বৈঠক: দেশি-বিদেশি তেল ও গ্যাস সংস্থার সিইও ও বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী ও তেল মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। নয়াদিল্লিতে সোমবার। পিটিআই
পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়ার কথা প্রায় নিয়ম করে বলেন নরেন্দ্র মোদী। এ বার দেশ-বিদেশের প্রথম সারির তেল ও গ্যাস বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে ওই অঞ্চলে লগ্নি করার আহ্বান জানালেন তিনি। তুলে ধরলেন জগদীশপুর-হলদিয়া ও বোকারো-ধামরা গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পের কথা। প্রায় ১২,৯৪০ কোটি টাকার যে প্রস্তাবিত প্রকল্পের ৪০% অর্থই জোগাবে কেন্দ্র।
সোমবার এ দেশের রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রোজনেফ্ট, বিপি, এক্সন, মোবিল, সৌদি অ্যারামকো, রয়্যাল ডাচ শেল, স্ক্লামবার্জার, হ্যালিবার্টন, বেদান্তর মতো বিদেশের প্রথম সারির তেল-গ্যাস সংস্থাগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী এবং পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সেখানে রিলায়্যান্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানী, বেদান্তর অনিল অগ্রবালদের সামনেই পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের উপর জোর দেন মোদী। বলেন, জগদীশপুর-হলদিয়া পাইপলাইন পূর্ব ভারতে গ্যাস নির্ভর অর্থনীতির উন্নয়নে অনুঘটকের কাজ করবে। ডাক দেন বিনিয়োগের।
আরও এক ধাপ এগিয়ে তেল-গ্যাস শিল্পের শীর্ষ কর্তারা অবশ্য জানিয়েছেন, শুধু পূর্ব ভারত নয়, গ্যাস-নির্ভর অর্থনীতি হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে পুরো ভারতেরই। তবে তার জন্য আগে গ্যাসের দাম নির্ধারণের একটি পৃথক সংস্থা তৈরির দাবি তুলেছেন তাঁরা যুক্তি, যারা গ্যাসের পরিকাঠামো তৈরি করেছে, সেই সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গ্যাসের দাম নির্ধারণ করতে পারে না।
নীতি আয়োগের সিইও অমিতাভ কান্ত বলেন, ‘‘তেল-গ্যাস ক্ষেত্রে উত্তোলন, উৎপাদন ও শোধনে ১০০% সরাসরি বিদেশি লগ্নির ছাড়পত্র দেওয়া রয়েছে। পূর্ব ভারতে গ্যাসে লগ্নি টানতে এই সংস্কারের কথা উল্লেখ করেছেন মোদীও।’’
গত বছর জগদীশপুর-হলদিয়া ও বোকারো-ধামরা গ্যাস পাইপলাইনে অনুমোদন দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশের মতো পাঁচটি রাজ্যের ৪৯টি জেলা এই গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে যুক্ত হবে। কলকাতা-সহ সাতটি শহরে গ্যাস বন্টন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। প্রায় ২,৫৩৯ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে শিল্প, বাণিজ্য, পরিবহণ ও ঘরোয়া প্রয়োজনে গ্যাস সরবরাহ করা হবে। জাতীয় গ্যাস গ্রিডের সঙ্গে এর মাধ্যমেই জুড়ে যাওয়ার কথা পূর্ব ভারতের। দুর্গাপুর-সহ চারটি ইউরিয়া কারখানাতেও এর মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহের পরিকল্পনা রয়েছে।