টিকিটের দামে গলাকাটা প্রতিযোগিতার কারণে যাত্রীসংখ্যা টানা বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু আবার ওই একই কারণে মুখ থুবড়ে পড়ছে বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলির মুনাফা। এতটাই যে, বরং লোকসান সামাল দিতে নাভিশ্বাস উঠছে তাদের। ভারতের আকাশে উড়ানের পরিস্থিতি সম্পর্কে এই উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএটিএ) কর্তা আলেকজান্ডার দ্য জানিয়া।
ভারতের এয়ার ইন্ডিয়া, জেট এয়ারওয়েজ, বিস্তারা-সহ সারা বিশ্বের ২৯০টি বিমান পরিবহণ সংস্থা আইএটিএ-র সদস্য। তার কর্ণধার জানিয়ার মতে, বিমান জ্বালানির দাম বৃদ্ধি সমেত আরও কিছু সমস্যা আছে ঠিকই। কিন্তু ভারতে বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলির মাথাব্যথার মূল কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে টিকিটের দামে গলাকাটা প্রতিযোগিতা। সংশ্লিষ্ট মহলও মনে করে, মূলত এই কারণেই লাভের মুখ দেখা কঠিন হচ্ছে অনেক বিমান পরিষেবা সংস্থার পক্ষে। যেমন, জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকেও লোকসান গুনতে হয়েছে শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত তিন বিমান পরিবহণ সংস্থাকে। স্পাইসজেট, জেট এয়ারওয়েজ এবং ইন্ডিগো।
জানিয়ার মতে, ভারতে বিমান পরিবহণের প্রসারে জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। আরও অনেক বেশি মানুষ যাতে উড়ানে সওয়ার হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে তৈরি হচ্ছে নতুন-নতুন বিমানবন্দর। নির্মিত হচ্ছে পরিকাঠামো। ঢেলে সাজার চেষ্টা হচ্ছে সরকারি নীতিও। ছোট শহরগুলির মধ্যে উড়ান চালু করতে জোর দেওয়া হচ্ছে ‘উড়ান’ প্রকল্পে।
এই সমস্ত কিছুর পাশাপাশি সস্তা উড়ানের টিকিটের হাতছানিতে অক্টোবর পর্যন্ত টানা ৫০ মাসে দেশে বিমান যাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি। শুধু অক্টোবরেই ১৩.৩৪% বেড়ে তা পৌঁছেছে প্রায় ১ কোটি ১৯ লক্ষে। কিন্তু সমস্যা হল, যে মন্ত্রে যাত্রী বাড়ছে, সেই কম টাকার টিকিটের কারণেই গোঁত্তা খাচ্ছে মুনাফা। মুখ থুবড়ে পড়ছে বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলির আর্থিক ফলাফলও। আগামী দিনে আকাশে সংস্থার সংখ্যা কমলে, তবেই এই সমস্যার কিছুটা সমাধান হতে পারে বলে জানিয়ার ইঙ্গিত।