Unemployment

চড়া দামের বাজারে চিন্তা এখনও বেকারত্বের হার

সিএমআইই জানিয়েছে, গত মাসে সারা দেশে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৭.৪৫%, যা জানুয়ারিতে ৭.১৪% ছিল। শহরে সেই হার ৮.৫৫% থেকে ৭.৯৩ শতাংশে নামলেও, গ্রামের দিকে ৬.৪৮% থেকে এক লাফে পৌঁছে গিয়েছে ৭.২৩ শতাংশে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২৩ ০৭:৩৬
Share:

ফেব্রুয়ারিতে দেশে ফের মাথা তুলেছে বেকারত্ব। প্রতীকী ছবি।

গত দু’টি ত্রৈমাসিক ধরে আর্থিক বৃদ্ধি শ্লথ হচ্ছে। জানুয়ারিতে কার্যত অপ্রত্যাশিত ভাবেই ফের বেড়ে গিয়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার। এর মধ্যে আরও একটি উদ্বেগের খবর দিল বেসরকারি উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই। তারা জানাল, ফেব্রুয়ারিতে দেশে ফের মাথা তুলেছে বেকারত্ব।

Advertisement

সিএমআইই জানিয়েছে, গত মাসে সারা দেশে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৭.৪৫%, যা জানুয়ারিতে ৭.১৪% ছিল। শহরে সেই হার ৮.৫৫% থেকে ৭.৯৩ শতাংশে নামলেও, গ্রামের দিকে ৬.৪৮% থেকে এক লাফে পৌঁছে গিয়েছে ৭.২৩ শতাংশে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, গ্রামে বেকারত্বের মাথাচাড়া দেওয়া উদ্বেগজনক তো বটেই, শহরেও তা স্বস্তিদায়ক জায়গায় নেই। কিছুটা কমেও তা গ্রামের চেয়ে বেশি। সম্প্রতি কেন্দ্রের পরিসংখ্যানেও জানানো হয়েছে, গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে ভারতের শহরাঞ্চলে ১৫ বছর এবং তার বেশি বয়সিদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৭.২% ছিল। যাতে তখনই প্রমাণ হয়েছিল কর্মসংস্থানের ছবি এখনও কত মলিন।

এই প্রসঙ্গে অনেকে আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, কোভিডের আগেও চড়া কর্মহীনতা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে ওঠে। জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে দেশে বেকারত্ব ছিল ৬.১%। যা সেই সময়েই সাড়ে চার দশকের সর্বোচ্চ। করোনায় তা আরও বাড়ে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, মোদী সরকার দাবি করছে আর্থিক কর্মকাণ্ড পুরো দমে চালু হয়ে গিয়েছে। অর্থনীতিও করোনার আগের অবস্থায় পৌঁছেছে। তৈরি হচ্ছে নতুন কাজ। কিন্তু তাদের দাবির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজের বাজার যে পুরনো অবস্থায় ফেরেনি তা স্পষ্ট প্রায় সমস্ত সমীক্ষাতেই।

Advertisement

বিশেষজ্ঞ মহলের ব্যাখ্যা, মূল্যবৃদ্ধির কামড়ে শিল্পমহলের মুনাফা যে ধাক্কা খাচ্ছে তা পরিষ্কার হয়েছে সংস্থাগুলির গত ত্রৈমাসিকের ফলাফলে। বিভিন্ন সমীক্ষাতেও দেখা গিয়েছে, নতুন কাজ দেওয়ার ব্যাপারে আপাতত হাত গুটিয়ে রয়েছে তারা। বৃহস্পতিবার গ্লোবাল অ্যালায়্যান্স ফর মাস অন্ত্রপ্রনরশিপের একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা ভি অনন্ত নাগেশ্বরন। সেখানে বলা হয়েছে, কাজের বরাতের টাকা দেরিতে পাচ্ছে ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি সংস্থাগুলি। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার মাধ্যমে ঋণ পেতেও সমস্যা হয় তাদের। সে কারণেও নতুন কাজ তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে।

সম্প্রতি রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি কমিটির সদস্য জয়ন্ত আর বর্মা মন্তব্য করেছেন, ভারতে বৃদ্ধির যে হার দেখা যাচ্ছে, তা ‘খুব নড়বড়ে’। এমনকি, যত মানুষ কাজের বাজারে পা রাখছেন তাঁদের চাহিদা মেটানোর ক্ষমতা এই অর্থনীতির আছে কি না সন্দেহ। একাংশের ব্যাখ্যা, মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে টানা সুদ বৃদ্ধির জেরে অর্থনীতির গতি বাড়ানোর প্রক্রিয়া ধাক্কা খেয়েছে। বেকারত্ব বৃদ্ধি তারই প্রমাণ। অন্য একটি অংশের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধির জেরে গ্রামের দিকে পণ্যের চাহিদা কমেছে। যা শ্লথ করেছে গ্রামীণ অর্থনীতি এবং তার কাজের বাজারকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন