Jet Airways

আকাশে ফেরার পথে জেটের উড়ান

জেট ছিল পূর্ণ পরিষেবার উড়ান সংস্থা। বিজ়নেস শ্রেণির আসন ছিল। যাত্রীদের নিখরচায় খাবার দেওয়া হতো।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২০ ০৩:০১
Share:

ফাইল চিত্র।

করোনাকালে চারপাশে যখন শুধুই খারাপ খবর, তখন বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে ভালর বার্তা বয়ে আনল জেট এয়ারওয়েজ়। ২০১৯ সালের এপ্রিলে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল নরেশ গয়ালের হাতে থাকা বিমান সংস্থাটি। তার পরে একরাশ অনিশ্চয়তা ছাড়া কিছুই তেমন ছিল না। অতিমারি হানার পরে তো আরও। কিন্তু সূত্রের খবর, সব টানাপড়েন কাটিয়ে অবশেষে আগামী মার্চ নাগাদ নতুন মালিকের হাত ধরে ভারতের আকাশে ফিরতে পারে জেট।

Advertisement

জেট সূত্র জানাচ্ছে, লন্ডনের সংস্থা কালরক ক্যাপিটাল সংস্থাটিকে কিনে নেবে বলে শোনা গিয়েছে। দেউলিয়া বিধি আদালতে (ন্যাশনাল কোম্পানি ল’ ট্রাইবুনাল বা এনসিএলটি) বৃহস্পতিবারেই এই তথ্য পেশ করা হয়েছে। বিমান মন্ত্রক সূত্রের খবর, জেটের ঘাড়ে যে ৮০০০ কোটি টাকার দেনা রয়েছে, কালরক এবং তার সঙ্গী, দুবাইয়ের ব্যবসায়ী মুরারিলাল জালান, সেই ধার শোধ করে নতুন করে উড়ান চালাতে রাজি হয়েছে। সব ঠিকঠাক চললে আবার জেটের বিমানে চড়তে আর হয়তো মাস ছয়েকের অপেক্ষা।

জেট ছিল পূর্ণ পরিষেবার উড়ান সংস্থা। বিজ়নেস শ্রেণির আসন ছিল। যাত্রীদের নিখরচায় খাবার দেওয়া হতো। প্রশ্ন উঠেছে, আবার আকাশে ডানা মেলতে গিয়ে তাদের উড়ান কি আগের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রেখে পূর্ণ পরিষেবা নিয়ে ফিরবে, নাকি ইন্ডিগোর মতো সস্তার উড়ানই হবে পরিষেবার নতুন কৌশল। এমনটা মনে করার পেছনে দু’টি কারণ আছে, বলছেন বিমান শিল্পের বিশেষজ্ঞেরা।

Advertisement

এক, জেট নিজেই এক সময়ে সহারা উড়ান সংস্থার বিমান কিনে জেটলাইট নামে কম খরচের উড়ান চালাতে শুরু করেছিল। ফলে এই পরিষেবার খুঁটিনাটি জানে তারা। দুই, ভারতের বাজার এখন মূলত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে কম খরচের উড়ান সংস্থাগুলিই। যে বাজারের সিংহভাগ অংশীদারি ইন্ডিগোর। তার উপরে প্রতিযোগিতার বাজারে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জেরে ইতিমধ্যেই সস্তা ও পূর্ণ পরিষেবা উড়ানের ভাড়া কাছাকাছি চলে এসেছে।

জীবনের পরবর্তী পর্বে জেট নতুন সংস্থা এনে আন্তর্জাতিক উড়ান চালাবে কি না, সেই প্রশ্নও উঠছে। কারণ, ১৬টি ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীর হাতে থাকা সংস্থাটির অন্যতম সম্পত্তি হিসেবে কালরকের ঝুলিতে ঢুকতে চলেছে তাদের ছ’টি বোয়িং ৭৭৭ বিমান। যেগুলি মূলত দূরপাল্লার। দেশের মধ্যে ছোট ছোট রুটে চালালে লোকসান হবে। দূরপাল্লার উড়ানে বিজ়নেস শ্রেণি থাকবে কি না, সংশ্লিষ্ট মহলে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়েও।

বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে জেটের বহু কর্মী ইতিমধ্যেই অন্য সংস্থায় যোগ দিয়েছেন। আবার এমন বহু কর্মী ও কর্তা রয়েছেন, যাঁরা এখনও জেটের পুনরুজ্জীবনের আশায় বসে। ওই ছ’টি বোয়িং বিমানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সবেতন রেখে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ারকেও। বেতন ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীই দিচ্ছে।

বিমান মন্ত্রকের সূত্র জানিয়েছে, জেটের কাছে উড়ান সংস্থার বৈধ লাইসেন্স রয়েছে। তবে দেশের অভ্যন্তরে পরিষেবা দিতে গেলে নতুন করে কিছু বিমান ভাড়া নিতে হবে। সে জন্য বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমতি প্রয়োজন। সে সব পেতে পেতে সামনের বছর মার্চ গড়িয়ে যেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন