নোট বাতিলের পরে ব্যাঙ্ককর্মীদের রাত পর্যন্ত কাজ করতে হয়েছিল। কাজের চাপে, গ্রাহকদের ক্ষোভ সামলাতে গিয়ে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েন। কিন্তু ওই বাড়তি কাজের জন্য ওভারটাইমের পুরো টাকা এখনও হাতে না-আসায় নোট বাতিলের বর্ষপূর্তিতে সেই ব্যাঙ্ককর্মীদেরই ক্ষোভের মুখে পড়ল মোদী সরকার। আর প্রধানমন্ত্রীকে আরও অস্বস্তিতে ফেলে প্রতিবাদে সামিল হল সঙ্ঘ পরিবারের কর্মী সংগঠন বিএমএস-ও।
বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ যুক্তি দিচ্ছেন, পরিষেবার সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই ‘ওভার-টাইম’-এর টাকা মিলবে না। অভিযোগের জবাবে অর্থ মন্ত্রকের ব্যাঙ্ক পরিষেবা দফতরের কোনও কর্তাও মুখ খুলতে চাননি। এই পরিস্থিতিতে সংগঠনের দাবি, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাঙ্কগুলিকে কর্মীদের দাবি মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিক।
বিএমএস-এর ব্যাঙ্ককর্মী সংগঠনের অভিযোগ, এক বছর কেটে গেলেও সব ব্যাঙ্কের সমস্ত কর্মী এখনও ওভারটাইম-এর পুরো টাকা পাননি। বিএমএস নেতাদের অভিযোগ, একে কর্মীরা পরিশ্রমের প্রাপ্য টাকা পাননি। উল্টে তাঁদের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। কারণ নোট বাতিলের পরে বিপুল কাজের চাপে অনেক সময়েই কিছু টাকা খোয়া গিয়েছে। তা কর্মীদেরই পকেট থেকে দিতে হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে জমা নোট রিজার্ভ ব্যাঙ্কে ফেরত পাঠানোর পরে কিছু জাল নোট বেরিয়েছে। জাল নোট চিহ্নিত করার যন্ত্রের অভাবে বা তাড়াহুড়োয় তা আগে ধরা পড়েনি। ফলে সেই টাকাও ব্যাঙ্ককর্মীদের নিজেদের মেটাতে হয়েছে।
বিএমএস-এর সংগঠন ন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব ব্যাঙ্ক ওয়ার্কার্স-এর উপাধ্যক্ষ অশ্বনী রাণার অভিযোগ, ‘‘সরকার নিজের পিঠ চাপড়াচ্ছে। কিন্তু যে-ব্যাঙ্ক কর্মচারীদের জন্য নোট বদল সফল হল, তাঁদের নিয়ে কেউ মুখ খুলছে না। অথচ এই কর্মীরাই নোট বাতিলের পরের ৫০ দিন যাবতীয় সমস্যা সামলে কাজ করেছিলেন। অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়েছিলেন।’’
রাণার অভিযোগ, ২১টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মধ্যে ব্যাঙ্ক অব বরোদা, ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া, কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক অব মহারাষ্ট্রের মতো হাতে গোনা কয়েকটি ব্যাঙ্কই কর্মীদের প্রাপ্য মিটিয়ে দিয়েছে। বেশ কয়েকটি রাজ্যে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কও তা ইতিমধ্যে মিটিয়ে দিয়েছে।