দিঘার পথে তাজপুর ও শঙ্করপুরের মধ্যে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির লক্ষ্যে সচিব গোষ্ঠী গড়ল রাজ্য। কোন মডেলে প্রকল্পে লগ্নি টানা হবে, মূলত সে ব্যাপারে তারা ১৫ দিনেই সুপারিশ জমা দেবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তাঁর আশা, কাজ শুরুর তিন থেকে সাড়ে তিন বছরের মধ্যে তাজপুর বন্দরটি চালু হয়ে যাবে।
বুধবার নবান্নে শিল্প ও পরিকাঠামো বিষয়ক কমিটির বৈঠক শেষে শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘‘কোন পথে ওই প্রস্তাবিত বন্দর তৈরি করা হবে, তা খতিয়ে দেখতেই রাজ্যের মুখ্যসচিবকে মাথায় রেখে ওই কমিটি গড়া হয়েছে। অর্থসচিব, শিল্পসচিব ও পরিবহণসচিব-সহ অন্য সচিবদের কমিটিতে রাখা হয়েছে।’’ মন্ত্রী জানান, ইতিমধ্যে ওই বন্দর তৈরির ব্যাপারে একটি উপদেষ্টা সংস্থার পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। সচিব গোষ্ঠী সেটি খতিয়ে দেখে রাজ্যের নীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন। ১৫ দিনের মধ্যে ওই সুপারিশ জমা দিতে বলা হয়েছে। অমিতবাবু এ দিন জানিয়েছেন, কোন মডেলে তাজপুর বন্দরে বেসরকারি লগ্নি টানা হবে, তা সচিব গোষ্ঠী ঠিক করলেও লগ্নি টানার ক্ষেত্রে রাজ্যের মানুষের স্বার্থের বিষয়টি মাথায় রাখা হবে।
তাজপুর বন্দর নির্মাণের যে-পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে জলের নাব্যতা রাখা হবে ১৫ মিটার। ফলে বড় জাহাজ পণ্য নিয়ে বন্দরে আসতে পারবে। গভীর সমুদ্র থেকে বন্দর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার চ্যানেল কাটা হবে। প্রথম ধাপে বন্দরে ছ’টি বার্থ তৈরি হবে বলে ঠিক হয়েছে। প্রকল্পের জন্য রাজ্যকে কোনও জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। তাজপুর-শঙ্করপুরে রাজ্যের হাতে থাকা জমিতেই পলিমাটি ফেলে বন্দর নির্মাণের জায়গা তৈরি করা হবে। প্রয়োজনে প্রাথমিক পরিকাঠামো নির্মাণে রাজ্য এগিয়ে আসতে পারে।
পাশাপাশি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলপিতে একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে ৫০০ একর জমিতে জাহাজ তৈরি ও জাহাজ ভাঙার প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। ছোট বন্দরও তৈরি হবে। একই সঙ্গে বাম আমলে কুলপিতেই যে-ছোট বন্দর তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সেই সব নথি খতিয়ে দেখা হবে। যদি দেখা যায়, স্বচ্ছতার সঙ্গে ওই বন্দর তৈরি করা সম্ভব, তা হলে রাজ্য সরকার সে পথে এগোবে বলে এ দিনের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে।