চিন্তিত: শুক্রবার নয়াদিল্লিতে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের চড়া দর আর ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দামের কারণে লাগাম পরানো যাচ্ছে না পেট্রল-ডিজেলের দরে। তার উপরে ইরান থেকে তেল আমদানিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার দিন এগিয়ে আসছে দ্রুত। সেই নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ভারত ইরান থেকে তেল কেনা জারি রাখলে ফল ভাল হবে না বলে চোখও রাঙাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পরিস্থিতিতে দেশের তেল উৎপাদনের পরিস্থিতি যাচাই করতে বৈঠকে বসলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
তেল উৎপাদনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ওএনজিসি এবং অয়েল ইন্ডিয়ার কর্তারা অবশ্য তাদের অশোধিত তেল উৎপাদন বাড়ানো নিয়ে খুব বেশি আশার আলো দেখাতে পারেননি। তবে ওএনজিসির কেজি বেসিন থেকে গ্যাস তোলা শুরু হওয়ায় দেশে তার উৎপাদন এক লাফে অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে তাঁদের দাবি।
সামনেই পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোট। দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে পরের লোকসভা নির্বাচনও। এই অবস্থায় পেট্রল, ডিজেলে আকাশছোঁয়া দাম নিয়ে আমজনতার ক্ষোভে কিছুটা হলেও প্রলেপ দিতে ৪ অক্টোবর পেট্রোপণ্য দু’টির দাম আড়াই টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু এর মধ্যেই পেট্রলের দাম লিটারে প্রায় এক টাকা বেড়েছে। ডিজেলের দর বেড়েছে প্রায় দু’টাকা। তার উপরে আড়াই টাকার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন সংস্থাগুলিকে এক টাকার দায় নিতে বলায় বিপুল ধাক্কা খেয়েছে তাদের শেয়ার দর। সূত্রের খবর, শুক্রবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, তেল সংস্থাগুলিকে আর দাম কমানোর দায় নিতে বলা হবে না।
তিন বছর আগে প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালের মধ্যে তেলের আমদানি নির্ভরতা ৭৭% থেকে কমিয়ে ৬৭% করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু আমদানি নির্ভরতা এখন ৮৩% ছাপিয়ে গিয়েছে। তার থেকেও চিন্তার কথা, সেই আমদানির একটা বড় অংশ এসেছে ইরান থেকে। তাই ৪ নভেম্বর থেকে সেই তেল কেনায় নিষেধাজ্ঞা জারি হলে কী পরিস্থিতি তৈরি হবে, তা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
তেলমন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান সূক্ষ্ম ভাবে বুঝিয়েছেন, ভারত ইরান থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে রাজি নয়। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি নভেম্বরের জন্য তেলের বরাতও দিয়ে ফেলেছে। তবে আজ অর্থ বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ মেনে নিয়েছেন যে, নিষেধাজ্ঞার পরে একই ভাবে ইরানি তেল আমদানি করা আর চলবে না। আমেরিকার ইরান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ব্রায়ান হুক ভারতে আসছেন। তাঁর সঙ্গেও মোদী সরকারের কর্তাদের এ বিষয়ে আলোচনা হবে।