চিন্তা: রফতানির জন্য তৈরি হচ্ছে মালদার আম। এর পর?
পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) জমানা শুরুর প্রথম কয়েক দিনেই ধাক্কা খেল রাজ্য থেকে ইউরোপের বাজারে আনাজ এবং ফল রফতানি। গত দু’সপ্তাহে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে এই সব পণ্যের রফতানি প্রায় ৩০-৪০% কমে গিয়েছে বলে দাবি রাজ্যের রফতানিকারী সংস্থাগুলির।
তাদের অভিযোগ, এমনিতে আনাজে কোনও জিএসটি নেই। কিন্তু নতুন কর ব্যবস্থায় ১ জুলাই থেকে রফতানির (ইন্টারন্যাশনাল কার্গো) উপরে ১৮% কর বসানো হয়েছে। এর জেরে বিশ্ব বাজারে পশ্চিমবঙ্গের আনাজ ও ফলের দাম বেশ খানিকটা বেড়ে গিয়েছে বলে তাদের দাবি। যার প্রভাব গিয়ে পড়েছে বিদেশে পাঠানো শাক-আনাজের উপরেও।
রাজ্যের এই সমস্ত পণ্য রফতানিকারী সংস্থাগুলির সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক অঙ্কুশ সাহা জানান, ভারত ছাড়াও ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, মায়ানমার, চিনের মতো দেশ আনাজ ও ফল রফতানি করে। ওই দেশগুলিতে কর কম। ফলে বিদেশে তাদের রফতানি করা আনাজের দামও ভারতের তুলনায় কিছুটা কম। তার উপর জিএসটি চালুর পরে আনাজের দাম আরও বেশি হয়ে যাচ্ছে। ফলে আমদানিকারী অনেক সংস্থাই তা নিতে চাইছে না বলে তাঁর দাবি।
পাশাপাশি অঙ্কুশবাবুর বক্তব্য, যতটা রফতানি হচ্ছে, তার জন্য ১৮% জিএসটি-ই দিতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। নতুন ব্যবস্থায় আগাম কর দিয়ে পরে তা ফেরতের ব্যবস্থা থাকছে ঠিকই। কিন্তু প্রথমে ওই ১৮% হারে কর দিতে গিয়ে বহু ছোট রফতানিকারী সংস্থার পুঁজিতে টান পড়তে শুরু করেছে। তার উপরে এক বার কর দেওয়ার পরে, তা ফেরত পাওয়ার পদ্ধতি নিয়ে অনেকেই অন্ধকারে। ফলে
সমস্যা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
পুরো বিষয়টি জানিয়ে সংগঠনের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সমস্যার কথা জানানো হয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থসচিব ও বাণিজ্যসচিবকেও।
উল্লেখ্য, রাজ্যের চাষিদের বিভিন্ন শাক-আনাজ ইউরোপে রফতানি হয়। এর মধ্যে ঝিঙে, পটল, লঙ্কা যেমন রয়েছে, তেমনই কুমড়ো, পুঁই, লাউ, পাট শাকেরও ব্যাপক চাহিদা। রফতানি হয় পান-ও। প্রবাসী বাঙালি ও বিদেশিদের চাহিদার অনেকটাই মেটান পশ্চিমবঙ্গের চাষিরা। রাজ্যের আমও ইউরোপে রফতানি হয়েছে। এই সময় প্রচুর পরিমাণে কাঁঠালও যায় বিদেশে। এই সব ব্যবসাই জিএসটি-র কারণে ধাক্কা খেয়েছে বলে
দাবি সংস্থাগুলির।