৫০ শতাংশ বেশিতে তালিকাভুক্ত হল এলজি ইলেকট্রনিক্সের আইপিও। —প্রতীকী ছবি।
মাঠে নেমেই পেল্লায় ছক্কা হাঁকাল এলজি ইলেকট্রনিক্স! ৫০ শতাংশ দাম চড়িয়ে স্টকের দুনিয়ায় পথ চলা শুরু করেছে এই বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম প্রস্তুতকারী সংস্থা। শুধু তা-ই নয়, ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং’ বা আইপিও তালিকাভুক্তিতে ধূসর বাজারের প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে তারা। ফলে দীপাবলির আগে মোটা টাকায় লগ্নিকারীদের পকেট যে দক্ষিণ কোরিয়ার বহুজাতিক সংস্থাটি ভরিয়ে তুলল, তা বলাই বাহুল্য।
মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গে তালিকাভুক্ত হয় এলজি ইলেকট্রনিক্সের আইপিও। ওই সময় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে (বিএসই) এর শেয়ারের দাম ওঠে ১,৭১৫ টাকা। অন্য দিকে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জে (এনএসই) সংশ্লিষ্ট আইপিওটির তালিকাভুক্তি হয় ১,৭১০ টাকায়। উল্লেখ্য আইপিওতে প্রত্যেক স্টকের প্রাইস ব্যান্ড ১,১৪০ টাকা ধার্য করেছিল এলজি।
এ দিন সকালে ধূসর বাজারে (গ্রে মার্কেট) দক্ষিণ কোরিয়ার বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থাটির শেয়ারের দর ৪৩০ টাকায় উঠানামা করতে দেখা যায়। ফলে আর্থিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে ব্রোকারেজ ফার্ম– সকলেই তালিকাভুক্তির সময়ে এর দাম ৩৮ শতাংশ চড়বে বলে আশাবাদী ছিল। বাস্তবে তার চেয়েও অনেকটা বেশিতে শেয়ারের দুনিয়ায় পা রাখল এলজি ইলেকট্রনিক্স।
চলতি বছরের ৭-৯ অক্টোবর সংশ্লিষ্ট বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম নির্মাণকারী সংস্থাটির আইপিওতে বিনিয়োগের সুযোগ পেয়েছিলেন লগ্নিকারীরা। গত বৃহস্পতিবার শেষ দিনে এতে আবেদনের মাত্রা ছিল ৫৪.০২ গুণ। এনএসইর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এলজির আইপিওতে ৩৮৫ কোটি ৩৩ লক্ষ ২৬ হাজার ৬৭২টি স্টকের জন্য আবেদন করেন লগ্নিকারীরা। সেখানে অফার ফর সেলের জন্য ছিল ৭ কোটি ১৩ লক্ষ ৩৪ হাজার ৩২০টি শেয়ার।
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এলজির আইপিওতে সর্বাধিক আগ্রহ দেখিয়েছেন যোগ্য প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতারা (কোয়ালিফায়েড ইন্সস্টিটিউশনাল বাইয়ার বা কিউআইবি)। এই বিভাগে আবেদনের পরিমাণ ছিল ১৬৬.৫১ গুণ। অন্য দিকে অ-প্রাতিষ্ঠানিক লগ্নিকারী (নন-ইন্সস্টিটিশনাল ইনভেস্টর বা এনআইআই) বিভাগে ২২.৪৪ গুণ আবেদন পড়েছিল। এ ছাড়া খুচরো বিনিয়োগকারীদের লগ্নির মাত্রা ৩.৫৪ গুণ ছিল বলে জানা গিয়েছে।
আইপিওর মাধ্যমে বাজার থেকে ১১,৬০৭.০১ কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা করে এলজি ইলেকট্রনিক্স। এর আইপিওর প্রতি লটে ছিল ১৩টি করে শেয়ার। লগ্নিকারীদের ন্যূনতম একটি লটে আবেদনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে আবেদনের সময় থেকেই ধূসর বাজারে এর দাম চড়ছিল।
সোমবার, ১৩ অক্টোবর সপ্তাহের প্রথম দিনে শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্তি হল টাটা গোষ্ঠীর আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা টাটা ক্যাপিটাল। যার প্রাইস ব্যান্ড ছিল ৩২৬ টাকা। কিন্তু, স্টকের দুনিয়ায় পা রাখার সময়ে এর দাম ওঠে মাত্র ৩৩০ টাকা। ফলে হতাশ ছিলেন বিনিয়োগকারীদের একাংশ। একদিনের ব্যবধানে এলজির আইপিওতে দেখা গেল সম্পূর্ণ অন্য চিত্র।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)