চলতি বছরেও আর্থিক বৃদ্ধিতে বিশ্বের বহু দেশকেই পিছনে ফেলবে ভারত। কারণ, এ দেশের অর্থনীতির চাকা গড়াবে দ্রুতগতিতে। রয়টার্সের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় এই ইঙ্গিতই মিলেছে বলে বৃহস্পতিবার জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, এ দিনই আমেরিকায় এক সভায় ভারতের অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি দাবি করেন, সদ্য শেষ হওয়া ২০১৫-’১৬ সালে বৃদ্ধি প্রত্যাশা মতো ৭.৬ শতাংশই হবে। তবে স্বাভাবিকের চেয়ে বাড়তি বৃষ্টির পূর্বাভাস বাস্তবে মিলে গেলে আরও বেশি গতিতে এগোবে ভারত।
৪০ জনেরও বেশি অর্থনীতিবিদের মধ্যে গত ৬ থেকে ১৩ এপ্রিলের মধ্যে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের করা এক সমীক্ষায় এই সম্ভাবনার কথাই উঠে এসেছে। এর অনেকটাই অবশ্য মূল্যবৃদ্ধির হারের উপর নির্ভর করবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। এবং একই সঙ্গে দিয়েছেন মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস। তাঁদের মতে, চলতি ২০১৬-’১৭ আর্থিক বছরে গড়ে তা ৫.৩% ছুঁতে পারে। জানুয়ারির সমীক্ষাতেও একই ইঙ্গিত দেওয়া হয়।
তবে অর্থনীতিবিদেরা মনে করছেন, ৫ শতাংশের বেশি মূল্যবৃদ্ধির জেরে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক খুব তাড়াতাড়ি আর সুদ কমানোর পথে হাঁটবে না। অন্তত আরও ছ’মাস তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তাঁদের মতে ২০১৬ সালের শেষ তিন মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক রেপো রেট (যে-হারে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি স্বল্প মেয়াদে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণ নেয়) ৬.২৫ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারে। উল্লেখ্য, গত ৫ এপ্রিলের ঋণনীতিতেই এই হার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৬.৫০ শতাংশে নামিয়ে এনেছে ভারতের শীর্ষ ব্যাঙ্ক। গত ২০১১ সালের পর থেকে যে হার সবচেয়ে কম। আর, ২০১৫-র জানুয়ারির সর্বোচ্চ রেপো রেট ৮ শতাংশের তুলনায় তা ১৫০ বেসিস পয়েন্ট কম। সমীক্ষার উত্তরদাতাদের মতে, চলতি বছরে আরবিআইয়ের সুদ কমার সম্ভাবনা ৭০% হলেও শীর্ষ ব্যাঙ্ক এর জন্য তাড়াহুড়ো করবে না। কারণ, শিল্পোৎপাদন এখন মোটামুটি ছন্দে ফিরেছে, অথচ মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাশা মাফিক কমেনি। কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার অবশ্য পরিকাঠামোয় লগ্নি টেনে শিল্পে প্রাণ ফেরাতে সুদ আরও বেশি হারে ছাঁটাইয়ের জন্য বারবারই সওয়াল করছে।
তবে বার্কলেজ-এর অর্থনীতিবিদ রাহুল বাজোরিয়া এবং সিদ্ধার্থ সান্যাল বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধি যে রকম ঢিমে তালে কমছে এবং সুদ ছাঁটাই সত্ত্বেও শিল্পের চাকা যে ভাবে ধীরগতিতে এগোচ্ছে, তাতে আরবিআই সব দিক দেখেশুনে মানিয়ে চলার পথেই হাঁটবে। কারণ, রাজকোষ ঘাটতিকেও লাগামছাড়া ভাবে বাড়ানোর পক্ষপাতী নয় ভারত সরকার।’’