Retail Business

বিক্রিবাটায় বৈষম্যের ছবি স্পষ্ট, বলছে শিল্পমহল

এ বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় দেশের খুচরো ব্যবসা ২০ শতাংশের আশোপাশে বাড়ছিল। অগস্টে কিন্তু সেই গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১৩
Share:

অতিমারিতে আর পাঁচটা ক্ষেত্রের মতো প্রত্যাশিত ভাবেই ধাক্কা খেয়েছিল খুচরো ব্যবসা। প্রতীকী ছবি

উৎসবের আগে পণ্যের চড়া দামের ছাপ পড়ছে খুচরো ব্যবসার উপরে। বেশি দামের পণ্য বিকোলেও, সস্তার জিনিসের ক্ষেত্রে ততটা চাহিদা দেখা যাচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। যা কপালে ভাঁজ ফেলছে তাঁদের।

Advertisement

রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (আরএআই) পরিসংখ্যান বলছে, এ বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে আগের বছরের একই মাসের তুলনায় দেশের খুচরো ব্যবসা ২০ শতাংশের আশোপাশে বাড়ছিল। অগস্টে কিন্তু সেই গতি কিছুটা শ্লথ হয়েছে। গত বছরে একই মাসের তুলনায় বৃদ্ধির হার ১৭%। আর ২০১৯ সালের অগস্টের চেয়ে গত মাসে এই ব্যবসা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫%। গত মাসে বৃদ্ধির হার কমার জন্য আরএআই-এর বক্তব্য, এর পিছনে সমাজের আর্থিক বৈষম্যই মূল কারণ।

অতিমারিতে আর পাঁচটা ক্ষেত্রের মতো প্রত্যাশিত ভাবেই ধাক্কা খেয়েছিল খুচরো ব্যবসা। পরে বিধিনিষেধ উঠলে ধাপে ধাপে চাকা ঘুরতে শুরু করে। ইতিমধ্যেই করোনার আগের সময়ের ব্যবসাকে পিছনে ফেলেছে এই ক্ষেত্র। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, অতিমারির আগে দেশে আর্থিক ঝিমুনি চলছিল। ফলে তখনও বিক্রিবাটা কম ছিল। সেই তুলনায় এখনকার বৃদ্ধি বেশি ঠিকই। কিন্তু পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক বলা যাবে কি না, সন্দেহ রয়েছে।

Advertisement

এই অবস্থায় মঙ্গলবার দেশের খুচরো ব্যবসার পরিসংখ্যান দিতে গিয়ে সমাজে নিম্ন আয়ের মানুষের কেনাকাটায় মূল্যবৃদ্ধির বিরূপ প্রভাবের কথা জানিয়েছে আরএআই। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে গত মাসে খুচরো বাজারে পণ্যের দাম বেড়েছে ৭%। আর সংগঠনটি জানাচ্ছে, দেশের চারটি অঞ্চলের আলাদা হিসাবে খুচরো ব্যবসা বৃদ্ধির হার যথেষ্ট ভাল। কিন্তু এই ‘উজ্জ্বল’ ছবির অন্তর্তদন্ত করলে দেখা যাবে তা ততটা উজ্জ্বল নয়। বরং সামাজিক ক্ষেত্রে বৈষম্যের ইঙ্গিত রয়েছে তার মধ্যে। সংগঠনের সিইও কুমার রাজাগোপাল বলেন, ‘‘বেশিরভাগ পণ্যেরই দাম বেড়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কোনও পণ্যের দামি মডেল ভালই বিক্রি হয়েছে। কিন্তু সস্তার ক্রেতা কম। যেমন, দামি টিভি বিক্রির চেয়ে কম দামি টিভির বিক্রি কম হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এতেই স্পষ্ট যে উচ্চ মধ্যবিত্ত ও সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিরা কেনাকাটা করছেন। নিম্ন আয়ের ক্রেতারা ততটা কেনাকাটা করছেন না। বিশেষত যেটা অত্যাবশ্যক নয়, সেই কেনাকাটায় তাঁরা ততটা আগ্রহী নন।

এর আগে শ্যাম্পু, বিস্কুটের মতো দৈনন্দিন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় সেই সব ব্যবসায় প্রভাব পড়েছিল। আরএআই-এর সমীক্ষা জানিয়েছে, ২০১৯ সালের অগস্টের চেয়ে গত মাসে সব চেয়ে বেশি বিক্রি বেড়েছে খেলার সরঞ্জামের, প্রায় ৪৭%। অন্যান্য ক্ষেত্রের মধ্যে জুতো (২৭%), খাদ্য ও মুদিপণ্য (১৮%), বস্ত্র (২০%), গয়না (২৩%), আসবাবপত্র ও গৃহসজ্জা (৯%), ভোগ্যপণ্য ও বৈদ্যুতিন (২৩%), প্রসাধনী ও সৌন্দর্য (২৫%)। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই সস্তার পণ্যের চাহিদা তুলনায় কম ছিল বলে জানাচ্ছে তারা। উৎসবের মরসুমে সব ক্ষেত্রেই বিক্রিবাটায় কিছুটা গতি আসবে বলে আশা সংগঠনটির। তবে সেটা কতটা হয়, সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন