তবে কি শেষের শুরু? এই প্রশ্ন আর আশঙ্কা উস্কে দিয়েই বৃহস্পতিবার কলকাতার আকাশে ডানা মেলল না জেট এয়ারওয়েজের কোনও বিমান। চালু হওয়ার পর থেকে গত ২৫ বছরে এ শহরের উড়ানসূচিতে সব সময় জ্বলজ্বল করেছে ‘9W’— জেটের উড়ান কোড। এ দিন তার দেখা মিলল না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, নতুন নির্দেশ না আসা পর্যন্ত কলকাতা সমেত পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত আপাতত থাকবে জেটের উড়ান মানচিত্রের বাইরে।
সমস্যার জল যে বিপদসীমা ছাড়াচ্ছে, তা স্পষ্ট জেটের অন্যান্য পদক্ষেপেও। সংস্থা সূত্রে খবর, এ দিনই নিজেদের সমস্ত আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল করতে হয়েছে তাদের। লিজের টাকা না মেটানোয় তাদের আরও ১০টি বিমান বসিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও কবুল করেছে জেট। শোনা যাচ্ছে, এর ফলে এই মুহূর্তে তাদের হাতে থাকা বিমানের সংখ্যা ১৪। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক উড়ান পরিষেবা চালানোর জন্য এ দেশে বিমান পরিবহণ সংস্থার হাতে অন্তত ২০টি বিমান থাকা জরুরি। ফলে, আগামী দিনে জেট ওই পরিষেবা আদৌ দিতে পারবে কি না, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। বিমান পরিবহণ সচিব প্রদীপ সিংহ খারোলা সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছেন, এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ-র রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা। পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে এ দিন মুম্বইয়ে বৈঠকে বসে জেটের পর্ষদ।
সংস্থাটির অংশীদারি হাতে নিতে কারা আগ্রহ দেখায়, তা বোঝা যাবে শুক্রবারই। তবে অন্যতম অংশীদার এতিহাদ এ দিন প্রাথমিক আগ্রহপত্র জমা দিয়েছে। এই মুহূর্তে সংস্থার সিংহভাগ মালিকানা স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ ঋণদাতাদের গোষ্ঠীর হাতে। একটি সূত্রে খবর, জেটের প্রতিষ্ঠাতা নরেশ গয়াল নিজের হাতে থাকা প্রায় ২৬% শেয়ার পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের কাছে বন্ধক রেখেছেন। তার পরিবর্তে নাকি মোটা টাকা ঋণ নিতে পারেন। জল্পনা, জেটে নতুন করে টাকা ঢালার প্রস্তুতি নিতেই কি এই পথে হেঁটেছেন গয়াল?
গত বছরের শেষেও যেখানে ১১৯টি বিমান নিয়ে দেশ-বিদেশের আকাশ দখলের যুদ্ধ করেছে জেট, সেখানে এখন প্রশ্ন উঠছে বিদেশে তার উড়ান চালু থাকা নিয়েই। সংস্থা এবং তার প্রতিষ্ঠাতার ভবিতব্যের কিছুটা আঁচ শুক্রবারই পাওয়া যাবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্ট মহলের।