ধর্মঘটেও গয়না বিক্রি বাড়েনি নেট বাজারে

নম্বর বাড়ানো দূর অস্ত্, গয়না বিক্রি বাড়ানোর পরীক্ষায় ডাহা ফেল করল নেটবাজার। গয়না শিল্পে মার্চের শুরু থেকে টানা এক মাসের উপর চলা ধর্মঘট অনলাইনে বিক্রি বাড়ানোর বিপুল রসদ জুগিয়েছিল। তার উপর সামনেই বিয়ের মরসুম। অথচ এই সময়ে এক শতাংশও বেশি গয়না বেচতে পারেনি নেটে বিক্রেতারা। টানতে পারেনি সামান্য বাড়তি ক্রেতাও।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৩০
Share:

নম্বর বাড়ানো দূর অস্ত্, গয়না বিক্রি বাড়ানোর পরীক্ষায় ডাহা ফেল করল নেটবাজার।

Advertisement

গয়না শিল্পে মার্চের শুরু থেকে টানা এক মাসের উপর চলা ধর্মঘট অনলাইনে বিক্রি বাড়ানোর বিপুল রসদ জুগিয়েছিল। তার উপর সামনেই বিয়ের মরসুম। অথচ এই সময়ে এক শতাংশও বেশি গয়না বেচতে পারেনি নেটে বিক্রেতারা। টানতে পারেনি সামান্য বাড়তি ক্রেতাও।

এ বার বাজেটে কেন্দ্র সোনা ও দামি পাথর বসানো গয়নায় ১% উৎপাদন শুল্ক চাপানোর প্রস্তাব দিয়েছে। তার পরেই গত ২রা মার্চ থেকে দেশ জুড়ে ঝাঁপ বন্ধ প্রায় সমস্ত গয়নার দোকানের। প্রতিবাদ-আন্দোলনে সামিল হয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের হিসেব বলছে, এক মাস পেরিয়ে যাওয়া ধর্মঘটের জেরে ইতিমধ্যেই লোকসানের অঙ্ক ছুঁয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু দোকানের ঝাঁপ বন্ধ থাকার এই সুযোগ নিতে পারেনি অনলাইন গয়নার বাজার। বিপুল ব্যবসার ঘাটতি কণামাত্রও পোষানো যায়নি নেট মারফত বিক্রির মাধ্যমে।

Advertisement

হালে চোখে পড়ার মতো বেড়েছে অনলাইনে বিভিন্ন পণ্য কেনার ঝোঁক। যদিও বই, সিডি, ট্রেন-প্লেনের টিকেট, মোবাইল বা পোশাকের মতো অনলাইন বিক্রির রমরমা এখনও গয়না শিল্পে দেখা যায়নি। তবু ক্রেতাদের মানসিকতার বদলে আস্থা রেখে নেট বাজারকেই বাজি করেছে নতুন সংস্থা ক্যারাটলেন, ব্লু-স্টোনের মতো অনলাইন গয়না বিক্রেতা। ব্যবসার আশায় এই দুনিয়ায় পা রেখেছে মালাবার গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডস, ত্রিভুবনদাস ভিমজি জাভেরি, গীতাঞ্জলীর মতো চিরাচরিত গয়না ব্র্যান্ডও। এমনকী নেট বাজারে গয়না বিক্রি বাড়ার সম্ভাবনায় ভরসা রেখে বেঙ্গালুরুর অনলাইন গয়না সংস্থা ব্লু-স্টোনে পুঁজি ঢেলেছেন রতন টাটার মতো শিল্পপতি। পিছিয়ে নেই এ রাজ্যের সংস্থাগুলিও। ইতিমধ্যেই নেট বাজারে পসরা সাজিয়েছে অঞ্জলি জুয়েলার্স ও সেনকো গোল্ড।

নেট বাজারে গয়না বিক্রির পরিমাণ এখনও মোট বিক্রির এক শতাংশের কম। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৫৫,১০০ কোটি ডলার গয়না বাজারের মাত্র ০.১% অনলাইনের দখলে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের আশা ছিল, ইঁট-কাঠ-পাথরের দোকান বন্ধ থাকায় হয়তো চাহিদা মেটাতে খোঁজ পড়বে নেট বাজারেরই। কিন্তু সে আশায় ছাই। নেট দুনিয়ার দাবি, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলেও, ক্রেতাদের মানসিকতা এত দ্রুত বদলানো সম্ভব নয়। ক্যারাটলেন, ব্লু-স্টোনের মতো সংস্থার দাবি, ক’বছরে ছবিটা অনেক বদলেছে। এখন ছোট গয়না কিনতে চেনা দোকান খোঁজার পরিবর্তে নেট বাজারে পা রাখেন বহু ক্রেতাই। তবে মোটা দামের ভারি গয়না কিনতে দোকানের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা যায়নি এখনও।

ধর্মঘট চলার সময়ও অনলাইন ব্যবসা বিশেষ সুবিধা না করতে পারায় সাময়িক ধাক্কা খেয়েছে শিল্পের আস্থা। তবে ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে এখনই নেট বাজার থেকে সরে যেতে রাজি নয় গয়না সংস্থাগুলি। বরং শিল্পের দাবি, আগামী পাঁচ বছরে অনলাইন মাধ্যমে গয়না কেনার অঙ্ক ২৫০ কোটি ডলার ছোঁবে। আর এই সম্ভাবনার টানেই ফ্লিপকার্ট, ই-বে, অ্যামাজনের মতো ই-কমার্স সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধছে ছোট-বড় গয়না সংস্থাগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন