কোটি প্রমাণে মরিয়া মোদী

পকোড়ার পরে কাজের তথ্যে অটোরিকশাও

শুধু নতুন অটোতেই কর্মসংস্থান হয়েছে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৮ ০২:৪৬
Share:

বিতর্কে: শুধুই প্রতিশ্রুতি? শাহজাহানপুরে মোদী। ছবি: পিটিআই।

এক বছরে রাস্তায় নতুন অটোরিকশা নেমেছে ২ লক্ষ ৩০ হাজার। দু’টো অটো থেকে তিন জনের রোজগার হয়। সুতরাং শুধু নতুন অটোতেই কর্মসংস্থান হয়েছে ৩ লক্ষ ৪৫ হাজার!

Advertisement

শুক্রবার সংসদে রাহুল গাঁধীর প্রশ্ন ছিল, বছরে দু’কোটি কাজের সুযোগ তৈরির যে প্রতিশ্রুতি নরেন্দ্র মোদী দিয়েছিলেন, তার কী হল? জবাবে অটোর পরিসংখ্যান তুলে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। যা শুনে বিরোধীদের কটাক্ষ, কাজের তালিকায় পকোড়া ভাজা আগেই ঢুকে পড়েছে। এ বার তাহলে অটোরিকশার পালা!

মোদী অবশ্য শুধু এতে থামেননি। বলছেন, নতুন পেশাদার হিসেবে কাজের বাজারে পা রাখা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবী, চার্টার্ড ও কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টের সংখ্যা ২০১৬-১৭ সালে ছ’লক্ষ। রাস্তায় নতুন নামা ৫.৭ লক্ষ বাণিজ্যিক গাড়ি থেকেও রোজগারের সুযোগ পাচ্ছেন ১১.৪ লক্ষ জন। সঙ্গে জুড়েছেন অটোর হিসেবও। তাঁর প্রশ্ন, কর্মরত হিসেবে কি গোনা হবে না এঁদের?

Advertisement

লোকসভা ভোটের দামামা বেজে যাওয়া আবহে মরিয়া মোদীর দাবি, বছরে এক কোটি কাজের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। বিজেপি নেতারাও বলছেন, দুই নয়, এক কোটি চাকরিরই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মোদী। কিন্তু এখন তার হিসেব দিতেও গলদঘর্ম হতে হচ্ছে মোদী সরকারকে। ভরসা রাখতে হচ্ছে অটোরিকশাতেও। কংগ্রেসের প্রশ্ন, মোদী না থাকলে কি ওই পেশাদাররা পেশায় যোগ দিতেন না?

প্রশ্ন উঠছে প্রধানমন্ত্রীর পেশ করা পরিসংখ্যান নিয়েও। কাজের সুযোগ তৈরির হিসেব দিতে মোদীর অন্যতম অস্ত্র পিএফে নতুন খাতা খোলার হিসেব। তাঁর যুক্তি, গত সেপ্টেম্বর থেকে এ বছরের এপ্রিলে ইপিএফে ৪৫ লক্ষ নতুন গ্রাহক যোগ দিয়েছেন। জাতীয় পেনশন প্রকল্পে ৫.৬৮ লক্ষ। সব মিলিয়ে ন’মাসে নতুন চাকরি হয়েছে ৫০ লক্ষ। অর্থনীতিবিদদের যুক্তি ছিল, এরা সকলেই নতুন চাকরি পাননি। অনেকে অসংগঠিত ক্ষেত্র থেকে এসেছেন সংগঠিত ক্ষেত্রে। কেন্দ্র দাবি থেকে সরেনি। কিন্তু এখন সেই বেলুনও চুপসে যাওয়ার জোগাড়।

কর্মী পিএফে প্রথমে সেপ্টেম্বর-এপ্রিলে নতুন ৪১.২৬ লক্ষ গ্রাহকের হিসেব ছিল। এখন তা শুধরে প্রায় ৪ লক্ষ কমানো হয়েছে। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরির প্রশ্ন, ‘‘তা হলে পিএফে ভুয়ো পরিসংখ্যানের কী হল? মোদী তো পাঁচ বছরে ১০ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।’’

প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরজিৎ ভাল্লার যুক্তি, ১.২৮ কোটি চাকরি হয়েছে। কিন্তু সিএমআইই-র প্রধান মহেশ ব্যাসের যুক্তি, ‘‘২০১৭-১৮ সালে নতুন চাকরি তেমন হয়নি। কারণ, লগ্নি না বাড়লে তা হওয়া সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন