প্রস্তুতি শুরু রিটার্ন জমা ঢেলে সাজারও

দেশ জুড়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে জিএসটি-র হার ঢেলে সাজতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। এ বার সম্ভবত পালা রিটার্নেরও। এ বার রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থাও আমূল ঢেলে সাজার পথ বাতলাতে মাঠে নামছে ১০ সদস্যের কমিটি। যার মাথায় জিএসটি নেটওয়ার্কের (জিএসটিএন) চেয়ারম্যান অজয় ভূষণ পান্ডে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৫৮
Share:

বিলম্বিত বোধোদয়।

Advertisement

দেশ জুড়ে প্রবল বিক্ষোভের মুখে জিএসটি-র হার ঢেলে সাজতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। এ বার সম্ভবত পালা রিটার্নেরও।

ইতিমধ্যেই রিটার্ন দাখিল করতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হয়েছেন করদাতারা। অনেক সময় বসে গিয়েছে জিএসটি-র পোর্টাল। অভিযোগ উঠেছে, নিয়ম মেনে রিটার্ন দাখিল করতেই নাভিশ্বাস উঠছে ছোট-মাঝারি শিল্পের। ক্ষোভ সামলাতে তা জমার দিনক্ষণ পিছোতে বাধ্য হয়েছে সরকার। সাময়িক ভাবে শিথিল করতে হয়েছে রিটার্ন দেওয়ার কিছু নিয়ম-কানুনও। তবে দীর্ঘ মেয়াদে যে জোড়াতালি দিয়ে এই চাপ সামলানো যাবে না, তা বিলক্ষণ বুঝেছেন নরেন্দ্র মোদী, অরুণ জেটলিরা। তাই এ বার রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থাও আমূল ঢেলে সাজার পথ বাতলাতে মাঠে নামছে ১০ সদস্যের কমিটি। যার মাথায় জিএসটি নেটওয়ার্কের (জিএসটিএন) চেয়ারম্যান অজয় ভূষণ পান্ডে।

Advertisement

জিএসটি পরিষদ এ মাসে গুয়াহাটির বৈঠকেই এই কমিটি তৈরির কথা ঘোষণা করেছিল। রিটার্ন জমার প্রক্রিয়া সকলের জন্য আরও সহজ করার পথ দেখানোই যাদের কাজ। সে জন্য তা দাখিলের পদ্ধতি খতিয়ে দেখবে তারা। প্রয়োজন মনে করলে বদলানোর কথা বলবে আইন-কানুন, ফর্মের বিন্যাস, জমার প্রক্রিয়া, এমনকী রিটার্নের তথ্য নেওয়ার ধরন ও তা সংগ্রহের সময়কালও। পান্ডের দাবি, হতে পারে রিটার্ন ফর্মগুলির চেহারা কিছু নির্দিষ্ট প্রশ্ন-ভিত্তিক হল। ব্যবসায়ীরা শুধু সেগুলির উত্তর দিলেই হবে। কমিটিকে চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দিতে হবে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে।

জিএসটি-নামা

ফর্ম কেন দেওয়া

জিএসটিআর-১: যে সব পণ্য বা পরিষেবা সরবরাহ করা হচ্ছে, তার জন্য। দেখাতে হয় সরবরাহের তথ্য ও তার উপর কর

জিএসটিআর-২: কাঁচামাল হিসেবে যে সব পণ্য বা পরিষেবা নেওয়া হচ্ছে, তার জন্য। দেখাতে হয় সেগুলি পাওয়ার তথ্য ও তার কর। ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট দাবির অঙ্ক থাকে এতে

জিএসটিআর-৩: সম্মিলিত মাসিক রিটার্ন দাখিলের ফর্ম। থাকে নিট কর কত দেওয়া হল, তার পরিমাণ

জিএসটিআর-৩বি: আপাতত প্রাথমিক ভাবে রিটার্নের এককালীন মাসিক সার-সংক্ষেপ

জিএসটিআর-৯: সারা বছরের সম্মিলিত রিটার্ন

নানা কারণে জিএসটিআর-১, ২ ও ৩ করদাতারা সময়ে জমা দিতে না-পারায়, ঝঞ্ঝাট এড়াতে আপাতত প্রাথমিক ভাবে তাঁদের জিএসটিআর-৩বি জমা দিতে বলা হয়েছিল। জিএসটিএনের হিসেব এ দিনই দেখিয়েছে (২০ নভেম্বর পর্যন্ত), ওই রিটার্ন দাখিলের সংখ্যা অক্টোবরে দাঁড়িয়েছে ৪৩.৬৭ লক্ষ। সময়ে মাসিক রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে যা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি। সেপ্টেম্বরে তা ছিল ৩৯.৩৩ লক্ষ, অগস্টে ২৮.৪৬ লক্ষ ও জুলাইয়ে ৩৩.৯৮ লক্ষ। সরকারি সূত্রের দাবি, রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়া আরও সহজ হলে যে অনেক বেশি করদাতা স্বতস্ফূর্ত ভাবে তাতে সাড়া দেবেন, এই হিসেবেই তা স্পষ্ট।

কী করা হবে

• তৈরি হলো ১০ সদস্যের কমিটি

• করদাতা, শিল্প, বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবে তারা

• বিশদে খতিয়ে দেখবে রিটার্ন দাখিলের পুরো ব্যবস্থা

• দেখবে, কত দিন অন্তর রিটার্ন সংক্রান্ত কোন কোন তথ্য সংগ্রহ করা যায়

• চূড়ান্ত সুপারিশ জমা ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে

লক্ষ্য

• রিটার্ন দাখিলের প্রক্রিয়া আরও সহজ ও ঝক্কিহীন করা

• সেই অনুযায়ী আইন, নিয়ম-কানুন, পদ্ধতি ও ফর্মের বিন্যাসে বদল

• জিএসটি-তে নথিভুক্ত কিন্তু করযোগ্য নয়, এমন করদাতাদের জন্য মাত্র কয়েক ধাপে জিএসটিআর-১ এবং জিএসটিআর-৩বি
দাখিলের ব্যবস্থা

অবশ্য শুধু জিএসটিআর-৩বি দেওয়ায় সমস্যাও হয়েছে। কারণ, এতে ব্যবসার বিক্রি ও কেনার বিশদ হিসেব না-থাকায়, ইনভয়েস বা রসিদ মেলানো যাচ্ছে না। যা জিএসটি-র মূল উদ্দেশ্য নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। তাই কমিটির ঘাড়ে রসিদ মেলানোর সহজ প্রক্রিয়া বার করার দায়িত্বও বর্তেছে। যাতে করদাতাদের রিটার্ন দিতে বেগ পেতে না-হয়, আবার গোল না-বাধে কর হিসেব নিয়েও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন