শুনশান: হিন্দমোটর কারখানা। বকেয়ার অপেক্ষায় কর্মীরা। —ফাইল চিত্র।
অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের বকেয়া গ্র্যাচুইটির টাকা মেটানোর নোটিস দিল হিন্দুস্তান মোটরস কর্তৃপক্ষ। শনিবার কারখানায় ঢোকার প্রধান গেটে ঝোলানো হয় নোটিস। যেখানে বলা হয়, আজ রবিবার সকাল ১০টা থেকে ওই গেটেই সংস্থার নিরাপত্তা বিভাগের কর্মীরা শ্রমিকদের হাতে চেক তুলে দেবেন।
এর আগে শ্রমিকদের বকেয়া পিএফ ও বেতনের টাকা পর্যায়ক্রমে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে সময় গ্র্যাচুইটির টাকার কথা বলেননি কর্তৃপক্ষ। ফলে বেশির ভাগের মনেই প্রশ্ন দানা বাঁধে। বিষয়টি জানিয়ে শ্রমিকদের তরফে চন্দননগরের অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিক সংগঠন লিখিত আবেদন করে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে। লোক আদালতের তরফেও বকেয়া মেটানোর কথা বলা হয়। শেষে সেই গ্র্যাচুইটি দেওয়ার নোটিস ঝোলায় তাই শ্রমিকদের একাংশ খুশি।
সূত্রের খবর, এখন ২৬৮ জনকে বকেয়া গ্র্যাচুইটির চেক দেওয়া হবে। পরে বাকিরাও পর্যায়ক্রমে তা পাবেন। শ্রমিকদের পরিচয়পত্রের নকল নিয়ে কারখানায় আসতে বলা হয়েছে।
তবে বাস্তব ছবিটা হল, অবসরপ্রাপ্তরা বকেয়া পেলেও, যে সব শ্রমিক খাতায়-কলমে এখনও সেখানে কর্মরত তাঁরা ওই টাকা পাননি। এমনকী তাঁদের কথা কর্তৃপক্ষের তরফে কিছু বলাও হয়নি। ফলে ওই অংশ এখন সংশয়ে। সিটু নেতা সোমনাথ মজুমদার বলেন, “আমরা প্রায় ৬০০ শ্রমিক এখনও কর্মরত। অবসরের সময় হয়নি। কিন্তু কিছুই পাচ্ছি না। কারখানা কবে থেকে বন্ধ। এখন দিন গুজরান করাই দায়। আমাদের বিষয়টিও দেখা উচিত।”
২০১৪ সালে কারখানার ঝাঁপ বন্ধ হয়। তার আগে কর্তৃপক্ষ বহু শ্রমিককে আগাম অবসর দেন। কেউ বকেয়ার বিনিময়ে রাজি হন স্বেচ্ছাবসরে। কিন্তু তা দীর্ঘ দিন মেটানো হয়নি। মাঝে কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বকেয়া মেটানোর শর্তে আদালত থেকে জমি বিক্রির অনুমতিও চায়। কিন্তু আবেদন মঞ্জুর হয়নি। কর্তৃপক্ষকে বকেয়া মেটানোর কথা বলে শ্রম দফতরও।
চন্দননগর অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের সংগঠনের পক্ষে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “শ্রমিকেরা এখন বুঝেছেন আদালতে গিয়েও কিন্তু নায্য দাবি আদায় করা যায়। আমরা ডানলপের শ্রমিকদের বকেয়া নিয়ে চেষ্টা করছি।”