চলতি আর্থিক বছরেই ৭.৫ শতাংশে পৌঁছবে বৃদ্ধি। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির ইঞ্জিনে গতি বাড়াবে নিয়ন্ত্রণে থাকা মূল্যবৃদ্ধি আর রাজকোষ ঘাটতিতে রাশ। বৃদ্ধি ফের ৮ শতাংশের উপরে নিয়ে যাওয়ার দৌড়ে জ্বালানি জোগাবে সংস্কার নিয়ে কেন্দ্রের একবগ্গা মনোভাবও। মার্কিন সফরে এসে শনিবার ভারতীয় অর্থনীতির ‘অচ্ছে দিন’ নিয়ে এই সমস্ত দাবি করলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ) আয়োজিত বার্ষিক বসন্ত-বৈঠকে যোগ দিতে আমেরিকায় এসেছেন জেটলি। সঙ্গে এসেছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত পটেল, কেন্দ্রীয় আর্থিক বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস এবং মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যন। সেখানেই আলোচনার ফাঁকে ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে এই সমস্ত আশার কথা শুনিয়েছেন তিনি।
শুক্রবারই এ দেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাজনক পূর্বাভাস শুনিয়েছিল আইএমএফ। বলেছিল, চলতি ও আগামী অর্থবর্ষে ভারতে বৃদ্ধি দাঁড়াবে যথাক্রমে ৭.২ এবং ৭.৭ শতাংশ। এ দিন আর এক কদম এগিয়ে জেটলির দাবি, চলতি অর্থবর্ষেই ৭.৫% ছোঁবে বৃদ্ধি। নোট বাতিলের ধাক্কা সামলে গত বছর যা দাঁড়িয়েছে ৭.১%।
আশার আলো
•
চলতি আর্থিক বছরে বৃদ্ধির সম্ভাব্য হার ৭.৫%
•
মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে
•
লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে না রাজকোষ ঘাটতি
•
মাত্রাছাড়া হবে না চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতিও
•
গতি বাড়বে আর্থিক সংস্কারের
•
জুলাই থেকেই সম্ভবত চালু হবে জিএসটি
মূল্যবৃদ্ধির হার ও ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে থাকা নিয়ে তো বটেই, আর্থিক সংস্কারের বিষয়েও রীতিমতো আশাবাদী শুনিয়েছে অর্থমন্ত্রীকে। সম্প্রতি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে ঐকমত্য তৈরির পরে সংসদে পাশ হয়েছে জিএসটি বিল। আশা করা হচ্ছে, তা চালু হবে জুলাই থেকেই। সেই প্রসঙ্গ তুলে এ দিন অর্থমন্ত্রীর দাবি, পণ্য-পরিষেবা কর চালু হলে, দেশজুড়ে এক রকম কর গোনার সুবিধা পাবে শিল্প। সুবিধা হবে ব্যবসায়ীদেরও। দেশের অর্থনীতিকে এক ঝটকায় যা অনেকটা এগিয়ে দেবে বলে অনেকের ধারণা।
অনেক সময় অর্থনীতির স্বার্থে জরুরি হলেও, রাজনৈতিক জনপ্রিয়তা কুড়োতে সংস্কারের কড়া দাওয়াই প্রয়োগের সাহস দেখাতে পারে না কেন্দ্র। কিন্তু জেটলির দাবি, মোদী-সরকারের জমানায় উল্টো ছবি ফুটে উঠছে। অর্থমন্ত্রীর সম্মানে ভোজসভার আয়োজন করেছিলেন মার্কিন মুলুকে ভারতের রাষ্ট্রদূত নভতেজ সরানা। সেখানে জেটলির দাবি, এই প্রথম সংস্কারের সিদ্ধান্তে পাশে দাঁড়াচ্ছেন মানুষ। সমর্থন জানাচ্ছেন দীর্ঘ মেয়াদি ভালর কথা ভেবে তেতো দাওয়াই প্রয়োগেও। সাম্প্রতিক ভোটগুলির ফলাফল তার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ।
অনেকে অবশ্য বলছেন, এ কথা ঠিক যে, নোট বাতিলের মতো কড়া সিদ্ধান্তের পরেও সাম্প্রতিক ভোটগুলিতে সফল বিজেপি। চোখধাঁধানো ফল করেছে উত্তরপ্রদেশে। কিন্তু সংস্কারের চাকায় এখনও অনেক বেশি গতি আনা যে জরুরি। পাখির চোখ করতে হবে দ্রুত ৮% বৃদ্ধির কক্ষপথে ফেরাকেও।