এ বার নেটে কেনাকাটার দুনিয়াকে স্পষ্ট নীতির আওতায় আনছে কেন্দ্র।
মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার বা অ্যাডিডাসের মতো বিদেশি সংস্থাই হোক বা ফ্যাবইন্ডিয়া, হাইডসাইনের মতো দেশীয় সংস্থা— মঙ্গলবারই তাদের একক ব্র্যান্ড হিসেবে সরাসরি অনলাইনে পণ্য বেচার ছাড়পত্র দিয়ে সেই লক্ষ্যে ছোট্ট পদক্ষেপ করল তারা। তার পরের দফায় ই-কমার্স ক্ষেত্রের ঢালাও সংস্কারের লক্ষ্যে আরও বড় সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে কেন্দ্র, যার হাত ধরে ভবিষ্যতে সামগ্রিক ভাবে ই-কমার্স ক্ষেত্রে বিদেশি লগ্নির দরজা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তও সহজ হবে বলে মত কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের।
এই মুহূর্তে ই-কমার্সের ক্ষেত্রে না-রয়েছে কোনও সুস্পষ্ট নীতি, না-রয়েছে তার সংজ্ঞা। ব্যবসায়িক সংস্থাগুলির সরাসরি পণ্য বেচার ব্যবসায় বিদেশি লগ্নিরও অনুমোদন নেই। অথচ বেশ কিছু সংস্থার বিরুদ্ধে বিদেশি লগ্নির নিয়ম ভাঙারও অভিযোগ উঠেছে। ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিলের মতো সংস্থা দাবি করে, তারা আসলে একটা অনলাইন মাধ্যম, যেখানে শুধু ক্রেতা-বিক্রেতাকে মিলিয়ে দেওয়া হয়।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের বক্তব্য, ই-কমার্সের নির্দিষ্ট সংজ্ঞা তৈরির পাশাপাশি ব্যবসার মাপ অনুযায়ী কোনও সংস্থা ছোট, বড় না মাঝারি, তা ঠিক করা হবে। ফলে কোনটির ক্ষেত্রে কতখানি বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দেওয়া সম্ভব, সে বিষয়েও ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। সরকার মনে করলে ছোট ই-কমার্স সংস্থাগুলির জন্য বিশেষ সুবিধা দিতে পারে। নতুন ই-কমার্স সংস্থাগুলির এ দেশে ব্যবসার রাস্তা সহজ করাও সম্ভব হবে কেন্দ্রের পক্ষে।
বাণিজ্য মন্ত্রকের সমীক্ষা অনুযায়ী, দু’বছর আগেও দেশে ই-কমার্সের মাধ্যমে ব্যবসার পরিমাণ ছিল ১২০০ কোটি ডলারের মতো। ২০২০-র মধ্যে তা অন্তত ২০০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। কেন্দ্রের বক্তব্য, সুস্পষ্ট নীতি থাকলে এই ক্ষেত্রে নতুন লগ্নি আসা সহজ হবে। কর্মসংস্থান তৈরিরও সুযোগ বাড়বে। বাণিজ্য, অর্থ, তথ্যপ্রযুক্তির মতো ছ’টি মন্ত্রককে নিয়ে এখন সেই নীতি তৈরিরই কাজ চলছে।
গত কালের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, যে -সব একক ব্র্যান্ডের খুচরো ব্যবসার সংস্থায় বিদেশি লগ্নি রয়েছে, চাইলে তারাও এখন অনলাইনে সরাসরি নিজেদের পণ্য বেচতে পারবে। এত দিন তাদের কোনও অনলাইন সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধতে হত। ফলে মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, আইকিয়া, এইচ অ্যান্ড এম সরাসরি নিজেদের অনলাইন পোর্টাল তৈরি করে পণ্য বেচতে পারবে। দেশের বাজার থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ কাঁচামাল কেনার শর্ত পূরণ করতেও অনেক সময় পাবে এই সংস্থাগুলি। নাইকি, স্বচ্-এর মতো যে-সব সংস্থা এ দেশে নিজস্ব বিপণি খোলার জন্য ছাড়পত্রের অপেক্ষা করছে, তারাও ভবিষ্যতে সরাসরি অনলাইনে পণ্য বেচতে পারবে।