Gujarat

ব্যবসার সুবিধায় গুজরাতের আগে বঙ্গ, তালিকা প্রকাশ কেন্দ্রের

ব্যবসা করার পথ সহজ ও মসৃণ করতে সংস্কারের মাপকাঠিতে ২০১৯ সালের শেষে কোন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কোথায় দাঁড়িয়ে, শনিবার সেই বার্ষিক তালিকা প্রকাশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৩২
Share:

প্রতীকী ছবি।

ব্যবসার পথ সহজ করতে সংস্কারের নিরিখে এক ধাপ উঠে গুজরাতের ঠিক আগে পশ্চিমবঙ্গ। ২০১৯ সালে দেশে তারা ন’নম্বরে। সারা দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অবশ্য এ বারও অন্ধ্রপ্রদেশের দখলে। দ্বিতীয় স্থানে দশ ধাপ উঠে আসা উত্তরপ্রদেশ। আর তৃতীয় তেলঙ্গানা।

Advertisement

ব্যবসা করার পথ সহজ ও মসৃণ করতে সংস্কারের মাপকাঠিতে ২০১৯ সালের শেষে কোন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল কোথায় দাঁড়িয়ে, শনিবার সেই বার্ষিক তালিকা প্রকাশ করলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কেন্দ্রের দাবি, লগ্নি সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার সুবিধা, সমস্ত ছাড়পত্র একসঙ্গে দিতে এক-জানলা বন্দোবস্ত, শ্রম সংস্কার-সহ ১২টি ক্ষেত্রের মোট ১৮০টি বিষয়ের সংস্কারে কোন রাজ্য কতখানি তৎপর, তারই প্রতিফলন রয়েছে এই তালিকায়। শুধু গত তিন বারের সঙ্গে ফারাক হল, এ বার শুধু সংস্কারের চেষ্টার ভিত্তিতে নম্বর মেলেনি। যাঁদের কথা মাথায় রেখে সংস্কার, সেই শিল্পমহলের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, আখেরে সুফল তাঁরা পাচ্ছেন কি না। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেই মূল্যায়নে।

এই নতুন নিয়মে ২০১৮ সালের ১০ নম্বর থেকে এক ধাপ উঠে ৯ নম্বরে পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গ। এই উন্নতির জন্য অন্য রাজ্যগুলির সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের প্রশংসা করেছে কেন্দ্র। প্রথম তিন স্থানাধিকারী ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের আগে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, হিমাচলপ্রদেশ ও রাজস্থান। তেমনই বাংলার পিছনে রয়েছে গুজরাত, মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, কেরলের মতো রাজ্য।

Advertisement

আরও পড়ুন: ১২ দিনের মধ্যে সহজে ঋণ শোধের ব্যবস্থা চান নির্মলা

সব থেকে চমকপ্রদ উত্থান উত্তরপ্রদেশের। ২০১৮ সালে ছিল ১২ নম্বরে। সেখান থেকে এক লাফে চলে এসেছে ২ নম্বরে। চিন থেকে লগ্নিকারীদের টেনে আনার চেষ্টা থেকে শুরু করে বিনিয়োগ টানতে তিন বছরের জন্য নিজেদের শ্রম আইনকে কার্যত শিকেয় তোলার কথা বলে করোনা-কালেও বার বার শিরোনামে উঠে এসেছে যোগী আদিত্যনাথের রাজ্য।

নির্মলার দাবি, রাজ্যগুলির মধ্যে স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতার কারণেই সংস্কারের প্রতি সার্বিক ভাবে ভারতের দায়বদ্ধতার বিষয়ে আস্থা বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের। যে কারণে লকডাউনের মধ্যেও মোটা অঙ্কের বিদেশি লগ্নি এসেছে দেশে। যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, গুগল-সহ বিভিন্ন বহুজাতিকের তরফে যে বিনিয়োগ ঘোষণা হয়েছে, তার বড় অংশই এ দেশের কোনও ব্যবসায় অংশীদারি কিনতে। অর্থাৎ, কল-কারখানা নির্মাণে যে টাকা ঢাললে নতুন কর্মসংস্থান হয়, তেমন লগ্নির দেখা প্রায় নেই।

শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের কথায়, “প্রধানমন্ত্রী বিশ্বাস করেন যে, দেশের আসল শক্তি নিহিত রাজ্যগুলিতে। তাই তিনি পারস্পরিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিশ্বাসী।… রাজ্যগুলির মধ্যে এমন পারস্পরিক সহযোগিতা এবং স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা পাশাপাশি চললে, তবেই ভারত বিশ্বে বিনিয়োগের সব থেকে আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠবে।” কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন উঠেছে, যে প্রধানমন্ত্রী এমন মধুর সম্পর্কের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথা বলেন, তাঁর সরকার এই কঠিন সময়ে জিএসটির ক্ষতিপূরণ রাজ্যগুলিকে মিটিয়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেন কী ভাবে? রাজ্যগুলির হাতে যদি টাকাই না-থাকে, তবে লগ্নিবান্ধব হয়ে উঠতে তারা কিসের জোরে আরও সংস্কারের পথে হাঁটবে, উঠছে সেই প্রশ্নও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন