পুরনো বস্তায় লেভির শস্য ভরায় পাঁচ কোটি জরিমানা ৩২টি চালকলকে

শস্য প্যাকেজিংয়ে চটের বস্তার ব্যবহার ঘিরে ফের অনিয়ম রাজ্যে। খাদ্যশস্য লেভি হিসেবে সরকারকে জমা দেওয়ার সময়ে খোলা বাজার থেকে পুরনো চটের বস্তা কিনে চাল ভরে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কিছু চালকলের বিরুদ্ধে। সেই বস্তা সরকারকে চার গুণ বেশি দামে বেচা হয় বলেও অভিযোগ। তারই তদন্ত করে এ বার ওই সব চালকলকে প্রায় ৫ কোটি টাকা জরিমানা করল রাজ্য খাদ্য দফতর।

Advertisement

প্রভাত ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৫ ০২:৪২
Share:

শস্য প্যাকেজিংয়ে চটের বস্তার ব্যবহার ঘিরে ফের অনিয়ম রাজ্যে।

Advertisement

খাদ্যশস্য লেভি হিসেবে সরকারকে জমা দেওয়ার সময়ে খোলা বাজার থেকে পুরনো চটের বস্তা কিনে চাল ভরে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কিছু চালকলের বিরুদ্ধে। সেই বস্তা সরকারকে চার গুণ বেশি দামে বেচা হয় বলেও অভিযোগ। তারই তদন্ত করে এ বার ওই সব চালকলকে প্রায় ৫ কোটি টাকা জরিমানা করল রাজ্য খাদ্য দফতর। রাজ্যের ৮০০টি চালকলের প্রতিটিতে দফতরের সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় অফিসারেরা গিয়ে নজরদারির ব্যবস্থাও শুরু করেছেন।

রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘বাম আমলে সংগৃহীত খাদ্যশস্য ভরার জন্য একটিও চটের বস্তা কেনা হত না। আমরা চালকলগুলিকে নির্দেশ দিয়েছি, সরকারকে দেওয়া লেভি-র শস্যের জন্য চটের বস্তার ব্যবহার বাধ্যতামূলক। প্লাস্টিকের বস্তা সরকার নেবে না। তার পর থেকেই আমার দফতরের নজরে আসে, চালকলগুলির একাংশ পুরনো বস্তায় ভরে খাদ্যশস্য লেভি দিচ্ছে।’’ তিনি জানান, তদন্তে দেখা যায়, ৫০ কিলোগ্রাম শস্য ধরে, এমন পুরনো বস্তার দাম বাজারে মাত্র ১২ টাকা। অথচ সেটিই সরকারের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে প্রায় চার গুণ বেশি দামে, ৪৬ টাকায়। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পরে ৩২টি চালকলকে ৪.৬৮ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে বলে মন্ত্রী জানান।

Advertisement

আবার কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রক রাজ্যকে সম্প্রতি এক চিঠিতে জানিয়েছে, এখানে ২০০টিরও বেশি চালকল চটের বদলে প্লাস্টিকের বস্তায় খাদ্যশস্য ভরে বণ্টন করছে। কেন্দ্রীয় জুট প্যাকেজিং মেটিরিয়াল বা জেপিএম আইন ভাঙায় এদের বিরুদ্ধ কড়া ব্যবস্থা নেওয়া দরকার বলে মনে করছে মন্ত্রক।

কেন্দ্র ও রাজ্যের এই সব অভিযোগ স্বীকার করেছেন রাজ্য রাইস মিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশীল চৌধুরী। তবে তিনি বলেন, ‘‘একমাত্র পুরুলিয়ার সামান্য কিছু চালকলের বিরুদ্ধে পুরনো বস্তা ব্যবহারের অভিযোগ পেয়েছি।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘সরকার আমাদের চাল বার করার জন্য ধান দেয়। সেটা যে-বস্তায় আমাদের দেওয়া হয়, তাতেই ফেরত পাঠাই। তার জন্য নতুন বস্তা কিনব কেন? কিন্তু লেভির শস্য চটকল থেকে কেনা নতুন বস্তাতেই দেওয়া হয়। তার রসিদও সরকারকে দেওয়া হয়।’’

উল্লেখ্য, এ রাজ্যে সবচেয়ে বেশি চটকল থাকা সত্ত্বেও পশ্চিমবঙ্গ কখনও খাদ্যশস্যের প্যাকেজিংয়ে চটের বস্তা ব্যবহার করে না, এমনই অভিযোগ করে আসছে চটকল মালিকদের সংগঠন আইজেএমএ। সম্প্রতি কেন্দ্র বিভিন্ন রাজ্যের জন্য চটের বস্তা কেনার পরিমাণ কমিয়ে দিচ্ছে বলেও চটকল মালিকেরা অভিযোগ আনেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন