দুই মুখ: লগ্নির অপেক্ষায় মহারাজা (বাঁ দিকে)। শলা মোহন ভাগবতের।
সে কালে রাজা-মহারাজাদের শুভকাজে নির্ঘণ্ট ঠিক করতেন রাজপুরোহিত। এ কালে ‘মহারাজা’র শেয়ার বাজারে অভিষেকের নিয়ম বেঁধে দিচ্ছে সঙ্ঘ।
এয়ার ইন্ডিয়ার (মহারাজা যার বিখ্যাত ম্যাসকট) ৭৬% মালিকানা বেচতে হোঁচট খেয়েছে কেন্দ্র। ক্রেতা মেলেনি। এখন মহারাজার আর্থিক স্বাস্থ্য ফিরিয়ে মোদী সরকারের মান রাখতে পরামর্শ দিচ্ছেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। নাগপুরের শলা, এয়ার ইন্ডিয়াকে (এআই) কিছুতেই বিদেশি হাতে তুলে দেওয়া নয়। দেশি ক্রেতা যখন অমিল, তখন বরং বাজারে শেয়ার ছাড়ুক রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান পরিবহণ সংস্থাটি।
সরকারি সূত্রে খবর, সঙ্ঘ পরিবারের সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ সম্প্রতি বিমান মন্ত্রকের কাছে এআইকে চাঙ্গা করার বিকল্প রাস্তা পেশ করেছে। তাতে দাবি, সংস্থার বেসরকারিকরণের বদলে তার শেয়ার বাজারে ছাড়া হোক। যাতে দেনার বোঝায় ঝুঁকে থাকা এআই চালানোর খরচ কিছুটা উঠে আসে।
সেই ‘মোহন বাঁশি’ কানে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বৈঠকেই উঠেছে শেয়ার ছাড়ার কথা। সঙ্ঘ ও সরকারের অবস্থান, বিদেশি সংস্থার হাতে এআইকে তুলে না দেওয়া। খোদ ভাগবত বলেন, এআই ‘ন্যাশনাল ক্যারিয়ার’। তাতে বিদেশি মালিকানা চলবে না। তাঁর মতে, সংস্থা পরিচালনা ঠিকমতো হচ্ছে না। কেন্দ্রও মনে করে, শেয়ার ছাড়ার পাশাপাশি এয়ার ইন্ডিয়া পরিচালনায় দক্ষ পেশাদারদের আনা উচিত।
বিমান মন্ত্রককে পাঠানো রিপোর্ট তৈরি করেছিলেন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের যুগ্ম-আহ্বায়ক অশ্বিনী মহাজন ও গেরুয়া শিবিরের ঘনিষ্ঠ চার অর্থনীতিবিদ। তাঁদের যুক্তি, সংস্থার হাতে সারা দেশে বিপুল পরিমাণ জমি, বাড়ির মতো স্থাবর সম্পত্তি আছে। সে সব বেচে দেনা শোধ করে সংস্থাটি লাভের মুখ দেখতে পারে।
নীতি আয়োগের উপাধ্যক্ষ রাজীব কুমারের কথায়, ‘‘সব রকম বিকল্প রাস্তা খোঁজা হচ্ছে। এআই শেয়ার বাজারে এলে ভাল সাড়া পাবে। মহারাজার হাতে প্রচুর দামি সম্পত্তি রয়েছে। কিছুটা শেয়ার কর্মীদের দিলে তাঁদের মনোবলও চাঙ্গা হবে।’’
অশ্বিনী বলেন, ‘‘বিদেশি হাঙরদের থেকে এআইকে বাঁচিয়ে, দক্ষ ম্যানেজমেন্ট এনে তাকে জিইয়ে রাখা যায়। শেয়ার ছেড়ে সেই লক্ষ্যপূরণ সম্ভব। সে জন্য বেসরকারি হাতে মালিকানা দেওয়া জরুরি নয়।’’