প্রথম দফাতেই হোঁচট জিএসটি রিটার্ন ও কর জমায়।
প্রথম মাসের (জুলাই) রিটার্ন ও কর জমার শেষ দিন ২০ অগস্টের মুখে চাপ নিতে না-পারায় শনিবার বসে গেল জিএসটি সার্ভার। জিএসটি নেটওয়ার্ক (জিএসটিএন) এই ‘কারিগরি সমস্যার’ কথা টুইটারে স্বীকার করে। তড়িঘড়ি রিটার্ন ও কর জমার শেষ তারিখ বাড়িয়ে ২৫ অগস্ট করার কথাও ঘোষণা করে অর্থ মন্ত্রক। যাঁরা পুরনো কর ফেরত দাবি করতে ট্রান্স-১ ফর্ম জমা দেবেন, তাঁদের জন্য সময়সীমা ২৮ অগস্ট। তবে এই পরিপ্রেক্ষিতে প্রশ্ন উঠেছে, ভবিষ্যতে করদাতার ভিড় আরও বাড়লে, সেই চাপ নিতে কর কাঠামো তৈরি কি না।
শনিবার দেশ জুড়ে করদাতাদের বড় অংশের অভিযোগ, দিনভর কর ও জিএসটিআর-৩বি ফর্মে রিটার্ন, কোনওটাই জমা দেওয়া যায়নি। ওয়েবসাইট খোলা যায়নি বলে আঙুল তোলেন শিল্প-কর্তা ও কর উপদেষ্টারাও। অনেকেই বলছেন, শুধু শনিবারে নয়, সমস্যা ছিল শুক্রবারও। তবে রবিবার ছুটির দিন হওয়ায় শনিবার জমার ভিড় ছিল বেশি।
এ দিন দিল্লিতে জিএসটিএন চেয়ারম্যান নবীন কুমারের দাবি, ‘‘বেশি সংখ্যক করদাতা হুড়োহুড়ি করে নেটে কর ও রিটার্ন জমা দিতে যাওয়ায় ‘সামান্য’ সমস্যা হয়েছিল। তবে সন্ধ্যায় তা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।’’ কলকাতায় জিএসটির চিফ কমিশনার বিজয়কুমার বলেন, ‘‘সমস্যা হয়েছে জিএসটিএন সার্ভারে। তাই দেশ জুড়ে ব্যবসায়ীরা মুশকিলে পড়েছেন। রাজ্য থেকে এর সমাধান করা যাবে না। কেন্দ্র নিশ্চয়ই ব্যবস্থা নেবে।’’ জিএসটি পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্তাদেরও দাবি, শনিবার এক সঙ্গে বহু করদাতা সার্ভারে ঢোকার চেষ্টা করাতেই এই বিপত্তি। কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্সের সেক্রেটারি জেনারেল প্রবীণ খন্ডেলওয়ালের অভিযোগ, কর জমার পদ্ধতি না-জানার কারণ দেখিয়ে বেশ কিছু ব্যাঙ্কও তা নিতে অস্বীকার করে।
• কর ও রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে ২৫ অগস্ট পর্যন্ত
• সিদ্ধান্ত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় কর্তাদের নিয়ে গড়া রূপায়ণ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে
• জম্মু-কাশ্মীর ও বন্যার কবলে পড়া বিভিন্ন রাজ্য আগেই জমার মেয়াদ বাড়ানোর দাবি তুলেছিল
বণিকসভা মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের কো-চেয়ারম্যান (পরোক্ষ কর কমিটি) সঞ্জীব কোঠারি বলেন, ‘‘জিএসটিতে কর দেওয়ার জন্য লগ-ইন করতে না-হলেও, রিটার্ন ফর্ম পূরণ ও দাখিলের জন্য তা করতেই হবে। শুক্রবার এই ব্যবস্থা মোটামুটি সচল ছিল। কিন্তু শনিবার সকাল থেকেই ওয়েবসাইট বন্ধ থাকায় কাজ হয়নি।’’ তিনি ও ফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোশিয়েসন্সের চেয়ারম্যান মহেশ সিংহানিয়ার অভিযোগ, ‘‘হেল্প-ডেস্কে ফোন করলেও কেউ তা তোলেননি। ই-মেল-এরও জবাব মেলেনি।’’
ওয়েবসাইট বন্ধ থাকার অভিযোগ তুলেছেন পরিষেবা, নির্মাণ, ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রের বিভিন্ন সংস্থার কর-উপদেষ্টা সুরেশ ভুত্রাও। তিনি বলেন, ‘‘আজ সকাল ১১-৩০ থেকে সমস্যা চলছে। কারওর রিটার্ন জমা দিতে পারিনি।’’ তাঁর ও কোঠারির প্রশ্ন, ৩বি ফর্ম অনেক সরল। তাতেই যদি এ ভাবে হোঁচট খেতে হয়, তা হলে পরে যখন বিস্তারিত তিনটি ফর্মে বিপুল তথ্য জমা দিতে হবে, তখন সাইট ঠিক মতো কাজ করবে তো?
কংগ্রেস নেতা মণীশ তিওয়ারির দাবি, ‘‘জিএসটিএন-কে স্পষ্ট করতে হবে কী ভাবে সারা দেশে চারটি হার, তিন দফার কর আদায় ও ৪০টি পর্যায়ে তা রূপায়ণের ব্যবস্থা কাজ করবে।’’