সংস্কারের প্রথম ধাপই জিএসটি

প্রথম লক্ষ্য জিএসটি-ই। কর ব্যবস্থার আমূল সংস্কার। ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আদল ঢেলে সাজা। আর পরিকাঠামো ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন থমকে থাকা প্রকল্পের চাকায় গতি। দেশের অর্থনীতির পালে হাওয়া টানতে এই তিন নিশানাতেই তির ছুড়তে চান অরুণ জেটলি।

Advertisement

নয়াদিল্লি

সংবাদ সংস্থা  শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৪
Share:

প্রথম লক্ষ্য জিএসটি-ই। কর ব্যবস্থার আমূল সংস্কার। ব্যাঙ্কিং পরিষেবার আদল ঢেলে সাজা। আর পরিকাঠামো ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন থমকে থাকা প্রকল্পের চাকায় গতি। দেশের অর্থনীতির পালে হাওয়া টানতে এই তিন নিশানাতেই তির ছুড়তে চান অরুণ জেটলি। কিন্তু তার মধ্যে গুরুত্বের তালিকায় একেবারে উপরে সেই পণ্য-পরিষেবা করকেই (জিএসটি) রাখছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। আর সেই কারণে সময়ে জিএসটি চালু করাকে এই মুহূর্তে পাখির চোখ করছেন তিনি।

Advertisement

আগামী ১ এপ্রিল থেকে জিএসটি চালু করতে চায় কেন্দ্র। বুধবারের আলোচনাসভায় সরাসরি সেই তারিখের উল্লেখ না-করেও জেটলি বলেন, ‘‘লক্ষ্য খুব কঠিন। প্রায় সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দৌড়ের সামিল। কিন্তু তবু এর জন্য যথাসম্ভব চেষ্টা করছি।’’ তিনি জানান, যত দ্রুত সম্ভব এই নতুন কর চালুকেই এখন সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি।

অর্থমন্ত্রীর আশা, জিএসটি-র হাত ধরে দেশে অভিন্ন বাজার তৈরি হলে, তা বৃদ্ধির ইঞ্জিনে জ্বালানি জোগাবে। এখনকার তুলনায় অনেক বেশি রাজস্ব যাবে রাজ্যগুলির ভাঁড়ারেও। এমনকী আগামী দিনে এর হাত ধরে করের হার ধীরে ধীরে কমতে থাকবে বলেও মনে করেন তিনি।

Advertisement

উল্লেখ্য, এই সমস্ত সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখেই সময়ে জিএসটি চালু করতে তড়িঘড়ি পা ফেলছে কেন্দ্র। সংসদের দুই কক্ষে ওই করের জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হওয়ার পরে তড়িঘড়ি তা পাশ করানো হয়েছে ১৬টি বিধানসভায়। এখন অপেক্ষা রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের। তা আসার পরে তবেই জিএসটি কাউন্সিল গড়ার প্রশ্ন। পণ্য-পরিষেবা করের হার তাদেরই ঠিক করার কথা।

অর্থমন্ত্রী মনে করেন, জিএসটি চালু হলে কর ফাঁকি কমবে। তার হাত ধরে আগামী দিনে কমবে ওই করের হারও। যদিও সেই হার কত হবে, তা ঠিক হয়নি এখনও। অর্থ মন্ত্রকের মুখ্য উপদেষ্টা সুব্রহ্মণ্যন স্বামীর নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, সব পণ্য ও পরিষেবায় একটি হারে কর বসিয়ে যদি এখনকার রাজস্বই সংগ্রহ করতে হয়, তা হলে তা (রেভিনিউ নিউট্রাল রেট) হওয়া উচিত ১৫ থেকে ১৫.৫ শতাংশ। কমিটির পরামর্শ, বেশির ভাগ পণ্য-পরিষেবায় কর চাপুক ১৭%-১৮%। অত্যাবশ্যক পণ্যে ১২%। দামি গাড়ির মতো বিলাস সামগ্রী এবং পানমশলা, ঠান্ডা পানীয়, তামাকের মতো ক্ষতিকর পণ্যে ৪০%। সম্প্রতি বণিকসভা সিআইআইয়ের দাবি ছিল, সিংহভাগ পণ্যের উপর ১৮% হারেই কর বসুক। তাতে কেন্দ্র ও রাজ্যের রাজস্ব একই থাকবে। আবার নিজেদের রাজস্বের কথা মাথায় রেখে অনেক রাজ্যই চায় জিএসটি-র হার বাঁধা হোক ১৮ শতাংশের উপরে। শেষমেশ যে হারই জিএসটি কাউন্সিল ঠিক করুক, দীর্ঘ মেয়াদে তা কিছুটা কমবে বলে অর্থমন্ত্রীর অভিমত।

পরিকাঠামোয় থমকে থাকা প্রকল্পের জট ছাড়ানোর উপরেও জোর দিয়েছেন জেটলি। তাঁর দাবি, ওই সমস্ত প্রকল্পের চাকা গড়ালে তবেই আর্থিক বৃদ্ধির গাড়ির গতি বাড়বে। সমাজ উন্নয়নের নানা প্রকল্পের সঙ্গে যার সঠিক মিশেলকে আগামী বার মসনদে ফেরার ভোটে পুঁজি করতে চান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন