জল্পনার পারদ চড়ছে বেশ কিছু দিন থেকেই। এখন কার্যত তা হয়ে দাঁড়িয়েছে টানটান থ্রিলারের মতো। ভারতে নেটে কেনাকাটার বাজার আপাতত সরগরম ওয়ালমার্টের ফ্লিপকার্টকে কিনে নেওয়ার গুঞ্জনে। শোনা যাচ্ছে, তা না কি স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। আবার অন্য কিছু সূত্রে খবর, সেই হাতবদল আটকাতে ফ্লিপকার্টের জন্য আরও বেশি দর হেঁকেছে অ্যামাজন। আর এই সমস্ত কিছুর মধ্যে হাতবদলের জল্পনাকে তুঙ্গে তুলে বিভিন্ন ছোট অংশীদারের থেকে ৩৫ কোটি ডলারে (২,৩৪৫ কোটি টাকা) নিজেদের ১৮ লক্ষ শেয়ার কিনে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়েছে ফ্লিপকার্ট।
বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ রিটেল বহুজাতিক ওয়ালমার্ট যে ভারতীয় ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্টের মালিকানা পকেটে পুরতে চায়, তা শোনা যাচ্ছে বহু দিন থেকেই। কোনও সূত্রে খবর, ভারতীয় সংস্থাটির ৭২-৭৩ শতাংশ শেয়ারের জন্য ১,২০০ কোটি ডলার (৮০ হাজার কোটি টাকা) উপুর করতে তৈরি তারা। আবার কখনও শোনা যাচ্ছে ফ্লিপকার্টের ৭৫% মালিকানা মার্কিন রিটেল দৈত্য কিনছে ১,৫০০ কোটি ডলারে (১ লক্ষ কোটি টাকা)। আর এই জল্পনাতেই ইন্ধন জুগিয়েছে এ দিন ফ্লিপকার্টের নিজেদের শেয়ার কিনে ফেরানোর (বাই ব্যাক) খবর।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক ছোট-ছোট শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে আলাদা ভাবে শেয়ার কেনার থেকে এক লপ্তে তা কিনতে স্বচ্ছন্দ বোধ করে যে কোনও বড় সংস্থা। নিজেদের শেয়ার কিনে ফেরানোর এই উদ্যোগ সেই কারণেই বলে তাঁদের দাবি।
পরিচিতি
ওয়ালমার্ট
• যাত্রা শুরু ১৯৬২ সালে। আমেরিকার আরকানসাসে। সদর দফতরও সেখানেই
• প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়াল্টন
• বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ খুচরো ব্যবসা (রিটেল) সংস্থা
• বিশ্ব জুড়ে ২৮টি দেশে ব্যবসা। বিপণি (স্টোর) ১১,৭০০টি
• সঙ্গে পাইকারি ব্যবসা। ই-কমার্স ওয়েবসাইটও
• ফি সপ্তাহে কেনাকাটা করেন ২৭ কোটি ক্রেতা
• বছরে ব্যবসা ৫০ হাজার কোটি ডলার (৩৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা)
• কর্মী সংখ্যা প্রায় ২৩ লক্ষ
• ভারতে আপাতত পাইকারি (ক্যাশ অ্যান্ড ক্যারি) ব্যবসায়। বিপণি ২১টি
ফ্লিপকার্ট
• প্রতিষ্ঠা ২০০৭ সালে। বেঙ্গালুরুতে। সদর দফতরও সেখানে। তবে ব্যবসার কিছু অংশ নথিভুক্ত সিঙ্গাপুর, তাইওয়ানেও
• প্রতিষ্ঠাতা সচিন ও বিন্নি বনসল। দু’জনের পরিচয় পড়তে গিয়ে। আইআইটি-দিল্লিতে
• অন্যতম বৃহৎ ভারতীয় খুচরো ব্যবসা (রিটেল) সংস্থা
• ঝুলিতে মিন্ত্রা, জাবং, ফোন পে-র মতো শাখা সংস্থা
• বছরে ব্যবসা ২০ হাজার কোটির
তবে ভারতের বাজারে যাদের সঙ্গে টক্কর দিতে ওয়ালমার্টের এই ‘উদ্যোগ’, সেই মার্কিন ই-কমার্স সংস্থা অ্যামাজনও না কি বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে রাজি নয়। শোনা যাচ্ছে, ‘শেষ মুহূর্তে’ ওয়ালমার্টের পরিকল্পনা ভেস্তে দিতে ২,০০০ কোটি ডলার (১.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা) দর হেঁকেছে তারা। লক্ষ্য, এ দেশে ই-কমার্সের বাজারে ওয়ালমার্টকে দাঁত ফোটাতে না দেওয়া। তবে এ নিয়ে এখনও সরাসরি মুখ খোলেনি তিন সংস্থাই।