ফাইল চিত্র।
নোটবন্দি, জিএসটি-জট, কেনা-কাটা ৫০ হাজার ছাড়ালেই আধার নম্বর জমার বাধ্যবাধকতা— এই সমস্ত সমস্যা পিছনে ফেলে ধনতেরসে নতুন করে দৌড় শুরুর আশা দেখছে সোনার বাজার। শেষমেশ সেই সোনার দৌড় এখনই শুরু হবে কি না, তা নিয়ে সারা দেশে সংশয় কাটেনি এখনও। কিন্তু ধনতেরসে দোকানে-দোকানে চোখে পড়ার মতো ভিড় আর সামনেই বিয়ের মরসুম বলে জমজমাট বিক্রির আশায় বুক বাঁধছেন কলকাতার গয়না ব্যবসায়ীরা।
তাঁদের দাবি, এ বার ধনতেরসে গয়নার বিক্রি গত বছরের তুলনায় প্রায় ২০% বেড়েছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত যথেষ্ট ভিড় হয়েছে অধিকাংশ দোকানে। বিশেষত বউবাজারে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পি সি চন্দ্র জুয়েলার্সের অন্যতম কর্তা উদয় চন্দ্র বলেন, ‘‘আমাদের সব শোরুমে ক্রেতাদের লাইন বাইরে পর্যন্ত চলে গিয়েছে। বিক্রি বেশ ভাল।’’
প্রায় একই কথা বলছেন নেমিচাঁদ বামালুয়া অ্যান্ড সন্সের কর্তা তথা জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ট্রেড ফেডারেশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বাছরাজ বামালুয়া। তবে তাঁর কথায়, ‘‘ক্রেতাদের চাহিদার ৮০% জুড়েই রয়েছে চেন, পেনডেন্ট, আংটি, দুলের মতো হাল্কা গয়না।’’
বামালুয়ার মতোই গিণি এম্পোরিয়ামের কর্তা তথা স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি বাবলু দে বলেন, ‘‘নোটবন্দি এবং জিএসটি-র পরে গয়নার বাজারে যে মন্দার মেঘ জমা হয়েছিল, আশা করছি এ বার তা কাটবে।’’
আগামী মাস থেকেই শুরু হচ্ছে বিয়ের মরসুম। এ বার প্রথম বিয়ের তারিখ ২৮ নভেম্বর। বামালুয়ার কথায়, ‘‘এ দিনই দেখলাম বহু ক্রেতা এখন থেকে বিয়ের গয়না কিনছেন।’’
কিন্তু হঠাৎ হাল ফেরার এই আশা তাঁরা করছেন কেন?
বাবলুবাবু এবং বামালুয়া জানান, নোটবন্দির পরে সাধারণ মানুষের হাতে টাকার টান ছিল। সেই সমস্যা এখন কমেছে। কেটেছে জিএসটি-জট। ৫০ হাজার টাকার বেশি গয়না কেনার ক্ষেত্রে আধার নম্বর জমার বাধ্যবাধকতাও এখন শিথিল করেছে কেন্দ্র। ফলে যে সমস্ত কারণে ক্রেতারা গয়না কেনা প্রায় বন্ধ রেখেছিলেন, সেগুলি অন্তত এই মুহূর্তে আর নেই। ফলে ফের গয়নার বাজারমুখো হয়েছেন ক্রেতারা। ভবিষ্যতে জিএসটি -র বিষয়ে আরও ধাতস্থ হলে, বাজার আরও চাঙ্গা হবে বলে তাঁদের দাবি।
সোনার দরে দ্রুত ওঠা-নামা কিছুটা কমাও চাহিদা বৃদ্ধিতে রসদ জুগিয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট শিল্পের অভিমত। বিশেষ করে বিশ্ব বাজারে দাম কমায় এই দিন ভারতেও সোনার দাম আগের দিনের থেকে কিছুটা কম ছিল। এটাও এ দিন চাহিদা বাড়ার কারণ বলে মনে করেন বামালুয়া।