আর্থিক গোঁড়ামির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ময়দান থেকে সরে দাঁড়াল আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার (আইএমএফ)।
গত বছর বৈঠক শেষে রক্ষণশীলতা নিয়ে বিরোধিতার অঙ্গীকার করে আইএমএফ। কিন্তু এ বছরের বৈঠক শেষে সদস্য দেশগুলির যৌথ বিবৃতিতে তা বাদ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ আমেরিকার ট্রাম্প প্রশাসনের চাপেই এই সিদ্ধান্ত। তবে আইএমএফের শীর্ষ স্তরের অফিসাররা তা অস্বীকার করেছেন। তাঁদের দাবি, ‘‘ইতিবাচক নীতি নিতে ও উন্নয়নে ভারসাম্য বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত।’’ একই সঙ্গে আইএমএফ জানিয়েছে, তারা একে অপরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে মুদ্রার দাম কমানোকে হাতিয়ার করবে না। বিনিময় হারকে বাণিজ্য বৃদ্ধি ইত্যাদি স্বার্থে কাজে লাগানো হবে না।
জেটলির সওয়াল: আইএমএফের মঞ্চে পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) পক্ষে সওয়াল করলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। পাশাপাশি, আইএমএফে ভারতের মতো উন্নয়নশীল দুনিয়ার প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর বিষয়টি ঢিমেতালে এগোনো নিয়ে হতাশা জানান তিনি।
আইএমএফের ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি অ্যান্ড ফিনান্সিয়াল কমিটি-র বৈঠকে জেটলি বলেন, এখনই ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি। জিএসটি চালু হলে তা বৃদ্ধিকে আরও উপরে তুলবে। এই সঙ্গেই ৫০০ ও ১,০০০ টাকার নোট বাতিলের জেরে কর ফাঁকি কমবে, জাল টাকা বাজারে আসার আশঙ্কাও কমবে বলে দাবি করেন জেটলি।
জিএসটি প্রসঙ্গে জেটলি বলেন, ‘‘এর জেরে গোটা কর ব্যবস্থার দক্ষতা বাড়বে। সহজে ব্যবসার সুযোগও তৈরি হবে।’’ মোদী সরকারের আর্থিক সংস্কারে জোর দেওয়ার প্রসঙ্গও তিনি টেনে আনেন। প্রসঙ্গত, ২০১৫-’১৬ সালে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি ছিল ৭.৯%। ২০১৬-’১৭ সালের আগাম হিসেব অনুযায়ী তা ৭.১%।
অন্য দিকে, আইএমএফে উন্নয়নশীল দেশগুলির ভোট দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে গাফিলতির অভিযোগ আনেন জেটলি। তিনি বলেন, ‘‘দেরি হলে আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক সংস্থার বিশ্বাসযোগ্যতা ধাক্কা খাবে।’’ উল্লেখ্য, কোটা সংস্কারের ১৫তম দফা শেষ করতে আইএমএফ সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে ২০১৯। আর, সেটা নিয়েই ক্ষোভ জেটলির। তিনি বলেছেন, বিষয়টি আরও বেশি দিন গড়ালে সংশ্লিষ্ট চুক্তিটিই অর্থহীন হয়ে পড়বে।