই পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করার লক্ষ্যে দু’টি কমিটি তৈরি করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। একটি কমিটির কাজ হবে নতুন কর আদায়ের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থা তৈরির দেখভাল করা। প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যমের নেতৃত্বে দ্বিতীয় কমিটি নতুন করের হার কী হতে পারে, তা সুপারিশ করবে। অর্থ মন্ত্রক চাইছে, জিএসটি-র হার এমন হোক, যাতে সাধারণ মানুষের বোঝা না-বাড়ে। আবার কেন্দ্র বা রাজ্যের রাজস্ব আয়ও একই থাকে।
বস্তুত, আগামী বছর ১ এপ্রিলের আগে জিএসটি চালুর জন্য প্রয়োজনীয় সংসদীয় প্রক্রিয়া মিটবে কি না, তা নিয়ে যেমন সংশয় রয়েছে, তেমনই তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো তৈরির কাজও শেষ হবে কি না, তা নিয়েও সংশয়ে শিল্পমহল। সেই অনিশ্চয়তা দূর করতেই আজ রাজস্ব দফতরের অতিরিক্ত সচিব ও জিএসটি সংক্রান্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি বা এমপাওয়ার্ড কমিটির সদস্য-সচিবের যৌথ নেতৃত্বে স্টিয়ারিং কমিটি তৈরি হয়েছে। জিএসটি-র অনলাইন রেজিস্ট্রেশন, রিটার্ন ফাইল ও রিফান্ডের জন্য কেন্দ্রের পাশাপাশি সব রাজ্যেও তথ্যপ্রযুক্তি পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। সেই কাজ সময় মতো হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতেই এই কমিটি।
অধিকাংশ রাজ্য জিএসটি-র বিষয়ে ইতিবাচক হলেও কোন রাজ্যে এর কতখানি প্রভাব পড়বে, রাজ্যগুলির রাজস্ব আয় ও তার অর্থনীতির উপরেই বা জিএসটি-র কতখানি প্রভাব পড়বে, তা স্পষ্ট নয়। সুব্রহ্মণ্যমের কমিটিকে তাই করের হারের পাশাপাশি এই বিষয়টিও খতিয়ে দেখে দু’মাসের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
জিএসটি চালুর জন্য সংবিধান সংশোধনী বিলটি লোকসভায় পাশ হয়ে গেলেও সেটি রাজ্যসভায় বাধার মুখে পড়ায় সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। গত কালই তার কাছে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের এমপাওয়ার্ড কমিটির মতামত পেশ করেছেন চেয়ারম্যান, কেরলের অর্থমন্ত্রী কে এম মণি। প্রাথমিক ভাবে তিনি জিএসটি চালুর পক্ষে ইতিবাচক মত দিয়েছেন বলেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর। তারপরেই আজ অর্থ মন্ত্রক দু’টি কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন।
সিলেক্ট কমিটিতে কংগ্রেসের সদস্যরা অবশ্য দাবি তুলেছেন, গুজরাতের মতো যে-সব রাজ্য ইউপিএ-জমানায় জিএসটি নিয়ে আপত্তি তুলত, তারাই মোদী জমানায় জিএসটির পক্ষে সায় দিচ্ছে কেন, তা খতিয়ে দেখা দরকার। এ জন্য গুজরাতে গিয়ে রাজ্যের আমলাদের পাশাপাশি সেখানকার শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও সিলেক্ট কমিটি কথা বলুক বলে দাবি কংগ্রেস সদস্যদের।