বাড়ছে ঋণের চাহিদা
Indian Economy

শক্ত জমি খুঁজছে বাজার

দুশ্চিন্তার মেঘ যে পুরো কেটেছে, তা বলা যাবে না। তবে স্বস্তির জায়গাও তৈরি হয়েছে কিছু। যাকে আঁকড়ে প্রাণপণে মাথা তুলতে চাইছে সূচক। যেমন, বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে পরস্পরের সঙ্গে কথা চালাচ্ছে আমেরিকা, চিন।

Advertisement

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৮ ১০:১৯
Share:

ফের পড়ল সেনসেক্স। শুক্রবার সেনসেক্স নেমেছে ৩৪ হাজারে।

মাত্র কয়েক দিনের জন্য সেনসেক্স পা রেখেছিল ৩৫ হাজারের ঘরে। শুক্রবার ফের পিছলে নেমেছে ৩৪ হাজারে। আর এই ওঠাপড়া থেকে একটা বিষয় মোটামুটি পরিষ্কার, পা বাড়ানোর জন্য হন্যে হয়ে শক্ত জমি খুঁজে চলেছে শেয়ার বাজার।

Advertisement

দুশ্চিন্তার মেঘ যে পুরো কেটেছে, তা বলা যাবে না। তবে স্বস্তির জায়গাও তৈরি হয়েছে কিছু। যাকে আঁকড়ে প্রাণপণে মাথা তুলতে চাইছে সূচক। যেমন, বাণিজ্য যুদ্ধ এড়াতে পরস্পরের সঙ্গে কথা চালাচ্ছে আমেরিকা, চিন। সমঝোতায় উদ্যোগী হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। এর প্রভাব পড়েছে ভারতে। তবে বাজারকে আরও উঠতে হলে, ২০১৭-’১৮ সালে নথিবদ্ধ সংস্থাগুলির গড় লাভ বাড়তে হবে। বহাল থাকতে হবে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশার আলো।

বর্তমান পরিস্থিতি বলছে, সেই সময় আসার ইঙ্গিত মিলছে। এখনও পর্যন্ত প্রকাশিত সংস্থাগুলির আর্থিক ফল মোটের ওপর ভাল। ভাল বর্ষার ইঙ্গিত, জিএসটি আদায় বৃদ্ধি ইত্যাদিও শক্তি জোগাচ্ছে। বিশেষত এপ্রিলে যেখানে জিএসটি আদায় প্রথম বার ১ লক্ষ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। এই কর সংগ্রহ বাড়া অর্থনীতির স্বাস্থ্য ফেরার অন্যতম লক্ষণ। সংগ্রহ বাড়লে কমবে ঘাটতি। ফলে সরকারকে কম ঋণ নিতে হবে বাজার থেকে। এতে বন্ডের দাম কমা এবং ইল্ড বৃদ্ধি শ্লথ হবে।

Advertisement

গত সপ্তাহে যে ফলগুলি বাজারে ছাপ ফেলেছে, তার মধ্যে অন্যতম হিরো মোটোকর্প। জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে তাদের নিট লাভ ৩৪.৮% বেড়েছে। ডাবর ইন্ডিয়ার সার্বিক নিট মুনাফা বেড়েছে ১৮.৯%। কোটাক ব্যাঙ্কের ১৫%। এইচডিএফসির ৩৯%।

রুপোলি রেখা

• গত অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিক ও পুরো বছরে শিল্প সংস্থাগুলির মোটের উপর ভাল ফল প্রকাশ

• ভাল বর্ষার ইঙ্গিত

• বাড়তে থাকা জিএসটি আদায়

• বেশি কর আদায়ের হাত ধরে ভবিষ্যতে রাজকোষ ঘাটতি ও সরকারি ঋণ কমার আশা

• বাণিজ্য যুদ্ধ এড়ানোর সদিচ্ছা নিয়ে শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে আমেরিকা-চিনের আলোচনা

• উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে কিছু সমঝোতার উদ্যোগ

ডিএইচএফএলের ২৬%। ইন্ডিগোর নিট লাভ যদিও ৭৩% কমে নেমেছে ১১৮ কোটিতে। কিন্তু নীরব মোদীর প্রতারণায় পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক ভুগলেও, তাদের গোষ্ঠীর পিএনবি হাউজিং ফিনান্সের ত্রৈমাসিক লাভ ১৫২ কোটি থেকে বেড়ে হয়েছে ২২০ কোটি। ৪৬% বেড়েছে এডেলওয়েজ ফিনান্সিয়ালের নিট মুনাফাও।

এ দিকে, সুদ কমায় এবং শেয়ার, ফান্ডের মতো লগ্নির আকর্ষণ বাড়ায় দ্রুত কমছে ব্যাঙ্ক আমানত বৃদ্ধির হার। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে যা ছিল মাত্র ৬.৭%। ৫৫ বছরে সব চেয়ে কম। কিন্তু সম্প্রতি ঋণের চাহিদা বাড়ায় আমানত সংগ্রহ বাড়াতে চাইছে বহু ব্যাঙ্ক। ফলে স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ অনেককেই দেখা গিয়েছে বিভিন্ন মেয়াদে সুদ বাড়াতে।

অন্য দিকে, কেওয়াইসি নিয়ে ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের মধ্যে অভিযোগ বাড়ছে। বলা হচ্ছে, কেওয়াইসি নবীকরণ না হওয়ায় কিছু ব্যাঙ্ক সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলা (ডেবিট এন্ট্রি) বন্ধ করছে। অভিযোগ, এর জন্য গ্রাহকরা নোটিস পাচ্ছেন না কিছু কিছু ক্ষেত্রে। ফলে বহু প্রয়োজনীয় চেক (যেমন মেডিক্লেম প্রিমিয়াম ইত্যাদি) ফেরত যাচ্ছে অ্যাকাউন্টে টাকা থাকা সত্ত্বেও। একাংশের প্রশ্ন, তথ্য একই থাকলে এক-দু’ বছর পরপর কেওয়াইসি নবীকরণ করতে হবে কেন?

সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ না দিলেও এবং আধার দাখিলের সময় বাড়লেও, কিছু ব্যাঙ্ক এখনও আধার দিতে জোর করছে বলে অভিযোগ। কেউ আঙুলের ছাপ নিচ্ছে। কেউ বাধ্যতামূলক করেছে ই-মেল আই ডি দাখিল করাকেও। প্রশ্ন উঠছে, নিয়ম কি বিভিন্ন ব্যাঙ্কের জন্য বিভিন্ন রকম?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন