আয় লুকোনো হচ্ছে কি না, সে দিকে এ বার আরও কড়া নজর রাখবে কেন্দ্র। সেই লক্ষ্যেই ব্যাঙ্কগুলিকে এখন থেকে বাড়তি তথ্য দাখিল করতে নির্দেশ দিল আয়কর দফতর।
কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদ (সিবিডিটি) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছে, কোন কোন লেনদেনের তথ্য তাদের কাছে জমা দিতে হবে। মূলত তাদের নজরে রয়েছে বছরে বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে নগদে মোট ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি জমা এবং সেই সঙ্গে ক্রেডিট কার্ড বিল বাবদ নগদে ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মেটানো। এ ধরনের তথ্য সিবিডিটি-কে জানানোর জন্য ব্যাঙ্কগুলিকে একটি বৈদ্যুতিন ব্যবস্থাও গড়ে তুলতে বলেছে তারা।
গত ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ৫০০ ও ১,০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেই সিবিডিটি ব্যাঙ্কগুলিকে এক নির্দেশে বলেছিল, ৯ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোনও ব্যক্তির এক বা একাধিক অ্যাকাউন্টে ২.৫ লক্ষ বা তার বেশি টাকা জমা পড়লেই (কারেন্ট অ্যাকাউন্ট বাদে) তা জানাতে হবে তাদের। শুধু কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ধরলে ওই অঙ্ক ১২.৫০ লক্ষ টাকা। উল্লেখ্য, নোট বাতিলের পরে ওই পঞ্চাশ দিনেই পুরনো টাকা সাধারণ মানুষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা দিয়েছেন।
আয়কর দফতরের নির্দেশের তালিকায় ১ লক্ষ টাকা বা তার বেশি অঙ্কের ক্রেডিট কার্ড বিল নগদে মেটানো ছাড়াও রয়েছে অর্থবর্ষে এই খাতে যে কোনও মাধ্যমে মোট অন্তত ১০ লক্ষ টাকা মেটানো। নগদ ছাড়াও যা মেটানো হতে পারে চেক বা অনলাইনে। এ ধরনের অঙ্ক জমা পড়লে ব্যাঙ্ককে তার খতিয়ান দিতে হবে সিবিডিটি-কে।
পাশাপাশি, কেউ ১০ লক্ষ টাকা বা তার বেশি মূল্যের বন্ড বা ডিবেঞ্চার একটি অর্থবর্ষে কিনলে তার তথ্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে পাঠাতে হবে আয়কর দফতরে। একই নিয়ম খাটবে শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনার জন্য। খোলা বাজার ছাড়া কোনও ব্যক্তির থেকে নথিভুক্ত সংস্থার ১০ লক্ষ টাকা বা তার চেয়ে বেশি টাকার শেয়ার একটি অর্থবর্ষে কিনলে ওই সংস্থাকে তা কর দফতরে জানাতে হবে।
পাশাপাশি, ট্রাভেলার্স চেক ও ফরেক্স কার্ড সমেত ১০ লক্ষ টাকার বেশি বিদেশি মুদ্রা কিনলে, তার তথ্যও জমা দিতে হবে আয়কর দফতরের কাছে।
অর্থবর্ষে কোনও ব্যক্তি এক বা একাধিক স্থায়ী আমানত খাতে ১০ লাখ বা তার বেশি খরচ করলে সেটিও থাকবে সিবিডিটি-র নজরে। তবে আগে করা স্থায়ী আমানত নবীকরণের ক্ষেত্রে এই নির্দেশ খাটবে না। এমনকী, ব্যাঙ্ক ড্রাফ্ট, পে-অর্ডার বা ব্যাঙ্কার্স চেক কিনতে আর্থিক বছরে নগদে ১০ লাখ বা তার বেশি খরচ করলেই সেই তথ্য জানাতে হবে আয়কর দফতরে। একই মূল্যের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বন্ড ইত্যাদি কেনার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম বহাল থাকবে।