বেআইনি লেনদেনের মাধ্যমে কৌশলে কর ফাঁকি রুখতে আগামী ১ এপ্রিল থেকেই ভারতে চালু হচ্ছে জেনারেল অ্যান্টি অ্যাভয়েডেন্স রুল (জিএএআর)। বিশেষ করে এর আওতায় আসবে মূলধনী লাভকর। আর, এর জেরেই ভারতের শেয়ার বাজারে বিদেশি লগ্নি কমতে পারে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্ট মহলে। তবে বাজার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা, এই আশঙ্কা অমূলক। কারণ লগ্নির ক্ষেত্র হিসাবে ভারতের বাজার এখনও বিদেশি লগ্নিকারীদের পছন্দের তালিকায় উপরের দিকেই রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এক শ্রেণির অসাধু বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থা তথ্য গোপন করে আইনকে বুডো় আঙুল দেখিয়ে মূলত ‘মরিশাস রুট’-এর সুযোগ নিত। ভারতের বাজারে লগ্নির পরে মুনাফা করেও তারা নিজেদের মরিশাসের শাখা হিসেবে দেখিয়ে মূলধনী লাভকর ফাঁকি দিত। কারণ, ভারত ও মরিশাস সরকারের মধ্যে দ্বৈত কর বাতিল চুক্তি অনুযায়ী ওই দেশের লগ্নিকারীরা ভারতে বিনিয়োগ করে মুনাফা করলেও মরিশাসের আইন অনুযায়ীই মূলধনী লাভকর দিয়ে থাকেন। ভারতের আইন অনুযায়ী নয়। মরিশাসে মূলধনী লাভকরের হার ভারতের তুলনায় খুবই কম।
এই ব্যবস্থাই বাজার মহলে মরিশাস রুট হিসাবে পরিচত। এ পথে কর ফাঁকি বন্ধের লক্ষ্যেই কেন্দ্র চালু করতে চলেছে জিএএআর। এই পরিপ্রেক্ষিতে অনেকের ধারণা, যে-সব সংস্থা কর ফাঁকি দিয়ে মুনাফা করত, তারা লগ্নিতে উৎসাহ হারাবে। আশঙ্কায় লগ্নি ফিরিয়ে নিতে পারে অন্যরাও। তবে বাজার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকে আবার মনে করছেন, এই আশঙ্কা পুরোপুরি সত্যি না-ও হতে পারে। প্রবীণ বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘‘কর ফাঁকি বন্ধ হলে ভারতের বাজারে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলি বিনিয়োগ কমিয়ে দেবে, এটা মনে হয় না। কারণ, কর ফাঁকির সুযোগ আছে দেখে কোনও লগ্নিকারী বিনিয়োগ করে না। ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি এবং কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের আর্থিক সংস্কারকে সামনে রেখে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির পছন্দের তালিকায় ভারত শীর্ষে রয়েছে।’’