নোট বাতিলের জের পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থায়।
ভিন্ রাজ্য থেকে আসা বড় বড় ট্রাক খুচরোর সমস্যায় গন্তব্যে পৌঁছনোর বদলে মাঝপথে আটকে পড়ছে। সেগুলিকে সচল রাখতে যতক্ষণ সম্ভব, পাম্পে তেল নেওয়ার সময়ে বাতিল নোটের বদলে তাঁদের খুচরো দেওয়ার চেষ্টা করবে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। পাশাপাশি, ট্রাকগুলিকে আগাম টাকা ভরে রাখার জন্য তেল সংস্থারই দেওয়া ‘ফ্লিট কার্ড’ এই সময়ে বেশি করে ব্যবহারের উপরও জোর দিচ্ছে তারা। ডেবিট কার্ডের ধাঁচে এটি চালু হয়েছিল বারো বছর আগেই।
আগামী ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত পাম্পগুলিতে বাতিল নোট দিয়ে তেল কেনার সুবিধা বাড়িয়েছে কেন্দ্র। পাম্পের মালিকদের অবশ্য অভিযোগ, অল্প তেল নিয়ে এখনও ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট ভাঙানোর প্রবণতা রয়েছে ক্রেতাদের একাংশের মধ্যে। খুচরো না-থাকলে পাম্পগুলি পুরো টাকার তেল নিতে বলছে।
রাজ্যে তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ‘স্টেট লেভেল কোঅর্ডিনেটর’ তথা ইন্ডিয়ান অয়েলের জেনারেল ম্যানেজার রঞ্জনকুমার মহাপাত্র বৃহস্পতিবার জানান, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা ওই বড় ট্রাকগুলিকে সাহায্য করতে তাঁরা প্রস্তুত। যতক্ষণ সম্ভব, তাঁদের প্রয়োজনে ৫০০ বা ১০০০ টাকার খুচরো দেবে পাম্পগুলি। পাশাপাশি আটকে পড়া ট্রাকচালক ও তাঁদের সহকারীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা।
অন্য দিকে, তেল ভরার সুবিধার জন্য ওই ফ্লিট-কার্ড চালু করেছিল তেল সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫ লক্ষ গাড়ির এই কার্ড রয়েছে। দৈনিক সারা দেশে গড়ে ১০০ কোটি টাকারও বেশি লেনদেন হয় এই কার্ডে। রঞ্জনবাবুর বক্তব্য, বড় ট্রাকগুলিকে যেহেতু বেশি তেল নিতে হয়, তারা টাকার বদলে এখন এই কার্ডের সুবিধা নিতে পারে।
বিশেষ করে জাতীয় সড়কের আশপাশের সব পাম্পেই এই সুবিধা মিলবে। এই কার্ড ব্যবহার করলে ‘রিওয়ার্ড পয়েন্ট’-ও মেলে। রয়েছে শর্তসাপেক্ষে বিমার সুবিধাও। তবে সংশ্লিষ্ট শিল্প সূত্রের খবর, নোট বাতিলের পরে এই কার্ডের ব্যবহার তেমন বাড়েনি। একই কথা জানিয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল পেট্রোলিয়াম ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট তুষার সেনও। অন্য একটি সূত্রের দাবি, মাঝপথে অনেক ট্রাক আটকে থাকায় পণ্য পরিবহণের উপর প্রভাব পড়তে পারে।
এ দিকে, তুষারবাবুর অভিযোগ, কেন্দ্রের নির্দেশে তাঁরা বাতিল নোট নিলেও তা জমা করতে গিয়ে হয়রান হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রচুর বাতিল নোট দিয়ে তেল কিনছেন ক্রেতারা। কিন্তু এত টাকা জমা দিতে ব্যাঙ্কে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এতে পরিষেবা যেমন ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তেমনই পরের দিনের তেল কিনতেও অসুবিধা হচ্ছে।’’ পাম্পের টাকা জমা দেওয়ার জন্য বিশেষ ব্যবস্থার আর্জি জানিয়ে তাঁরা তেল সংস্থাগুলির দ্বারস্থ হয়েছেন।