প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি শুরু চর্ম-তালুকের

বহু টানাপড়েনের পরে নভেম্বরে বানতলায় ওই চর্ম-তালুক তৈরির জন্য অর্থ দেওয়ার প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি দেয় কেন্দ্র। ইন্ডিয়ান লেদার ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম থেকে সম্ভাব্য বরাদ্দ ১২৫ কোটি টাকা।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০২:৫১
Share:

চর্ম শিল্পে কেন্দ্রের অনুদান ও ভিন্‌ রাজ্যের প্রতিশ্রুত লগ্নি ধরে রাখতে তৎপর হল পশ্চিমবঙ্গ। বানতলায় চর্ম শিল্প-তালুক (মেগা ক্লাস্টার) গড়তে অবশেষে তৈরি হচ্ছে তার বিস্তারিত রিপোর্ট। এ নিয়ে দরপত্র চেয়েছিল রাজ্য। তাতে সাড়া দিয়ে আগ্রহপত্র জমা দিয়েছে উপদেষ্টা সংস্থা গ্রান্ট থর্নটন। সংস্থা সূত্রে খবর, ওই রিপোর্ট তৈরির সম্ভাব্য খরচ সাড়ে ৭ কোটি টাকা। তা তৈরির পাশাপাশি প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রের যাবতীয় সায় আদায়ও নিশ্চিত করবে উপদেষ্টা সংস্থাটি।

Advertisement

বহু টানাপড়েনের পরে নভেম্বরে বানতলায় ওই চর্ম-তালুক তৈরির জন্য অর্থ দেওয়ার প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি দেয় কেন্দ্র। ইন্ডিয়ান লেদার ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম থেকে সম্ভাব্য বরাদ্দ ১২৫ কোটি টাকা। শর্ত হল, যারা তালুক তৈরির দায়িত্বে, জমির মালিকানাও থাকতে হবে তাদের হাতে।

অথচ জট পেকেছিল জমির মালিকানা নিয়েই। বানতলায় এই প্রকল্প তৈরির দায়িত্ব নিয়েছে রাজ্য। কিন্তু জমির মালিক এম এল ডালমিয়া গোষ্ঠী। এই জটে কেন্দ্রের অনুদান প্রায় প্রায় হাতছাড়া হতে বসেছিল। এর পরেই রাজ্য এম এল ডালমিয়ার সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরু করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, রাজ্যের তরফে বার্তা দেওয়া হয় যে, জমির মালিকানা নিয়ে সমস্যা হলে, রাজ্য চর্মনগরীর চুক্তি খতিয়ে দেখবে। এবং সে ক্ষেত্রে সংস্থাটি যে সমস্ত শর্ত পূরণ করেনি, তা-ও তুলে ধরা হবে। বিপাকে পড়বে সংস্থাই। শিল্প সচিব রাজীব সিন্হা অবশ্য আগেই আশ্বাস দিয়েছিলেন যে, জমি নিয়ে সমস্যা হবে না।

Advertisement

কেন্দ্রের প্রস্তাবিত অনুদান হাতছাড়া হতে না-দেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি এই তালুক নিয়ে রাজ্যের নড়েচড়ে বসার আর একটি কারণ হালে উত্তরপ্রদেশ থেকে ১৫টি সংস্থার এখানে পুঁজি ঢালতে আগ্রহ। সেখানে সরকারি নিষেধাজ্ঞার জেরে অধিকাংশ কসাইখানা বন্ধ। কাঁচামালের টানে কাজ বন্ধ ৩০০-র বেশি ট্যানারিতে। ব্যবসা বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গে প্রাথমিক ভাবে ২,০০০ কোটি টাকা লগ্নির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ওই ১৫টি সংস্থা।

তালুকে কাজের সুযোগ তৈরির সম্ভাবনা কতখানি, তা স্পষ্ট শুধু তার জুতো-পার্কের তথ্যেই। কাউন্সিল অব লেদার এক্সপোর্টসের পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান রমেশ জুনেজার দাবি, এই পার্কে প্রতি দিন দেড় লক্ষ জোড়া জুতো তৈরি হবে। কাজ পাবেন ৫,০০০ জন।

ক্লাস্টারের খুঁটিনাটি

• প্রস্তাবিত বানতলা চর্ম-তালুকের রিপোর্ট তৈরির জন্য জমা পড়েছে আগ্রহপত্র

• রিপোর্ট তৈরি ও কেন্দ্রের অনুমোদন সংগ্রহে সম্ভাব্য খরচ সাড়ে ৭ কোটি টাকা

• তালুক নির্মাণে টাকা জোগানোর কথা দিয়ে রেখেছে কেন্দ্র। আসার কথা ১২৫ কোটি

• চর্মশিল্পের দাবি, তালুক হলে তামিলনাড়ু, মহারাষ্ট্রের সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দেবে রাজ্য

• ২০০৮ সালে শুধু জুতো-পার্কেই জায়গা চেয়েছিল ৩৪টি সংস্থা। শুধু সেখানেই কাজের সুযোগ তৈরি হতে পারে ৫,০০০ জনের

• গবাদি পশু বিতর্কের পরে হালে তালুকে আসার আগ্রহ দেখিয়েছে উত্তরপ্রদেশের আরও ১৫টি সংস্থা। প্রস্তাবিত লগ্নি ২,০০০ কোটি

• জুতো পার্ক ছাড়াও তালুকে তৈরি হবে ব্যাগ, গ্লাভস্‌ ইত্যাদি পণ্য। থাকবে ট্যানারি, ডিজাইন সেন্টার, রফতানি সহায়তা কেন্দ্রও

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন