ছোট বাগানের চা পাতা বেচতে তৎপর রাজ্য

বছর দশেক ধরেই উত্তরবঙ্গে ছোট চা বাগান তৈরির প্রবণতা বেড়েছে। চা পর্ষদ সূত্রের খবর, দার্জিলিং বাদে উত্তরবঙ্গের অন্যত্র যতটা চা উৎপাদন হয়, তার ৫৩% আসে এই ক্ষুদ্র চা বাগান থেকে।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৩৫
Share:

কর্মকাণ্ড: চা পাতা তোলা হচ্ছে গাড়িতে। জলপাইগুড়ির একটি বাগানে। নিজস্ব চিত্র

চা চাষে উৎসাহ দিতে এ বার ছোট বাগানের পাতা বিপণনে উদ্যোগী রাজ্য। এমনকী ভাল মানের পাতা রফতানির পরিকল্পনাও রয়েছে। এ জন্য উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠিত করতে চায় রাজ্য। আর, সেই লক্ষ্যেই আগামী ১৯ জানুয়ারি সরকারের তরফে তাঁদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে কলকাতায়। আয়োজনে রয়েছে বণিকসভা অ্যাসোচ্যাম। বৈঠকে নেতৃত্ব দেবেন কৃষি সচিব সঞ্জীব চোপড়া।

Advertisement

বছর দশেক ধরেই উত্তরবঙ্গে ছোট চা বাগান তৈরির প্রবণতা বেড়েছে। চা পর্ষদ সূত্রের খবর, দার্জিলিং বাদে উত্তরবঙ্গের অন্যত্র যতটা চা উৎপাদন হয়, তার ৫৩% আসে এই ক্ষুদ্র চা বাগান থেকে। বাড়ির উঠোনের সামনে একফালি জমিতে চা গাছ লাগিয়েছেন কেউ। সেই পাতা যাচ্ছে বটলিফ কারখানায়। পরে স্থানীয় বাজারেই বিক্রি হচ্ছে পাতা। এমনই ছোট জমিতে করা বাগানের চা পাতা বিপণনে জোর দিচ্ছে রাজ্য। চা পর্ষদ জানিয়েছে, রাজ্য ছোট বাগানের চা বিপণনে এগিয়ে এলে তাদেরও সমর্থন থাকবে।

সরকারি সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র অ্যাসোচ্যাম-কে বৈঠক আয়োজনের প্রস্তাব দেন। সরকারের ধারণা, বণিকসভাটি সঙ্গে থাকলে চাষিদের সংগঠিত করা সহজ হবে। প্রান্তিক চাষিদের কাছে সুবিধা পৌঁছনোও সহজ হবে। ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সিস্টা-র সর্বভারতীয় সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চা পর্ষদ, ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন সংস্থাকেও ডাকা হয়েছে বৈঠকে। রাজ্যের তরফে তো বটেই, ব্যাঙ্কঋণ নিয়েও সুবিধা ঘোষণা করা হতে পারে।’’

Advertisement

প্রসঙ্গত, বাম আমলে আইন করে জানানো হয়েছিল, ২০০১-এর ৩০ জুনের পরে গজিয়ে ওঠা ছোট চা বাগানকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে না। ফলে জমিতে চা চাষের ছাড়পত্রও নেই অর্ধেকের বেশি কৃষকের। ব্যাঙ্কঋণ পাওয়াও কঠিন। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ক্ষুদ্র চাষিদের সংগঠনগুলি রাজ্যের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তাব দেয়। এ বার অবশ্য রাজ্য নিজেই ডাক পাঠিয়েছে। অ্যাসোচ্যাম জানিয়েছে, বাগানে সেচ, কীটনাশক ব্যবহারের বিধিনিষেধ, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার নিয়েও কথা হবে।

বাগান বৃত্তান্ত

• ৫০ হাজারেরও বেশি ছোট চা চাষি

• ছোট চা বাগান প্রায় ৪০ হাজার

• চাষ মোট ১.৪৫ লক্ষ একর জমিতে

• ২০১৬-’১৭ সালে মোট উৎপাদন ১৫.৪০ কোটি কেজি

• দার্জিলিং বাদে উত্তরবঙ্গের ৫৩% চা হয় এই সব বাগানে

সমস্যা

• সিংহভাগ ছোট বাগানের জমির বৈধতা নেই

• চা চাষের ছাড়পত্র না থাকায় ব্যাঙ্কঋণ মেলে না

• পাতার দামে নজরদারি নেই

• গুণগত মান পরীক্ষারও উপায় নেই

• সুসংহত বিপণন ব্যবস্থাও নেই

তথ্যসূত্র: ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠন সিস্টা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন